
সিলেটের বার্তা ডেস্ক:: ‘আমি কে? ‘কতো পাওয়ারফুল’! কোন পদে আছি আমি?
এসবের কোনটির দিকেও কখনো তাকান না দলীয় সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসব বুলি ছুড়ে অনিয়মকারীদের ব্যাপারে তিনি সদা-সর্বদা নীতির উপর অটল।
উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক বলেন, “আমি কে কত পাওয়ারফুল, কোন পদে আছে, এদিকে তাকাচ্ছি না। আমি একটা কথাই মেসেজ দিচ্ছি যে, এটা নেত্রীর নতুন করে আগামী দিনের জন্য আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার ইঙ্গিত-নির্দেশ। সেই নির্দেশের এতটুকু ব্যতয় আমি অন্তত বেঁচে থাকতে হতে দিব না। যতদিন নেত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন, সে এমপিই হোক, সে আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারীই হোক। এ ক্ষেত্রে আমি কাউকেই ছাড় দিব না”।
তিনি বলেন, “সে দুর্নীতির দায়ে জড়িত থাকবে আর আগামীতে কমিটি অপূর্ণাঙ্গ রাখবে। তার অধিনস্থ উপজেলা কিংবা ইউনিয়নের কোন কাঠামো ঠিক করবে না। আর খালি পদ নিয়ে বসে থাকবে। এ জায়গা গুলো আমি ভাঙতে চাই। এজন্য অনেকেই বিচলিত হতে পারে। অতীতে অনেকে অনেকেই সন্তুষ্ট করে তারা চলছে। এখন মনে হচ্ছে যে এই শফিক কোন শফিক। এরকম তো ছিল না আগে, আমাদের চলাফেরা। একারণেই অনেকে অসংলগ্ন কথা বলতেই পারে।”
বুধবার মৌলভীবাজার আওয়ামীলীগের মতবিনিময় সভা বাতিল হওয়ার প্রতিক্রিয়া তিনি এই কথাগুলো একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের কাছে বলেন।
সভা বাতিলের ব্যাপারে তিনি বলেন, “আমি কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক। জেলা আওয়ামীলীগে অনেক দুর্বলতা ও জটিলতা রয়েছে। এই তথ্য গুলো সভাপতি-সম্পাদকের উপস্থিতি ছাড়া সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে না। যেহেতু জেলা আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট অনুপস্থিত।
আমি তাদের কে বলছি, সভা স্থগিত করতে। জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী কি বলছে সেটা আমার জানা নাই। আমি আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি হয়ে, শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হয়ে এখানে এসেছি। এখন কারো কারো দুর্বলতা থাকতে পারে। সে দুর্নীতিতে জর্জরিত হতে পারে, সে অনিয়মে ব্যস্ত থাকতে পারে।
কিন্তু মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল, এখানকার দীর্ঘ দিনের একটা বড় ধরণের সাংগঠনিক দুর্বলতার জটিলতা আছে মৌলভীবাজারে। সেটা ওভারকাম করার জন্য, সেটাকে চিহিৃত করার জন্য।
বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারী এক সঙ্গে উপস্থিত থাকা জরুরী। যেহেতু প্রেসিডেন্ট ঢাকায় অবস্থান করতেছেন, এখানে একটা পার্লামেন্টেরিয়াং মিটিং এ উনি, আমাকে জানিয়েছেন।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে স্প্রিকারের নেতৃত্বে মিটিং এ আছে। উনি আসলে এই প্রোগ্রাম নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। যার কারণেই আমি এককভাবে সেক্রেটারীকে দিয়ে এই মিটিংটা আসলে করতে চাইনি।
কারণ এখানে প্রকৃত চিত্র উদঘাটনের জন্য ও সমাধানের জন্য প্রেসিডেন্টকে দরকার। এককভাবে সেক্রেটারী এতটা রাজনৈতিক দক্ষতা রাখে বলে আমার জানা নাই। আমি চাই প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারী দু-জনকে নিয়েই এখানকার সার্বিক চিত্র আমি তাদের সামনে জানব। জানার পরেই পদক্ষেপ নিব। যেহেতু এটা সম্ভব হচ্ছে না, সে কারণে প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারীকে নিয়ে আগামীতে খুব শীঘ্রই আবার বসব।
সাংগঠনিক হৃদমের বাহিরে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমিতো গত মঙ্গলবার সুনামগঞ্জে প্রোগ্রাম করেছি। সিলেট জেলা ও মহানগরের সাথে কথা বলেছি।
সকল পর্যায়ের নেতারা এখানে উপস্থিত ছিল। তাহলে কি মনে হওয়ার কথা সাংগঠনিক হৃদমের বাহিরে কিছু করেছি। এখানে সম্পূর্ণ সাংগঠনিক নিয়মের মধ্য দিয়ে যেন চলতে পারি, সেই দিকটা বিবেচনা করেই কিন্তু আমি এ কাজটা করেছি। এই প্রোগ্রামে যাব না, যেহেতু প্রেসিডেন্ট নাই।
সভা না হওয়ার ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহ উর রহমান বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের সাথে আলোচনা না করে ভ্যালিতে গিয়ে নাচ-গান করেছেন।
আমরা মনি করি তিনি সাংগঠনিক হৃদমের বাহিরে গিয়ে কাজটি করেছেন। তাই আমরা সভা বাতিল করেছি।
ভ্যালিতে নাচ-গানের বিষয়ে তিনি সাখাওয়াত হোসেন শফিক বলেন, কোথায় আমি নাচ-গানে অংশ নিয়েছি, আমি কি পীর মানুষ।
উনাকে বলবেন, যে কোথায় নাচ-গানে অংশ নিয়েছি, এসব তথ্য রেকর্ড দিতে। সে কেমন নাচতে পারে এবং কেমন গান গাইতে পারে। আমার নেত্রীর দেয়া নির্দেশের একচুলও বাহিরে চলতে নারাজ।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় মৌলভীবাজার পৌরসভার মিলনায়তনে পূর্ব নির্ধারিত জেলা আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো।
এসভায় যোগ দেয়ার কথা ছিলো কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সিলেট বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতা সাখাওয়াত হোসেন শফিক।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক এর আগমন উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটি, উপজেলা আওয়ামীলীগ, পৌর আওয়ামীলীগের ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো।