
লিখেছেন: অমিতাভ চক্রবর্ত্তী রনি: সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি সমগ্র বাঙালির জন্য ‘আমাদের আপা’। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে (শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা ছাড়া) হত্যার মাধ্যমে দেশের অগ্রযাত্রাকে রুখে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৮১ সালের ১৭ মে জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে তিনি শুধু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নয় পুরো বাংলাদেশের হাল ধরেছিলেন। লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসেন।
ক্ষমতায় বসেই তিনি দেশকে আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন। ৯৬ সালে তিনি যে পরিবর্তনের ধারা শুরু করেছিলেন সেই পরিবর্তনের ধারা ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালেও পরিলক্ষিত হয়। জননেত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের রোল মডেল। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বঙ্গবন্ধু কর্নফুলি টানেল, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে সক্ষমতার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যদি ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত উন্নয়নের কথা লিখি তাহলে তা লিখে শেষ করা যাবে না। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে এখন দেশ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এর থিম নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বে উন্নয়ন হচ্ছে এবং উন্নয়ন হবেই।
আসলে আজকে উন্নয়ন নিয়ে আমার লেখার বিষয় নয়। লেখাটা নেত্রীর দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতা ও স্মার্ট সরকার প্রধান নিয়ে। একজন মানুষ ৭৭ বছর বয়সেও দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন। আমি মাঝে মাঝে ভাবি ও অবাক হই। এটা কী করে সম্ভব! এই বয়সেও তিনি দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। শুধু কি দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন! তিনি এখন বিশ্ব নেতৃত্বের রোল মডেল। যদি আমাদের দেশটা বাংলাদেশ না হয়ে আমেরিকা, কানাডা,চীন, রাশিয়া ও ভারতের মত হতো তাহলে তিনি সকল মোড়ল দেশের নেতা হতেন। এই সব উন্নত দেশে নেতৃত্ব দেওয়া সহজ। কারণ তাদের দেশের জনগণ সভ্য। কিন্তু আমাদের দেশে যদি ঐসব দেশের নেতারা নেতৃত্ব দিতে আসতেন তাহলে মনে হয় পাগল হয়ে যেতেন। তখন বুঝতে পারতেন নেতৃত্ব কাহাকে বলে এবং কতপ্রকার ও কি কি? বহুমাত্রিক মানসিকতার দেশে নেতৃত্ব দেওয়া চারটি খানি কথা নয়। তারপরেও আমাদের নেত্রী সবকিছুকে সামলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। শুধু কি বহুমাত্রিক মানসিকতার মানুষ সামলান তা নয় তিনি বিশ্ব মোড়ল নেতাদেরও সামলান। এটাই একজন বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রধান গুণ। তিনি পারেন কারণ তিনি জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা। আর তাঁর সফল নেতৃত্ব সমগ্র বিশ্বে দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছে।
জননেত্রীর সফল নেতৃত্বের দ্যুতি ছড়ানো পরিলক্ষিত হয়, যখন তিনি বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে বসেন। প্রতিবারই তিনি এই সংবাদ সম্মেলনের কাজটি সুন্দর, সফল ও মজার ছলে করে থাকেন। যেখানে বাংলাদেশের প্রথিত যশা ও নামকরা সাংবাদিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত থাকেন। প্রশ্নবানে জর্জরিত করেন। কোন লিখিত স্ক্রিপট ছাড়া, কোন ল্যাপটপ ছাড়া, কোন ডকুমেন্টস ছাড়া অনর্গলভাবে প্রত্যেক সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন। প্রত্যেকটা উত্তরই স্মার্ট উত্তর। যুক্তিসঙ্গত উত্তর। একটা প্রশ্নের উত্তরও এড়িয়ে যান না। শুধু উত্তরই দেন না সাংবাদিকদের সাথে মজাও করেন। বাঘা বাঘা সাংবাদিক যারা টকশো ফাটিয়ে দেন তারাও নেত্রীর সামনে মাঝে মাঝে হতভম্ব হয়ে যান। তিনি কোন লুকোচুরি উত্তর দেন না। বরং সত্যটাই তুলে ধরেন। তিনি বিদেশ সফর শেষে সংবাদ সম্মেলন না এড়িয়ে বরং সাংবাদিকদের ডেকে উনাদের সাথে কথা বলেন। এটাই উনার বৈশিষ্ট্য ও বহুমাত্রিক গুণের অংশ। তিনি কথায় নয় কাজেই তাঁর নেতৃত্বের দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছেন।
সত্যিই তিনি অসাধারণ একজন স্মার্ট সরকার প্রধান। একজন সরকার প্রধানকে জনগণের চেয়ে স্মার্ট ও বিচক্ষণ হতে হয় এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি এতটাই স্মার্ট, বিচক্ষণ ও দূরদর্শী যে উনার সাথে অন্য কোনো নেতৃত্বের তুলনা হয় না। এই স্মার্ট নেতৃত্ব নিয়ে ‘আমাদের আপা’ বেঁচে থাকুক যুগ যুগ ধরে এটাই আমাদের প্রত্যাশা ও মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে কামনা।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক ও কলামিস্ট