আজ রবিবার, ৯ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দায়িত্ব নিয়েই অ্যাকশনে ডিসি, দিলেন কঠিন হুঁশিয়ারী

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত আগস্ট ২২, ২০২৫, ০১:৩০ পূর্বাহ্ণ
দায়িত্ব নিয়েই অ্যাকশনে ডিসি, দিলেন কঠিন হুঁশিয়ারী

এই সময়ে দেশজুড়ে পাথরকাণ্ডে আলোচনায় থাকা সিলেটে যোগ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সারোয়ার আলম। এই সময়ে তাঁর যোগদান বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। জনগণের প্রত্যাশা বালুপাথর লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে এবার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যোগদানের প্রথম দিন তিনি সাদাপাথর পরিদর্শন করে কার্যকর ভূমিকা রাখার কথা বলেন। ফেরার পথে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার টুকেরগাওয়ে অবৈধ পাথর ও স্টোন ক্রাশারের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার টুকেরগাঁও এলাকায় চাচা ভাতিজা স্টোন ক্রাশার, মেসার্স আল করিম স্টোন ক্রাশার ও নামছাড়া আরেকটি স্টোন ক্রাশার মিলে অবৈধ পাথরের মজুদ জব্দের নির্দেশ দেন তিনি।

মো. সারোয়ার আলম বলেন, ‘আগে আমাকে যেভাবে দেখেছেন, আমি তেমনই আছি, তেমনই থাকব।’ সাদাপাথর থেকে আর একটি পাথরও যদি সরানো হয়, তাহলে জীবন ঝালাপালা করে দেব।

তিনি বলেন, সাদাপাথরে পাথর পুনঃস্থাপন, লুটেরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও প্রতিরোধ এই তিন বিষয়কে সামনে রেখে প্রশাসন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে।

পাথর লুটপাটরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাদের তদন্ত রিপোর্টে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের নামও তালিকাভূক্ত করেন। এর প্রেক্ষিতে সাবেক এই জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করা হয়।

সাদাপাথরে গিয়ে দিলেন কঠিন হুঁশিয়ারী:
কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর কিছুদিনের মধ্যেই আগের অবস্থায় ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সারওয়ার আলম। তিনি জানিয়েছেন, সাদাপাথরে পাথর পুনঃস্থাপন, লুটেরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও প্রতিরোধ—এই তিন বিষয় সামনে রেখে প্রশাসন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সাদাপাথর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নতুন জেলা প্রশাসক এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আর যাতে সিলেটের পাথর লুট হতে না পারে বা বাইরে যেতে না পারে, সে জন্য আমরা আরও কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা করব। লুণ্ঠিত পাথরগুলো কোথায় কোথায় আছে, সেটি খুঁজে বের করে আমরা রি–ইনস্টল করছি। আশা করছি, কিছুদিনের মধ্যে সাদাপাথর আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নতুন জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, ‘অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। শাস্তির চেয়ে অপরাধ প্রতিরোধই উত্তম।’

সাদাপাথর পরিদর্শন শেষে নতুন জেলা প্রশাসক কোম্পানীগঞ্জে তিনটি ক্রাশার মিলে অভিযান চালান এবং সেখানে থাকা পাথর জব্দ করার নির্দেশ দেন স্থানীয় প্রশাসনকে। অভিযান চলাকালে জেলা প্রশাসক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আর একটি পাথরও যদি সরানো হয়, জীবন ঝালাপালা করে দেব। বাংলাদেশ সীমানার যেখানেই পাথর সরানোর চেষ্টা হবে, সেখান থেকেই অপরাধীদের ধরে আনা হবে।’

সারওয়ার আলম বলেন, সাদাপাথরকে আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কারা এই লুটের সঙ্গে জড়িত, কেন ও কীভাবে এটি ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। জনগণ এই লুটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে।

এর আগে সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগদান করেন সারওয়ার আলম। গত সোমবার তিনি সিলেটের ডিসি হিসেবে নিয়োগ পান।

সারওয়ার আলম প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সংযুক্ত) হিসেবে এই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের একান্ত সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ আজ তাঁর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত শেষে নতুন জেলা প্রশাসক তাঁর দায়িত্ব নেন। এ সময় তাঁকে স্বাগত জানান বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর থেকে সিলেটের সংরক্ষিত এলাকা, পর্যটনকেন্দ্র ও পাথর কোয়ারি থেকে ব্যাপকভাবে বালু ও পাথর লুট শুরু হয়। সম্প্রতি সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে গণলুটের ঘটনা ঘটে, যা দেশে-বিদেশে সমালোচিত হয়েছে। মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে সোমবার বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।

দায়িত্ব নিয়েই পাথর লুটের বিরুদ্ধে অ্যাকশন:
দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনই সাদাপাথর পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে অবৈধ পাথর ও স্টোন ক্রাশারের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে নামেন নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার টুকেরগাঁও এলাকায় চাচা ভাতিজা স্টোন ক্রাশার, মেসার্স আল করিম স্টোন ক্রাশার ও নামছাড়া আরেকটি স্টোন ক্রাশার মিলে অবৈধ পাথরের মজুদ জব্দের নির্দেশ দেন তিনি।

এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ শেষে প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা ও উপজেলার নতুন নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিয়ে কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শনে যান সিলেটের জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিন মিয়া বলেন, ‘অবৈধভাবে পাথর রাখার দায়ে জেলা প্রশাসক এসব মিলের পাথর জব্দের নির্দেশ দেন। তৎক্ষনিকভাবে জব্দকৃত পাথরের পরিমাণ জানা যায়নি। সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ শেষে জানানো হবে।’

এর আগে সাদাপাথর পরিদর্শন শেষে ডিসি সারওয়ার বলেন, ‘সাদাপাথর থেকে যাতে আর একটি পাথরও চুরি না হয় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সাদা পাথরকে আগের রূপে ফিরিয়ে দিতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে। কারা এই লুটের সাথে জড়িত, কেন এবং কিভাবে হয়েছে সেগুলোও পর্যালোচনা করা হবে।’

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০