সিলেট ২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সিলেটে ষাটের নিটে মিলছে না সবজি, ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

সিলেটের বার্তা প্রতিবেদক
প্রকাশিত অক্টোবর ১২, ২০২২, ১২:৫৭ অপরাহ্ণ
সিলেটে ষাটের নিটে মিলছে না সবজি, ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

বাজারে সবজির অভাব নেই। কিন্তু পেঁপে আর মিষ্টি কুমড়া বাদে বাজারে কোনো সবজি নেই যেটার দাম ৬০ টাকার নিচে। মঙ্গলবার বিকেলে এসব কথা বলছিলেন নগরীর আম্বরখানা কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে আসা শিপন মিয়া।

এই বাজার ঘুরে তার কথার সত্যতাও পাওয়া গেল। বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ সবজির দামই বেড়েছে। কাঁচা মরিচের ঝাঁজ কমলেও কমেনি গাজর ও টমেটোর দাম। টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা। গাজরের দামও একই। আর আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। সবজির বাজারে ক্রেতাদের মুখে অসন্তোষ স্পষ্ট।

তবে শাক-সবজির পাইকারি আড়ত ও খুচরা বাজারে দামের তফাত অনেক বেশী। ফুটপাতে বসে বা ফেরি করে যারা সবজি বিক্রি করেন তারা অতিরিক্ত দাম নেন ক্রেতাদের কাছ থেকে। এমন অভিযোগ অনেকের।

বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম বাড়ার স্পষ্ট কারণ জানা নেই। অধিকাংশ সবজির দামই গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। সবজি বিক্রেতা সেলিম মিয়া বলেন, বেগুন গত সপ্তাহে কিনেছি ৬৫ টাকায়। শনিবার তা কিনতে হয়েছে ৭০টাকায়। বিক্রি তো ৮০ টাকার নিচে করা যাচ্ছে না। গোল বেগুন ৯০, লম্বা বেগুন ৮০ টাকায় বেচতে হচ্ছে।

গত সপ্তাহেও ঢ্যাঁড়স ছিল ৫০ টাকা, মঙ্গলবার তা ৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। কাকরোলে কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা, গত সপ্তাহেও যা ছিল ৫০ টাকা। শনিবার শশা ৬০-৭০ টাকায় বিক্র হচ্ছে।

নগরীর বন্দরবাজার, রিকাবিবাজার ঘুরে দেখা যায়, লাউ ৫০ থেকে ৬০, কচুর লতি ৬০, ১০ টাকা বাড়তিতে করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা। ৫০০ গ্রাম ওজনের ছোট পাতাকপির পিস ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ৭০, চিচিঙ্গা ৭০, পটোল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মূলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা। এসব সবজি গত সপ্তাহে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে পাওয়া গেছে। তবে শুধু পেঁপেই মিলছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।

বন্দরবাজারের সবজি কিতে আসা নগরীর আগপাড়ার আমিন মিয়া বলেন, বাড়তে সময় লাগে না, কিন্তু বেড়ে গেলে যেন আর কমে না সবজির দাম। আমাদের মতো মধ্যবিত্তের ৬ সদস্যের পরিবারের জন্য সবজির জন্য খরচা বেড়ে গেছে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। শাকের দামও বেড়েছে। কলমি শাক জোড়া আঁটি ৪০ টাকা, কচুর শাক দুই আঁটি ২০, মুলার শাক দুই আঁটি ৩০, লাল শাকের জোড়া আঁটি ৩০, পুঁই শাক ৪০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আর ধনিয়ার পাতা ১০০ গ্রাম ৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। লেবুর হালি ১৫ থেকে ২০ টাকায় মিলছে। নিম্ন আয়ের মানুষের পছন্দের লাউয়ের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা। জালি কুমড়া ৪০ টাকা পিস। রিকাবীবাজারের সবজি বিক্রেতা আবদুল গফুর বলেন, টমেটো ও গাজরের দাম শুনে অনেক ক্রেতা ফিরে যাচ্ছেন। যারা কিনছেন তারাও অল্প করে কিনছেন।

গাঁজর ও টমেটো বাজারে নেই। হাইব্রিড দুই সবজি আমদানি করায় খরচা বেশি। বাজার করতে আসা মুন্সিপাড়ার কামাল উদ্দিন বলেন, সামর্থ্যরে মধ্যে রয়েছে কেবল কিছু শাক ও পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া আর মরিচ। লাউয়ের দামও বাড়তি। আলুও ৩৫ টাকা। বাকি সবই ৬০ টাকার ওপরে। ২০০ টাকার সবজি কিনলে একদিন যায় না ফিরতে হয় ফের সবজির বাজারে।

বাজারে আসা এক ব্যাংক কর্মকর্তা শামসুল আমিন বলেন, যুদ্ধের অজুহাতে সব কিছুর দাম বাড়ানো হলেও এখন সব কিছুর দাম কমছে। সবজির দাম এত বেড়েছে, এখন সবজি খাওয়ার অভ্যাস ছাড়ার উপক্রম হচ্ছে।

গৃহিণী শামসুন নাহার বলেন, বাজারে শাকেরও বাড়তি দাম। আবার আঁটিতে পরিমাণেও কম। আঁটিগুলো এমন যে এক আঁটিতে চারজনের পরিবারে একবেলাও হয় না। দুই আঁটি নেয়া লাগে। শাক কিনতেই ১০০ টাকার মতো খরচ হয়ে যায়।

সবজি বিক্রেতা কামাল উদ্দিন বলেন, সবজির বাজারে কোনো সরকারি মনিটরিং নেই। যে যেমন পারছেন দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। আমরা খুচরা বেচি। পাইকারিতেই যদি বাড়তি দামে কিনতে হয় তাহলে তো লোকসান করে খুচরায় সবজি বিক্রি করা যায় না।


শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০