
নবীগঞ্জ-মার্কুলি সঞ্চালন লাইনের কাগাপাশা ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। খুঁটির দূরত্ব বেশী হওয়ায় সঞ্চালন লাইন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঝুলে থাকা লাইনে যেকোন সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই নিরাপদ খাম্বার পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশের খুটি। ফলে ঝুঁকির মধ্যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ডের পাঁচ হাজার গ্রাহক।
সরজমিনে দেখা যায়, পাকা খুঁটির পাশাপাশি বাঁশের খুঁটি দিয়ে বিদ্যুতের লাইন টানা হয়েছে। কোন-কোন গ্রামে ঘরের তৈরি সিমেন্টের পালা পেছিয়ে বিদ্যুত লাইন একস্থান থেকে অন্যস্থানে নেওয়া হয়েছে। বাঁশের খুঁটি ব্যবহার করে ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে বিদ্যুত লাইন টানার ফলে মারাত্মক দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
পুরো ইউনিয়ন ছোট-বড় খাল-বিল ও নদী বেষ্টিত অঞ্চল হওয়ায় যোগযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। ভরা বর্ষা মৌসুমে ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠে নৌকা। বর্ষায় ঝুলে থাকা বিদ্যুৎ ঘাতক হয়ে উঠে। ফলে বিগত দিনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে একাধিক লোক। রাতের আঁধারে নৌকা চলাচলের সময় বেশীর ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। কোন কোন স্থানে পানির উচ্চতা থেকে ঝুলন্ত বৈদ্যুতিক তারের উচ্চতা ৫ থেকে ৭ ফুট। নৌকার লগিতে লেগে প্রতিবছরই এখানে বিদ্যুতের তার ছেঁড়ার ঘটনা ঘটে থাকে।
বিশেষ করে চকবাজার থেকে মাকালকান্দি ও দৌলতপুর লাইনটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
বানিয়াচং বিদ্যুৎ দপ্তরের আওতাধিন কাগাপাশা ইউনিয়নের মাকালকান্দি, চকবাজার, বাখতা, মক্কা, ঘূর্গাপুর, রাজিমপুর ও নয়া বাড়ি সহ বিভিন্ন গ্রামগুলোতে পাকা খুঁটির পাশাপাশি সিমেন্টের ঘরের পালার ছোট ছোট খুটি দিয়ে তার তার টেনে সংযোগ নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের উদাসীনতার কারণে ইউনিয়নের ১০ থেকে ১২ গ্রামের মানুষ বিদ্যুতজনিত দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছে। প্রতিবছর এখানে বিদ্যুতজনিত দুর্ঘটনা ঘটছে। তারা অবিলম্বে বাঁশের খুটি অপসারণ করে বিদ্যুৎ বিভাগের সরকারি খুঁটি স্থাপনের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে মাকালকান্দি গ্রামের নয়া হাটির শান্ত দাশ ও অনন্ত দাশ জানান, তাদের হাটির মধ্যে দিয়ে বিদ্যুতের তার নীচ দিয়ে টানায় তারা সবসময় ভয়ে থাকেন কখন না দুর্ঘটনা ঘটে। তারাসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ তাদের গ্রামের বিদ্যুতের খুঁটি ও তার গ্রামের এক পাশ দিয়ে টানানোর আহবান জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সুজিত দাশ জানান, আমার ওয়ার্ডের বর্গি থেকে আর্নি ও চকবাজার থেকে মাকালকান্দি গ্রামে আসার পথে বাঁশের খুটিতে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইন টানা হয়েছে। আসছে ভরা বর্ষা আসার আগে বাঁশের খুঁটি সরানোসহ সঞ্চালন লাইন টানিয়ে উঁচু করা না হলে নৌকা চলাচল শুরু হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি পরিষদ চেয়ারম্যান এরশাদ আলী জানান, সরকার শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ বিদ্যুৎ সামগ্রী পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাগাপাশা ইউনিয়নে বাঁশের খুঁটি অপসারণ করে সরকারি খুঁটি দ্রুত প্রতিস্থাপন করার জন্য কতৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
এব্যপারে বানিয়াচং পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম ডিজিএম সৈয়দ আবদুল্লা মাসুদ জানান, সঞ্চালন লাইন মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে জরুরি প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে সঞ্চালন লাইন সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।