
সিলেটের বহুল আলোচিত দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকা। রেল স্টেশন, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, আবাসিক হোটেল, চা স্টল, রেস্তোরাঁ, অসংখ্য ছোট বড় কলোনী, রিকশার গ্যারেজকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন থেকে অপরাধ আর অপরাধীদের আস্তানায় গড়ে উঠছে৷
পুলিশের অভিযানেও যেনো থামছে না অপরাধীদের দৌড়াত্ম। সকালে ইয়াবার চালান তো বিকেলে গাঁজার চালান ধরা পড়ছে। সন্ধ্যারাতে হোটেল থেকে ধরা হচ্ছে অবাঞ্চিত নারী-পুরুষদের।
যাত্রীবেশী সিএনজি ছিনতাইকারী চক্র সাধারণ যাত্রীদের সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়ে নিঃস্ব করে পথিমধ্যে নামিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।
মোদি দোকান, রেস্তোরাঁয় তীর শিলংসহ হরেক রকম জুয়ার আড্ডা চলে দিবানিশি।
সর্বশেষ অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে ৭ নারী-পুরুষকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে দক্ষিণ সুরমার অভি আবাসিক হোটেল থেকে তাদের আটক করা হয়।

দক্ষিণ সুরমার হোটেল অভিতে অসামাজিক কার্যকলাপ, আটক ৭
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলামের বরাত দিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের মিডিয়া শাখা জানায়, শুক্রবার রাত সাড়ে টার দিকে দক্ষিণ সুরমা থানাধীন ভার্থখলাস্থ অভি আবাসিক হোটেলে বিশেষ অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত লিপ্ত অবস্থায় ৩ নারী ও ৪ জন পুরুষকে আটক করে দক্ষিণ সুরমা থানাপুলিশ।
আটক পুরুষরা হচ্ছেন- মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানার সরইবাড়ী গ্রামের শুক্কুর মিয়ার ছেলে মো. জসিম মিয়া (২৫), সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার শিবপুর গ্রামের মো. আফতাব মিয়ার ছেলে মো. শামছুল হক (২৬), একই উপজেলার মুক্তাখাই গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে মো. নাজমুল হোসেন (১৮), ময়মনসিংহ সদর থানার সাভার গ্রামের মৃত ইসলাম উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২৪)।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন দক্ষিণ সুরমা থানার এসআই মো. রোকনুজ্জামান চৌধুরী পিপিএম। সঙ্গে ছিলেন এসআই সঞ্জয় চন্দ্র দে, এএসআই পিপলু সেন, এটিএসআই শামীম মিয়া, নারী কনস্টেবল সোনারা বেগম ও হেনা আক্তার।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
রবিবার (২৪ জানুয়ার) টেকনিক্যাল রোডের একটি মা খিচুড়ি এন্ড বিরিয়ানির দোকান থেকে তীর শিলং এর দুই এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়। একই দিন আরেক জন ওয়ারেন্টভূক্ত আসাকিকে আটক করে পুলিশ।
সূত্র জানায়, ১৯-জানুয়ারি থেকে ২৪ জানুয়ারি ৬ দিনের বিশেষ অভিযানে মোট ৮১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে।
দক্ষিণ সুরমাবাসীর নির্বিঘ্নে চলাফেরার জন্য কাজ করছে পুলিশ এমনটি জানিয়ে ওসি মো. মনিরুল ইসলাম শ্যামল সিলেটকে বলেন-সন্ত্রাস, মাদক ও অপরাধমুক্ত দক্ষিণ সুরমা গঠনের লক্ষ্যে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।
জুয়া, মাদকসহ সকল অপরাধ দমনে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এসএমপি সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নাজিরবাজারস্থ ঈদগাহ বাজার রোডে অবস্থিত ময়নুল এন্ড আরিয়ান রেস্টুরেন্ট থেকে ৩৩ পুরিয়া গাঁজাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শুক্রবার (২২জানুয়ারি) দক্ষিণ সুরমা থানাধীন নাজির বাজারস্থ ঈদগা বাজার রোড ময়নুল এন্ড আরিয়ান রেষ্টুরেন্টের ভিতর মাদক ক্রয়-বিক্রয় করছে এমন সংবাদ পেয়ে ও-ই রেস্টুরেন্টে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে আসামী ১। মোঃ তফুর আলী (৪৫) পিতা-মৃত তৈয়ব উল্লা, সাং- ঝাঝর, ২। আব্দুল কাদির (৪০) পিতা-মৃত মন্তাজ আলী, সাং-রাজাপুর, ৩। বেলাল আহমদ (৩০) পিতা-মৃত জহির উল্লা, সাং-ঝাঝর, সর্ব থানা-দক্ষিণ সুরমা, জেলা-সিলেটদেরকে আটক করেন। অতঃপর (১) আসামী তফুর আলীর পরিহিত গায়ের কালো রংয়ের জ্যাকেটের ডান পকেটে পলিথিন দ্বারা মুড়ানো ২৪(চব্বিশ) পুরিয়া গাঁজা এবং গাঁজা বিক্রয়ের নগদ ৯০০/- টাকা (২) আসামী আব্দুল কাদির এর পরিহিত লাল রংয়ের জ্যাকেট এর বাম পাশের পকেটে ০৯(নয়) পুরিয়া গাঁজা সহ সর্বমোট-৩৩ পুরিয়া গাঁজা, যাহার সর্বমোট ওজন অনুমান-২০০ গ্রাম, মূল্য অনুমান-(৩৩×১০০)=৩৩০০/-টাকা আসামীদের নিজ হাতে বাহির করিয়া দেওয়া মতে উদ্ধার পূর্বক জব্দ করেন। ৩নং আসামী বেলাল আহমদ (৩০) এর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ময়নুল এন্ড আরিয়ান রেষ্টুরেন্টের ভিতরে বসিয়া তাহার সহযোগীতায় মাদক (গাঁজা) বিক্রয় করিয়া আসিতেছে। আসামীদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুরমা থানার মামলা নং-২২, তারিখ-২২/০১/২০২১খ্রিঃ ধারা- ২০১৮ইং সনের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ৩৬(১) এর টেবিল ১৯ (ক)/৪১ রুজু করা হয়।
এর আগে দক্ষিণ সুরমার লাউয়াইস্থ বঙ্গবীর রোড থেকে ইয়াবা ব্যবসায়ী সালাম হোসেন ওরফে শাহ আলমকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ২৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে একইদিন হুমায়ুন রশিদ চত্বর হইতে রেল স্টেশন গামী লিংক রোডস্থ সোহাগ স্টোরের ভিতরে ররাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১২০ পুরিয়া গাঁজাসহ শামীম মিয়াকে আটক করে পুলিশ।
এছাড়া অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার দায়ে রবিবার রাত ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ভার্থখলাস্থ হানিফ আবাসিক হোটেলে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। ২ জন নারী-পুরুষকে আটক করা হয়।
অপরদিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ সুরমার তিতাস আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে ৫ তরুণীসহ ১৪জনকে আটক করেছে মহানগর পুলিশ।
ওইদিন পৃথক অভিযানে আরও ৫জনকে গ্রেফতার করা হয়।