আজ শুক্রবার, ১৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি, রাত ১২:১৭

কাতার সোজা করার কথা কে বলবেন? প্রচলিত ভুলের সংশোধন জরুরী

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২১, ১১:৩২ অপরাহ্ণ
কাতার সোজা করার কথা কে বলবেন? প্রচলিত ভুলের সংশোধন জরুরী

‘কাতার সোজা করুন’, সামনের কাতার পুরা করুন, মোবাইল ফোন বন্ধ রাখুন’। জামাত শুরু পূর্বে ইকামাতের আগে বলে থাকেন এসব কথা মুয়াজ্জিন সাহেবানে।

মুখ্য আলোচ্য বিষয় এখানে কাতার সোজা নিয়ে।

সিলেটের বার্তার পাঠকদের উদ্দেশ্যে আজ অতিথি লেখক হিসেবে বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন সিলেট নগরীর আম্বরখানা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি জিয়াউর রহমান।

মসজিদে জামাতে নামাযে প্রচলিত দুটি বিষয়ের সংশোধন প্রয়োজন-
এক- এখনো বাংলাদেশের অধিকাংশ মসজিদে কাতার সোজা করার কথা মুআযযিন সাহেব বলেন৷ অথচ অনেকগুলো সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত কাতার সোজা করার কথা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে বলতেন৷ বিলাল রাযি. বলতেন না৷ বোঝা গেলো এটা ইমাম সাহেবের দায়িত্ব, মুআযযিন সাহেবের নয়৷

দুই- ইকামতের আগে কাতার সোজা করার কথা বলা৷ এটাও সুন্নাহর বিপরীত কাজ৷ ইকামত বলার পর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাতার সোজা করার হুকুম দিতেন৷ কাতার বাঁকা হলে ঠিক করে দিতেন৷ তারপর তাকবীরে তাহরীমা বলে নামায শুরু করতেন৷ এভাবেই হাদিসে এসেছে৷ সাহাবায়ে কেরামের আমলও এমন ছিলো৷ এখানে ফিকহি কোনো এখতেলাফও নেই৷

কিন্তু বাংলাদেশে প্রায় ৯৯ ভাগ মসজিদে ইকামতের আগে কাতার সোজা করার কথা বলা হয়৷ দেখাদেখি সবাই এই পদ্ধতির উপর চলার কারণে ইকামতের পরে বলার পদ্ধতিকে মানুষ ভুল মনে করে৷ তাছাড়া ইকামতের পরে কাতার সোজা করার কথা বললে অধিক সংখ্যক মুসল্লির ইমাম সাহেবের এই কথাটি শুনার সুযোগ হয়৷ ইকামতের আগে বললে তখন সংখ্যায় মুসল্লি কম থাকেন৷

তাই ব্যাপকভাবে ইকামতের পরে কাতার সোজা করার কথা বলার সুন্নাহ জারি করা প্রয়োজন৷

রেফারেন্স:
عَن أَنَسٍ قَالَ: أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَأَقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِوَجْهِهِ فَقَالَ: أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ وَتَرَاصُّوا فَإِنِّي أَرَاكُمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِي. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ.
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه و سلم مَنْ سَدَّ فُرْجَةً فِيْ صَفٍّ رَفَعَهُ اللهُ بِهَا دَرَجَةً وَبَنَى لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ. طبراني

আরও পড়ুন:  করোনাভাইরাস: যে বার্তা দিলেন ওয়ার্ল্ড ফেমাস আলেমরা

 

হযরত আনাস বিন মালিক রা: হতে বর্ণিত তিনি বলেন, নামাজের ইক্বামাত হয়ে গেছে এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে সামনা সামনি ফিরে গেলেন এবং বললেন তোমাদের কাতার গুলো সোজা কর আর মিলে দাঁড়াও । নিশ্চই আমি পেছন দিক থেকেও তোমাদেরকে দেখতে পাই ।

(সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলীম)

তিরমিযি শরীফে আছে-
“عن النعمان بن بشير قال: كان رسول الله صلى الله عليه و سلم يسوي صفوفنا، فخرج يومًا فرأى رجلًا خارجًا صدره عن القوم، فقال: لتسون الصفوف أو ليخالفن الله بين وجوهكم.
كَانَ عُمَرُ يَبْعَثُ رَجُلًا يُقَوِّمُ الصُّفُوفَ، ثُمَّ لَا يُكَبِّرُ حَتَّى يَأْتِيَهُ، فَيُخْبِرَهُ أَنَّ الصُّفُوفَ قَدِ اعْتَدَلَتْ.
وروى عن علي و عثمان أنهما كانا يتعاهدان ذلك، ويقولان: استووا، وكان علي يقول: تقدم يا فلان! تأخر يا فلان!”
عن مالك بن أبي عامر أن عثمان بن عفان كان يقول في خطبته قل ما يدع ذلك إذا خطب: إذا قام الإمام يخطب يوم الجمعة فاستمعوا وأنصتوا؛ فإن للمنصت الذي لايسمع من الحظ مثل ما للمنصت السامع، فإذا قامت الصلاة فاعدلوا الصفوف وحاذوا بالمناكب؛ فإن اعتدال الصفوف من تمام الصلاة. ثم لايكبر حتى يأتيه رجال قد وكلهم بتسوية الصفوف، فيخبرونه أن قد استوت فيكبر”. مؤطا امام مالك

নু‘মান ইবনু বাশীর রাযি. হতে বর্ণিত, আবু দাউদ শরীফের হাদিস
তিনি বলেন-
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسَوِّي صُفُوفَنَا إِذَا قُمْنَا إِلَى الصَّلَاةِ، فَإِذَا اسَتْوَيْنَا كَبَّرَ. ابو داؤد

হযরত নুমান ইবনে বশির রা: হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন আমরা নামাজের জন্য দাঁড়াতাম তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাতার সোজা করতেন । কাতার পুরোপুরি সোজা হয়েগেলেই তিনি তাকবীর বলতেন।

(সুনানে আবু দাউদ)

আরও পড়ুন:  জকিগঞ্জে কুরআনিক ফাউন্ডেশনের অভিষেক সম্পন্ন

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১