
বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারো সরগরম সিলেটের মিডিয়াঙ্গন।
স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকা এবং স্যটেলাইট টেলিভিশনের ফটো এবং ভিডিও সাংবাদিকদের সমন্বয়ে গঠিত এই সংগঠনের নির্বাচন ১৭ মে। প্রতিষ্ঠার প্রায় ২৫ বছর অতিবাহিত হয়েছে। এই সময়ে হয়েছে একাধিক নির্বাচন। হয়েছে নেতৃত্বের হাত বদল। তবে এবারের নির্বাচন যেকোন সময়ের চেয়ে আলোচনা ছড়াচ্ছে সকল মহলে। আগামী দিনের দায়িত্ব পালনে সংগঠনের অর্ধেকের বেশি সদস্য প্রতিদ্বন্দিতার জন্য নিজ নিজ মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন।
বিপিজেএর প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে মোট ভোটার সংখ্যা ২৭জন। প্রার্থীর নিজস্ব ভোট বাদ দিলে হয় ২৬ টি। অর্থাৎ জয়ের জন্য এই ২৬ জন ভোটারের ১৩ জনের ভোট আদায় করলেই প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত। তাই অল্প ভোটের
লড়াই হলেও জয় ছিনিয়ে আনতে সকল প্রার্থী লড়াই করে যাবেন সমান তালে। ফলাফল নিজেদের পক্ষে আনতে সবার চোঁখ এখন ১৩ ভোটারের দিকে। সবার কাছে চিরচেনা এই আনলাকি থার্টিন এখন ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের প্রার্থীদের কাছে লাকি থার্টিন’ ‘১৩’ হিসেবেই আবির্ভূত। সর্বশেষ তাই ২৬ ভোটারের ১৩ জন ভোটারকে যে কোন মূল্যে নিজেদের অনুকুলে নেয়ার চেষ্টা থাকবে সকল প্রার্থীদের। যাদের ভোটই নির্ধারন করবে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির আগামীর কান্ডারিদের।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৫-২০২৭ সনের (দুই বছর) জন্য ৯টি পদে মোট ১৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশনার বরাবর জমা দিয়েছেন। মনোনয়ন জমাদানের মাধ্যমে সতীর্থদের মাঝে এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতার আমেজ।
তবে ৪ টি পদে এককভাবে মনোনয়ন জমা দেয়ায় এই ৪টি পদের ভোটের লড়াই হচ্ছেনা মোটামুটি নিশ্চিত।
তবে অবশিষ্ট ৫টি পদের ১০ প্রার্থীর কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না তা তাদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মো. দুলাল হোসেন ও নাজমুল কবির পাভেল, সহ-সভাপতি পদে শাহ মো, কয়েছ আহমদ, হুমায়ুন কবির লিটন, মো. নুরুল ইসলাম ও শেখ আবদুল মজিদ, সাধারণ সম্পাদক পদে আশকার ইবনে আমিন লস্কর রাব্বি ও মো. নুরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. শাহিন আহমদ ও জাবেদ আহমদ মনোনয়ন পত্র জমা দেন। এছাড়াও সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে এসএম রফিকুল ইসলাম সুজন, প্রচার ও প্রকাশনা পদে আনোয়ার হোসেন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রেজা রুবেল এবং নির্বাহী সদস্য পদে আজমল আলী একক প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিল করেন।
তবে ৪ জন প্রার্থী নিজেদেরকে ভাগ্যবান মনে করতে পারেন সহজেই। কেননা তারা এক প্রকার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েগেছেন। বাকি শুধু নির্বাচন কমিশন থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষনার। সময়ের অপেক্ষা ছাড়া তাদের সামনে আর কোন প্রতিপক্ষ নেই।
এবারের নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে আর দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছেনা তাদেরকে। যদি না কোন ত্রুটির কারনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তাদের মনোনয়ন বাতিল না হয়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ীরা হলেন-সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে এসএম রফিকুল ইসলাম সুজন, প্রচার ও প্রকাশনা
পদে আনোয়ার হোসেন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রেজা রুবেল এবং নির্বাহী সদস্য পদে আজমল আলী একক প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিল করেন।
সভাপতি প্রাথী নাজমুল কবির পাভেল বলেন, প্রার্থী হিসাবে আমি সকল সহকর্মীর দোয়া, আর্শিবাদ ও ভোট প্রত্যাশা করি। সবাইকে একসাথে নিয়ে একটি সুন্দর-সামাজিক এবং সাংবাদিকবান্ধব সংগঠন গড়তে চাই। ভোটের মাঠের বাইরেও সবাই আমার ভাই। সংগঠনের উন্নয়নে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।
সভাপতি প্রাথী মো. দুলাল হোসেন বলেন, ভোটার সহ আমার প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীর প্রতি আমার শুভ কামনা জানাই। আমাদের সংগঠনের বয়স প্রায় ২৫ বছর হয়ে গেছে। আমি চাই আমাদের সংগঠনটি একটি ভাল অবস্থানে পৌছাবে।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আশকার ইবনে আমিন লস্কর রাব্বি বলেন, আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের সবাই একটি পরিবাবের মতো। অতীতের মতো আগামীতেও সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগঠনকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই। তাই সকল ভোটারের প্রতি মূল্যবান ভোট প্রদানের আবদার রাখেন তিনি।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ফটো সাংবাদিকরা সব সময় অবহেলিত। অতীতে সবার সুখে-দুঃখে পাশে থেকে একসাথে সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। যার ফল স্বরুপ আমাদের একটি কার্যালয় পেয়েছি। যদিও বিগত দিনে প্রতিকুল পরিবেশে আমাদেরকে পার করতে হয়েছে। এখন যেহেতু পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে তাই আবারও সংগঠনের উন্নয়নে সকল সহকর্মীদের সার্বিক সহযোগীতা, দোয়া ও ভোট প্রত্যাশা করছি।
১৭ মে ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত কমিটি ২০২৫-২০২৭ সনের দায়িত্ব পালন করবেন। অর্থাৎ আগামি দু’বছরের দায়িত্ব পালন করবেন তারা।
উল্লেখ্য যে, নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মঈন উদ্দিন এবং সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম ও সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন।
দৈনিক শ্যামল সিলেটের সৌজন্যে