নিজস্ব প্রতিবেদক:: সেই ছোট্ট দ্বীপের ছবি। যা কেবল আজ স্মৃতিই।শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অশ্রুভেজা নয়নে আহাজারি করলেন মা-বাবা।
দু’সপ্তাহ আগে ঘাতকরা কেড়ে নিয়েছে বুকের ধনকে। সন্তানের স্বাভাবিক মৃত্যু হলে হয়তো মনকে এ ক’দিনে অনেকটাই শক্ত করতে পারতেন, সান্ত্বনা দিতে পারতেন। কিন্তু এ মৃত্যু যে যন্ত্রণার, বিষাদের আর ঘৃণার। তাই তো ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে সন্তানকে মনে করে হু হু করে কেঁদে উঠলেন নিহত ছাত্রলীগকর্মী অভিষেকের মা-বাবা। শহীদ মিনারের পাদদেশে হতভাগা মা-বাবা কেঁদে কেঁদে যেন সন্তানকেই খুঁজছিলেন।
সরস্বতী পূজা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ৬ ফেব্রুয়ারি সিলেট নগরীর টিলাগড়ে খুন হন গ্রিনহিল স্টেট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগকর্মী অভিষেক দে দ্বীপ।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন অভিষেকের মা-বাবা।
প্রভাতফেরির পর শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে তাদের বলতে শোনা যায়, ‘বাবু তুই কই গেলিরে। তুই আইছসনি শহীদ মিনারে। দেখ তর লাগি ফুল লইয়া আইছি। আমরারতো আর কেউ রইলো না রে।’ তাদের কান্না আর আকুতির আড়ালে ছেলে হত্যার বিচার চাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যদিও হত্যাকাণ্ডের দুই সপ্তাহ পর একজন ছাড়া আর কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
শুক্রবার সকাল থেকেকেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। ওই সময় শহীদ মিনারের বেদির একপাশে বসে ছেলের ছবি বুকে নিয়ে বুক চাপড়াচ্ছিলেন অভিষেকের মা অনিতা ও বাবা দীপক দে।
অনিতা দে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার বাবুকে (অভিষেক) যখন হাসপাতালে নেওয়া হয়, তখন সৈকতও (অভিযুক্ত) হাসপাতালে ছিল। তাকে পুলিশ আটক করেনি। সে নিজেই ধরা দিয়েছে। এটা তাদের একটা চালাকি। ১৫ দিনেও পুলিশ কোনো আসামিকে ধরছে না।’
অভিষেকের বাবা দীপক দে হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করে বলেন, ‘খুন হওয়ার পর জানতে পারি সরস্বতী পূজার কোনো ঘটনা নিয়ে নাকি আমার ছেলেকে হত্যা করেছে ওরা। সৈকত ছাড়া আর কোনো আসামিকে ধরতে পারেনি পুলিশ। কোন কারণে পুলিশ নীরব রয়েছে তা বুঝতে পারছি না।’
এ প্রসঙ্গে শাহপরান (রহ.) থানার ওসি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, মামলার আসামিরা পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে।