আজ সোমবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একটি বছর পর এলো রমজান রহমত ও নাজাতের নিয়ে আহবান

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত মার্চ ১২, ২০২৪, ০৩:১০ অপরাহ্ণ
একটি বছর পর এলো রমজান রহমত ও নাজাতের নিয়ে আহবান
শেয়ার করুন/Share it

বছরঘুরে আবারও রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের বারতা নিয়ে মুসলিম উম্মাহর দরজায় হাজির হয়েছে শাহরু রামাদ্বান বা রমজান মাস। রমজান কুরআন নাজিলের মাস, কুরবাত ইলাল্লাহ তথা আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাস এটি। ক্ষমাপ্রাপ্তির মাস রমজান, নেকির পাল্লা ভারী করার মাস হচ্ছে রমজান। আর এ কারণেই মাহে রমজানকে বলা হয় মুসলমানদের জন্য আমল বৃদ্ধির মৌসুম।

এ মাসের প্রধান আমল হলো ফরজ রোজা। রোজা শব্দটি ফার্সি, যার অর্থ ‘বিরত থাকা’। আরবিতে বলা হয় সিয়াম, অর্থ ‘বিরত থাকা’, ‘আত্মসংযম করা’ ইত্যাদি। পরিভাষায়; সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পানাহার, দাম্পত্য মিলন ও রোজা ভঙ্গ হওয়ার সকল বিষয় থেকে বিরত থাকার নামই সিয়াম।
আরবি ‘রামাদ’ শব্দ থেকে এই মাসের নাম এসেছে। যার অর্থ ‘তপ্ত’ বা ‘শুষ্কতা’। গ্রীষ্মকালেই প্রথম রমজান মাস পালিত হয়েছিল, সে জন্যই এমন নামকরণ করা হয়েছে। নামকরণের আরেকটি প্রতীকী কারণ হচ্ছে, গ্রীষ্মের সূর্য যেমন পৃথিবীকে দগ্ধ করে, তেমনি এই মাস সব পাপকে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়।’ (মুসনাদ আহমদ)।

জান্নাতের সুসংবাদ নিয়ে রমজান মাসের আগমন হয়। তাইতো রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,‘রমজান মাস যখন আগমন করে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের শৃংখলাবদ্ধ করা হয়। (নাসায়ী, আল মুসতাদরাক)
মুমিনের অতীতের গুনাহ সমূহকে মুছে দেয় এই মাস। এ প্রসঙ্গে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং সওয়াব অর্জনের নিয়তে রমজানের সিয়াম পালন করবে তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ ক্ষমা করা হবে। (বোখারী ও মুসলিম)

হযরত আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন; ‘যে লোক ঈমান ও ইহতেসাবের সাথে রমজানের রোজা পালন করবে তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ ও মুসনাদে আহমাদ)।

আরও পড়ুন:  রমজানে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া হবে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

রমজান মাস সহানুভূতির মাস। রমজান মাস এলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দৃঃস্থ-অসহায় মানুষদের প্রতি দান সদকা করতে উৎসাহিত করতেন।
হযরত ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোকদের মধ্যে অতিদানশীল ছিলেন। বিশেষ করে রমজান মাস এলে তার দানশীলতা অনেক বেড়ে যেত। (বুখারী ও মুসলিম)

রমজানে রোজাদারকে ইফতার করানোর মাঝে রয়েছে অশেষ নেকি। এ প্রসঙ্গে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যদি কেউ রোজাদারকে ইফতার করায়, তাহলে সে উক্ত রোজাদারের সমপরিমাণ নেকি লাভ করবে, তবে রোজাদারের নেকি একটুও কমবে না। (তিরমিজি)

ফযিলতের মাস রমজানেই বিশ্ববাসীর মুক্তির বার্তা তথা হেদায়াত গ্রন্থ আল-কুরআন নাজিল হয়েছে। আল্লাাহ সুবহানাহু ওয়াতা আলা ইরশাদ করেন, ‘রমজান মাস। এতে মানুষের দিশারী এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যমিথ্যার পার্থক্যকারী রূপে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে তারা যেন এই মাসে সিয়াম পালন করে। (সূরা বাকারা:১৮৫)

রমজানে রোজা ফরজ হওয়া সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারিমের সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন: ‘হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যেন তোমরা তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জন করতে পার।’

এক অনাবিল শান্তি ও চিরস্থায়ী মুক্তির পয়গাম নিয়ে প্রতিবছর আসে মাহে রমজান। আর রোজা ইসলামের মৌলিক ইবাদতের মধ্যে অন্যতম। যা আমাদের ওপর আল্লাহ প্রদত্ত ফরজ বিধান। মহান আল্লাহ তায়ালা যেনো এ মাসকে আঁকড়ে ধরে পূর্ণ মুমিন হিসেবে আমাদেরকে তৈরি হওয়ার তাওফিক দান করেন।

আসুন, মিথ্যা, গীবত, চোগলখুরী, পরনিন্দা, অশ্লীলতা ও সকল খারাপ কাজ পরিহার করে তাকওয়া ও ইবাদতের মাধ্যমে মাহে রমজানের ফজিলত অর্জনে সচেষ্ঠ হই। সবশেষে, দেশবিদেশে অবস্থানরত  সকল পাঠক, লেখক, সাংবাদিক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভান্যুধায়ীদের জানাই মাহে রমজানের মুবারকবাদ। ‘আহ্লান্-সাহ্লান্ ইয়া শাহরু রামাদ্বান’। স্বাগতম হে মাহে রমজান।

আরও পড়ুন:  শাল্লায় ঔষধের রোগীদের হাহাকার
সিলেটের বার্তা ডেস্ক


শেয়ার করুন/Share it
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০