আবার নাঈম
সম্ভাবনাময় এক জুটি ভেঙে আবারও বাংলাদেশকে খানিকটা স্বস্তি দিলেন নাঈম হাসান। তরুণ অফ স্পিনারের তৃতীয় শিকার সিকান্দার রাজা।
ক্রেইগ আরভিন ও রাজার জুটি স্বচ্ছন্দেই এগিয়ে নিচ্ছিল দলকে। বাংলাদেশের বোলিং মনে হচ্ছিল ধারহীন। তবে নাঈম ঠিকই দারুণ এক ডেলিভারিতে আদায় করে নিলেন উইকেট।
রাউন্ড দা উইকেটে করা ডেলিভারি টার্ন করবে ভেবে খেলেছিলেন রাজা। কিন্তু নাঈমের বল টার্ন না করে বেরিয়ে যায় সোজা হয়ে। রাজার ব্যাটের কানায় লেগে বল জমা পড়ে কিপার লিটনের গ্লাভসে।
৬২ বলে ১৮ করে বিদায় নিলেন রাজা। ভাঙল ৪০ রানের জুটি।
জিম্বাবুয়ের রান ৪ উইকেটে ১৭৪।
দ্বিতীয় সেশনে দুই উইকেট
ব্যাটিং অনেকটাই সহজ হয়ে এসেছে। তবে দারুণ বোলিংয়ে ব্যাটসম্যানদের সহজে রান নিতে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা। দ্বিতীয় সেশনে ফিরিয়ে দিয়েছেন জিম্বাবুয়ের দুই ব্যাটসম্যানকে।
চা-বিরতিতে যাওয়ার সময় জিম্বাবুয়ের স্কোর ১৫০/৩। ক্রেইগ আরভিন ৬০ ও সিকান্দার রাজা ৭ রানে ব্যাট করছেন।
এক প্রান্তে টানা বোলিং করে যাওয়া নাঈম হাসান নিয়েছেন দুই উইকেট। তরুণ এই অফ স্পিনারের বলে হাতছাড়া হয়েছে তিনটি সুযোগ।
৫৮ ও ৫৯ রানে জীবন পাওয়া প্রিন্স মাসভাউরে ফিরেন নাঈমকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। এই অফ স্পিনার পরে বোল্ড করে থামান ব্রেন্ডন টেইলরকে। ২৫ ওভারের টানা স্পেলে নাঈম ৪৫ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।
আরভিনকে ফেরানোর সুযোগ হাতছাড়া
নাঈম হাসানের বলে হাতছাড়া হলো আরেকটি সুযোগ। স্টাম্পড হওয়ার হাত থেকে বেঁচে গেলেন ক্রেইগ আরভিন।
অফ স্পিনারের বলে সুইপ করতে চেয়েছিলেন আরভিন। ব্যাটে খেলতে পারেননি, একটুর জন্য বল লাগেনি লেগ স্টাম্পে। বল আঘাত হানে কিপারের প্যাডে। গ্লাভসে জমাতে পারলে স্টাম্পড করার একটা সুযোগ পেতে পারতেন কিপার। বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
৫৫ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ১৩৮/৩। আরভিন ৫৫ রানে ব্যাট করছেন, এখনও রানের খাতা খোলেননি সিকান্দার রাজা।
নাঈমের বলে বোল্ড টেইলর
শুরু থেকে স্পিনারদের প্রচুর রিভার্স সুইপ করছেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। নাঈম হাসানের বলে তেমন শটেই বোল্ড হয়ে গেলেন ব্রেন্ডন টেইলর।
দুই দেশের সবশেষ টেস্টে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছিলেন টেইলর। এই ম্যাচেও খেলছিলেন আস্থার সঙ্গে। নাঈম হাসানকে টানা দ্বিতীয় বলে টেইলর রিভার্স সুইপ খেলতে গেলে বল তার ব্যাটের ভেতরের দিকে লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে।
১১ বলে এক চারে ১০ রান করে ফিরেন টেইলর। ৫১ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ১৩৪/৩। ক্রিজে ক্রেইগ আরভিনের সঙ্গী সিকান্দার রাজা।
আরভিনের ফিফটি
