বাংলাদেশ ব্যাংক মার্কিন ডলারের দাম আরও ৫০ পয়সা বাড়িয়েছে। ফলে প্রতি ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা, আগে যা ছিল ৯৩ টাকা ৯৫ পয়সা। নতুন দামে রিজার্ভ থেকে আজ ৭ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন দামকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে আন্তব্যাংক দর।
অবশ্য ব্যাংকগুলোতে এই দামে কোনো ডলার কেনাবেচা হচ্ছে না। সংকটের কারণে গতকাল ব্যাংকগুলো ১০০ টাকার বেশি দামে প্রবাসী আয় সংগ্রহ করেছে। একই দামে আমদানিকারকদের দায় শোধ করেছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দামের পার্থক্য রয়ে গেছে ৫ টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডলারের দাম আরও ৫০ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। নতুন দামে ৭ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে।
ডলার-সংকট নিরসনে গত বৃহস্পতিবার একসঙ্গে চারটি সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেগুলো হলো ব্যাংকের ডলার ধারণের সীমা (এনওপি) হ্রাস, রপ্তানিকারকের প্রত্যাবাসন কোটায় (ইআরকিউ) ধারণকৃত ডলারের ৫০ শতাংশ নগদায়ন, ইআরকিউ হিসাবে জমা রাখার সীমা কমিয়ে অর্ধেকে নামিয়ে আনা এবং অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিং ইউনিটে স্থানান্তর। এ ছাড়া ৫০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের বেসরকারি যেকোনো আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলার ২৪ ঘণ্টা আগে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ফলে সংকট কিছুটা কমার আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের ফলে অনেক রপ্তানিকারক তাঁদের রপ্তানি প্রত্যাবাসন কোটায় (ইআরকিউ) রাখা বিদেশি মুদ্রা বিক্রি করছেন। ব্যাংকগুলো এই ডলার কিনে আমদানি দায় শোধ করছে। একইভাবে অনেক ব্যাংকও নিজেদের কাছে রাখা ডলারও বিক্রি করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর কাছে ইআরকিউর ৭৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার জমা ছিল। বুধবার পর্যন্ত এর মধ্য থেকে ২৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার ছেড়েছেন রপ্তানিকারকেরা। সামনে আরও ডলার বিক্রি করতে হবে তাদের।
দেশে জ্বালানি তেল ও ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে সার্বিকভাবে আমদানি খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় ডলারের ওপর চাপ পড়েছে। আবার রপ্তানি বাড়লেও তা আমদানির মতো নয়। প্রবাসী আয়ও বাড়েনি, বরং তা কমেছে। ফলে দেশে ডলারের সংকট তৈরি হয়েছে। এতে বেড়ে গেছে প্রধান আন্তর্জাতিক মুদ্রাটির দাম।