সিলেটের বিশ্বনাথের দশপাইকা আনোয়ারুল উলুম আলীম মাদ্রাসার এডহক কমিটি বাতিল, অবৈধ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগসহ অন্যান্য আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখা ও নতুন এডহক কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সিলেট জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বরএলাকাবাসীর পক্ষে দুই অভিভাবক সদস্য দশপাইকা গ্রামের মৃত মন্তাজ খাঁনের ছেলে সুলতান খাঁন ও মৃত সুন্দর আলীর ছেলে সেলিম খাঁন এই আবেদন করেন। আর জেলা শিক্ষা অফিসার কাছে ১৮ডিসেম্বর অনুলিপি দেয়া হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাদরাসার অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ এলাকাবাসীর সাথে আলাপ আলোচনা না করেই কমিটির সভাপতি হিসাবে তাদের নিজের লোক মনোহর আলীর নাম চার বছর আগে গোপনে মাদরাসা বোর্ডে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছিলেন। এর এক মাস পর তিনি ব্রেন স্ট্রোক করলে অধ্যক্ষের সহযোগীতায় তার ছেলে শওকত আলী স্বঘোষিত ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন শুরু করেন। বিষয়টি মাদরাসা বোর্ডকে জানানো বা নতুন সভাপতি নিয়োগের কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি।
গোপনে এক তরফভাবে গঠন করার বিষয়টি প্রকাশ হলে এলাকাবাসী ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর মাদরাসা বোর্ডে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পরে বিষয়টি তদন্তের জন্য পাঠানো হয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। তিনি চলতি বছরের ১৬ আগস্ট তার কার্যালয়ে শুনানীর দিন ধার্য করেন। শুনানীতে উপস্থিত গ্রামবাসী ও অভিভাবকদের বক্তব্য শুনার পর তিনি আবারও লিখিত বক্তব্য দিতে বললে সবাই লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। এরপর মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সাথে সবাইকে নিয়ে বসে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়ার আশ্বাস দিলেও তা আর বাস্তবায়ন করেন নি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
স্বঘোষিত ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শওকত আলীকে নিয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ উপাধ্যক্ষ মিলে একটি পারিবারিক এডহক কমিটির মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মাদরাসার আয়া, কম্পিউটার অপারেটর কাম অফিস সহকারী, নৈশ প্রহরী ইত্যাদি পদে তথাকথিত নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। কিন্তু কমিটির মেয়াদের মধ্যে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় অধ্যক্ষ ও তাহার সহযোগীরা তাদের অবৈধ কাজকে বৈধ করতে আবারও শওকত আলী ইমনকে আহŸায়ক কমিটির সভাপতি করে গোপনে আরেকটি এডহক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। কোন সাধারণ সভা না করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে। আমাদের আপত্তি পাশ কাটিয়ে একতরফাভাবে গত ১ ডিসেম্বর শওকত আলীকে এডহক কমিটির সভাপতি নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আমরা মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ দায়ের করি। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে আমাদের অভিযোগের সত্যতা ও অধ্যক্ষ উপাধ্যক্ষ এবং শওকত আলী ইমনের দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যাবে।
সরাসরি মাদরাসা বোর্ড থেকে তদন্ত কর্মকর্তা পাঠিয়ে তদন্ত করলে সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতির প্রমাণ যেমন পাওয়া যাবে, তেমনি মাদরাসা ও এলাকাবাসী মারাত্মক ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবেন বলেও তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন।
তারা অবিলম্বে এই এডহক কমিটি বাতিল ও আয়-ব্যয় এবং নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট জোর দাবি জানান।