নড়বড়ে শুরুর পর ক্রিজে জমে গেছেন ক্রেইগ আরভিন। জিম্বাবুয়েকে এগিয়ে নিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। লাঞ্চের পর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে স্পর্শ করেছেন ফিফটি।
১১৭ বল লেগেছে আরভিনের। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে আট বাউন্ডারি।
সেই নাঈমই পেলেন সাফল্যনাঈম হাসানের বলে দুই দফায় জীবন পেয়েছিলেন প্রিন্স মাসভাউরে। শেষ পর্যন্ত তাকে ফিরিয়েই শতরানের জুটি ভেঙেছেন নাঈম।
ওভার শুরুর আগে নাঈমের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলছিলেন দুই সিনিয়র ক্রিকেটার মুমিনুল ও তামিম। এরপরই দেখা মেলে সাফল্যের।
ঝুলিয়ে দেওয়া বলটি ড্রাইভ করেছিলেন মাসভাউরে। কিন্তু পিচ করে বল একটু থেমে আসে। ফিরতি ক্যাচ যায় বোলারের দিকে। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ভালো ক্যাচ নেন নাঈম।
৫৮ ও ৫৯ রানে নাঈমের বলেই ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া মাসভাউরে ফিরলেন ৬৪ রানে। ১৫২ বলের ইনিংসে আছে ৯টি চার।
জিম্বাবুয়ের রান ২ উইকেটে ১১৮।
আরভিনের সঙ্গে মাসভাউরের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১১১ রান এসেছে ২৪১ বলে।
আবার বাঁচলেন মাসভাউরেনাঈম হাসানের পরপর দুই ওভারে জীবন পেলেন প্রিন্স মাসভাউরে। বাঁহাতি ওপেনারের ক্যাচ স্লিপে মুঠোয় নিতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত।
বেরিয়ে এসে অফ স্পিনারের ওপর চড়াও হতে চেয়েছিলেন মাসভাউরে। ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ যায় স্লিপে। হাত বাড়িয়ে দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন লিটন, পারেননি তিনি। স্লিপে শান্ত বলে হাত ছোঁয়াতে পারেননি। নষ্ট নয় আরেকটি সুযোগ।
সে সময় ৫৯ রানে ছিলেন মাসভাউরে। ৫৮ রানে নাঈমকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি।
৪৩ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ১০০/১। মাসভাউরে ৫৯ ও ক্রেইগ আরভিন ৩২ রানে ব্যাট করছেন।
কঠিন সুযোগ হাতছাড়া
জুটি ভাঙার একটা সুযোগ এসেছিল নাঈম হাসানের বলে। কঠিন ফিরতি ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি এই অফ স্পিনার।
এক প্রান্তে টানা বোলিং করছেন নাঈম। ভোগাচ্ছেন দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকেই। বেরিয়ে এসে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে চাপটা একটু আলগা করতে চেয়েছিলেন প্রিন্স মাসভাউরে। ঠিক মতো খেলতে পারেননি, তবে লাফিয়ে হাত ছোঁয়ালেও ক্যাচ মুঠোয় নিতে পারেননি দীর্ঘদেহী নাঈম।
সে সময় ৫৮ রানে ছিলেন মাসভাউরে। ৪১ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৯৯/১। মাসভাউরে ৫৯ ও ক্রেইগ আরভিন ৩১ রানে খেলছেন।
আগের সেরা ছাড়িয়ে মাসভাউরে
শুরু থেকে আস্থার সঙ্গে খেলা প্রিন্স মাসভাউরে তুলে নিয়েছেন ফিফটি। বাঁহাতি এই ওপেনারের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয়।
