
সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৫ ও ১৮নং ওয়ার্ডের নাগরিকবৃন্দের সমস্যার অন্ত নেই। পাঁচ বছর ক্ষমতায় থেকেও এই দুই ওয়ার্ডবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে পারেননি নির্বাচিত দু’জন কাউন্সিলর। উভয় ওয়ার্ডে রয়েছে নানাবিধ সমস্যা। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিশুদ্ধ পানির অভাব, দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা, জলাবদ্ধতা, মাদক ব্যবসা, বখাটেদের উৎপাত, কিশোর গ্যাং, জুয়ার আসর, অসামাজিক কার্যকলাপ, ডাস্টবিন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছিন্নতায় অবহেলাসহ সন্ত্রাসী তৎপরতা।
১৫ নং ওয়ার্ড সিসিকের ভিআইপি ওয়ার্ড হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এই ওয়ার্ডটি যেন অভিভাবকহীন। ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার নেই ওয়ার্ডের কয়েকটি মহল্লায়। ফলে ড্রেনে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ থাকায় ড্রেনগুলোতে জমে আছে ময়লা-অবর্জনার স্তুপ। জমে থাকা আবর্জনা থেকে বের হচ্ছে পঁচা দুর্গন্ধ। মশক নিধনে নেওয়া হয় নি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ। মশার উৎপাতে এই ওয়ার্ডেও বাসিন্দারা বেশে দুর্ভোগ পোহালেও ওয়ার্ড কমিশনারের কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি।
তাছাড়া সোবহানীঘাট পয়েন্ট সংলগ্ন ফার্মেসীর সামনে থেকে তীর খেলার টিকেট কাটা হচ্ছে নির্বিঘেœ। আম বিক্রেতার ছদ্মাবরণে ভ্যানগাড়ি থেকে শাহ আলম নামের জনৈক যুবকের মাধ্যমে প্রতিদিন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ ঝুঁকছে তীর নামক জুয়া খেলায়। সোবহানীঘাট পুলিশ ফাঁড়ির একটু অদূরে এই সর্বনাশা জুয়া খেলা চললেও তীর খেলার ম্যানাজার শাহআলম বলছে, ফাঁড়ির সাথে কন্ট্রাক্ট করেই খেলা চলছে।
এদিকে ১৫ নং ওয়ার্ড কমিশনারের উপর খেদোক্তি রয়েছে ভোটারদের। গেল বন্যায় ওয়ার্ডের নাইওরপুল সোবহানী ঘাট, চালিবন্দর, জতরপুর, জয়নগর ছিল বন্যাকবলিত। সেই দু:সময়ে বাসা-বাড়ি ছেড়ে অনেকেই পাড়ি জমান আশ্রয় কেন্দ্রে। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থান না পেয়ে ছাদের উপরেও কোনো রকম রাত কাটিয়েছেন। কিন্তু সেই সময়টাতে কোথাও পাওয়া যায় নি স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার ছয়ফুল আমিন বাকেরকে। ভোটাররা জানিয়েছেন, করোনা ও বন্যাকালীণ দুঃসময়ে তিনি ছিলেন আমেরিকায়। ইলেকশন আসলে ওই কাউন্সিলরের চোখ দেখেন ভোটাররা।
সমস্যা রয়েছে নগরীর ১৮ নং ওয়ার্ডেও। জলাবদ্ধতা মুক্ত হয় নি এই ওয়ার্ড। উপরন্তু স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে মশার উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা কর্মী থাকলেও কোনোদিন পরিচ্ছন্নতার কাজে পায় নি ভোটাররা। ফলে অপরিচ্ছন্ন পাড়া-মহল্লার ভোটারদের ক্ষোভ বাড়লেও স্থানীয় কাউন্সিলরের ভূমিকা চোখে পড়েনি ভোটারদের। তাছাড়া, অপরিচিত কিশোরদের পাড়া-মহল্লায় আনাগোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে আশঙ্কা। ভোটাররা বলছেন, এই পরিস্থিতি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ডেকে আনতে পারে।
ভোটারদের শত অভিযোগের বিষয়ে ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছয়ফুল আমিন বাকেরের ব্যক্তিগত সেল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।
১৮ নং ওয়ার্ড কমিশনার এ বি এম জিল্লুর রহমান জানান,উল্লেখ্য, ২৭ ওয়ার্ড থেকে সিলেট সিটি করপোরেশন এখন ৪২টি ওয়ার্ডে। ভোট বেড়ে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ ও নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ জন।