১০৪ বলে আট বাউন্ডারিতে ছুঁয়েছেন পঞ্চাশ। আবু জায়েদ চৌধুরীকে আরেকটি বাউন্ডারিতে ছাড়িয়ে গেছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করা আগের সেরা ৫৫।
৩৪ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৯১/১। মাসভাউরে ৫৬ ও ক্রেইগ আরভিন ২৬ রানে খেলছেন।
প্রথম সেশনে কেবল ১ উইকেট
শুরুতে সাফল্য এসেছিল আবু জায়েদ চৌধুরীর হাত ধরে। প্রথম সেশনের বাকি সময়ে স্বাগতিকরা নিতে পারেনি আর কোনো উইকেট।
প্রথম সেশনে ৩০ ওভারে ১ উইকেটে ৮০ রান করেছে জিম্বাবুয়ে। প্রিন্স মাসভাউরে ৪৫ ও ক্রেইগ আরভিন ২৬ রানে ব্যাট করছেন।
১০ ওভারের টানা স্পেলে ২১ রান দিয়েছেন নাঈম হাসান। ব্যাটসম্যানদের বেশ ভুগিয়েছেন, টার্ন ও বাউন্সে পরীক্ষা নিয়েছেন দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের।
ক্রিজে যাওয়ার পর থেকে ঝুঁকি নিয়ে খেলছেন আরভিন। সুইপ-রিভার্স সুইপ করে যাচ্ছেন শুরু থেকে। কয়েকবার বেঁচে গেছেন অল্পের জন্য। শুরু থেকে আস্থার সঙ্গে খেলছেন মাসভাউরে। ফিফটির কাছে দাঁড়িয়ে আছেন এই ওপেনার।
রানের জন্য তাইজুল ইসলামকে লক্ষ্য করেছে জিম্বাবুয়ে। বাঁহাতি স্পিনার ৬ ওভারে দিয়েছেন ৩৩ রান।
দিনের শুরুতে আঁটসাঁট বোলিং করেছেন পেসাররা। প্রথম ৬ ওভারে ব্যাট থেকে কোনো রান করতে পারেননি জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার।
মাসভাউরে-আরভিন জুটিতে পঞ্চাশ
রানের জন্য ছটফট করছেন ক্রেইগ আরভিন। খেলছেন ঝুঁকি নিয়ে। তার ব্যাটেই বেড়েছে রানের গতি। ওপেনার প্রিন্স মাসভাউরের সঙ্গে জিম্বাবুয়ের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি।
তাইজুল ইসলামের বলে রিভার্স সুইপ করে বাউন্ডারি মেরে ৯৪ বলে জুটির ফিফটি স্পর্শ করেন আরভিন।
২৪ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৬০/১। মাসভাউরে ৩২ ও আরভিন ১৯ রানে ব্যাট করছেন।
আবু জায়েদ ভাঙলেন শুরুর জুটিমাটি কামড়ে পড়ে থাকা উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেন আবু জায়েদ চৌধুরী। ফিরিয়ে দিলেন কেভিন কাসুজাকে।
আগের বলে ফ্লিক করে রানের খাতা খুলেছিলেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার । পরের বলেই গালিতে ধরা পড়েন নাঈম হাসানের হাতে।
শুরু থেকে দারুণ লাইন-লেংথে বল করে কাসুজাকে ভোগাচ্ছিলেন আবু জায়েদ। শেষে মিললো এর পুরস্কার। অফ স্টাম্পের বাইরের বল সুইংয়ের জন্য ঠিক মতো খেলতে পারেননি ডানহাতি ওপেনার। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে আসা ক্যাচ মুঠোয় জমান নাঈম।
৯ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৭/১। ক্রিজে প্রিন্স মাসভাউরের সঙ্গী ক্রেইগ আরভিন।
ওয়াইড থেকে প্রথম রান
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে যেমন খেলেছিলেন, জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার কেভিন কাসুজা ও প্রিন্স মাসভাউরে সেভাবেই ব্যাট করছেন। প্রথম ছয় ওভারে এসেছে কেবল ১ রান। সেই রানটিও এসেছে ওয়াইড থেকে।
মিরপুরের উইকেটে ঘাস
এটা মিরপুরের প্রথাগত উইকেট নয়, টস রিপোর্টের সময় বলছিলেন জিম্বাবুয়ের সাবেক ওপেনার টিনো মায়োয়ো। উইকেটে বেশ ঘাস রয়েছে। প্রথম ঘণ্টায় পেসারদের জন্য কিছুটা সুবিধা থাকবে। তবে প্রথম ইনিংসে বড় রান আশা করছেন মায়োয়ো।
টিশুমার অভিষেক
জিম্বাবুয়ের হয়ে টেস্ট অভিষেক হচ্ছে পেসার চার্ল্টন টিশুমার। একাদশে ফিরেছেন আইন্সলে এনডিলোভু।
জিম্বাবুয়ে: সিকান্দার রাজা, রেজিস চাকাভা, ক্রেইগ আরভিন, কেভিন কাসুজা, টিমিসেন মারুমা, প্রিন্স মাসভাউরে, আইন্সলে এনডিলোভু, ভিক্টর নাউচি, ব্রেন্ডন টেইলর, ডোনাল্ড টিরিপানো, চার্ল্টন টিশুমা।
মুশফিকের সঙ্গে ফিরলেন নাঈম
দুটি পরিবর্তন নিশ্চিত ছিল, হলো এই দুই পরিবর্তনই। আগের টেস্টে খেলা মাহমুদউল্লাহ ও রুবেল হোসেন নেই স্কোয়াডেই। তাদের জায়গায় ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম ও নাঈম হাসান।
নিরাপত্তা শঙ্কায় পাকিস্তান যাননি মুশফিক। তার ফেরাটা নিশ্চিতই ছিল। চোট কাটিয়ে ফেরা মেহেদী হাসান মিরাজের জায়গা হয়নি একাদশে। বিসিএলে দারুণ বোলিং করা তরুণ অফ স্পিনার নাঈম এসেছেন দলে।
বাংলাদেশ: তামিম ইকবাল, সাইফ হাসান, মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, আবু জায়েদ চৌধুরী, ইবাদত হোসেন।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়ে
বাংলাদেশের ব্পিক্ষে একমাত্র টেস্টে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছেন জিম্বাবুয়ের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন।
নতুন শুরুর দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ
টানা হারের বৃত্ত ভাঙার লক্ষ্য তো আছেই, নতুন সংস্কৃতি গড়ার দিকেও নজর বাংলাদেশের। স্পিন স্বর্গ বানিয়ে জেতার ভাবনা থেকে আপাতত একটু সরে ভালো উইকেটে খেলে জিম্বাবুয়েকে হারাতে চায় মুমিনুল হকের দল।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হবে সকাল সাড়ে নয়টায়। তিন সংস্করণ মিলিয়ে এটি দুই দলের মধ্যে শততম আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
দেশের বাইরে সময়টা কাটছে ভীষণ বাজে। ঘরের মাঠে সবশেষ টেস্টে আছে বাজে হারের তেতো স্মৃতি; চার স্পিনার নিয়ে খেলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরেছিল ২২৪ রানে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজে সিলেটে স্বাগতিকরা হেরেছিল প্রথম টেস্ট।
রাসেল ডমিঙ্গো কোচ হয়ে আসার পর থেকে টেস্টর জন্য সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের মাঠে খেলা তিনটি টেস্টে দল হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে, কোনো ম্যাচই যায়নি পঞ্চম দিনে। এবার প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছেন। তার আশা, এবার উন্নতির ছাপ দেখা যাবে মুমিনুলদের খেলায়।
এটি যদিও আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ নয়, তবে টানা ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার উপলক্ষ বটে।