আজ রবিবার, ১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি, দুপুর ১২:০৬

প্রকল্পের সময় ও খরচ বাড়লে ব্যবস্থা: প্রধানমন্ত্রী

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২১, ০৮:৪৬ অপরাহ্ণ
প্রকল্পের সময় ও খরচ বাড়লে ব্যবস্থা: প্রধানমন্ত্রী

যাদের কারণে প্রকল্পে সময় খরচ বাড়বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি আজ বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এমন মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের ডিজাইন প্রণয়নে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতেও বলেছেন।

একনেক বৈঠকে তিনি আরও বলেন-‘যাদের গাফিলতির কারণে প্রকল্পের সময় ও অর্থ বাড়ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি না হয় সেই বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।’

বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় অংশ নেন।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনীতে অনুমোদন দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী সময় ও ব্যয় বাড়ার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করতে বলেন। তিন হাজার ৯২৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকার প্রকল্পটিতে আরও দুই হাজার ৫৩০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা খরচ বাড়িয়ে ছয় হাজার ৪৫৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুনে যেখানে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল, তা এখন ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। জানা গেছে, প্রকল্পের ডিজাইন ত্রুটির কারণেই ৬৫ শতাংশ খরচ বেড়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানিয়েছেন, এ প্রকল্পের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিলেও এটি মূলত তিনি ওভারঅল সব প্রকল্পের ক্ষেত্রে বলেছেন।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্প গ্রহণের পর দেখা যায় দুই-একটি আইটেম বেড়ে যায়। আবার মূল্য বেড়ে যায়। এতে প্রশ্ন তৈরি হয় যে প্রকল্প প্রণয়নের সময় কি তাহলে সঠিকভাবে হয়নি? প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে করা হয়নি? দেখা গেছে দাম বেড়েছে, অনেকগুলো আইটেম নতুন যুক্ত হয়েছে। যেটা মূল প্রকল্পের ডিজাইনে ছিল না। তাহলে প্রশ্ন হলো, যারা ডিজাইন করেছে সেখানেই সমস্যা হয়েছে।’

আরও পড়ুন:  ছাত্রজনতার প্রতিরোধে পালালো আনসার

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘কাদের গাফিলতির কারণে প্রকল্পের ডিজাইন সঠিক হলো না, সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হলো, প্রধানমন্ত্রী ওইসব ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে বলেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ বিধান যেটা আছে তা নিতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে না হয় সেটা দেখতে বলেছেন। আমাদের অধিকতর সতর্ক হতে বলেছেন।’

এ ধরনের অসম্পূর্ণ প্রকল্প গ্রহণে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায় রয়েছে স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, ‘কাদের দায়ে এই অবস্থা হয়েছে, কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।’

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে ব্রিজ নির্মাণে সাইট সিলেকশনে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেছেন। অহেতুক বা কাউকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য করা যাবে না। জনগণের প্রয়োজনে ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ করতে হবে। কোনও চলমান নদীর প্রবাহ যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেটা দেখতে হবে।

অধিক সংখ্যক ঠিকাদার যাতে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, প্রধানমন্ত্রী তা দেখতে বলেছেন উল্লেখ করে এম এ মান্নান বলেন, ‘ভালো ঠিকাদার ভালো কাজ করে। তাদের পুঁজি ও দক্ষতা রয়েছে। কিন্তু এর বাইরে নতুন যারা আসতে চায়, তাদেরও সুযোগ দিতে হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী আইনের মধ্যে থেকে কোনও কাজে অধিক সংখ্যক ঠিকাদার যাতে অংশগ্রহণের সুযোগ পায় তা দেখতে বলেছেন।’

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে একটি মাস্টারপ্ল্যান করতে বলেছেন। কোন নদীতে কোন জায়গায় ব্রিজ হবে তার একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে রাখতে বলেছেন। অন দ্য স্পট সিদ্ধান্ত না নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

প্রকল্প পরিচালক (পিডি) নিয়োগে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্পে পিডি নিয়োগ প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রকল্প চলমান থাকে কোনও এক প্রান্তে, কিন্তু পিডি ঢাকায় পড়ে থাকেন। একই ব্যক্তিকে একাধিক প্রকল্পে নিয়োগ দেওয়া হয়। এটা যেন না হয় প্রধানমন্ত্রী সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। এজন্য তিনি আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।’

আরও পড়ুন:  দেশে একদিনে আরও ৮৮ জনের মৃত্যু

প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা দিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, ‘প্রকল্প গ্রহণের সময় স্টাডি না করে কেবল সার্ভের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়। এ কারণে সময় ও ব্যয় বেড়ে গেছে। ডিজাইন পরিবর্তনের কারণে প্রায় ৬৫ শতাংশ ব্যয় বেড়ে গেছে। প্রকল্প নেওয়ার সময় যদি সবকটি ব্রিজের কেস স্টাডি করে নেওয়া হতো তাহলে এই সংশোধনের প্রয়োজন হতো না। যেটা বৈঠকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও নোটিশ করেছেন। এ কারণে তিনি ভবিষ্যতে ব্রিজ, রাস্তার মতো প্রকল্পে স্টাডি ছাড়া প্রকল্প গ্রহণ না করার নির্দেশনা দিয়েছেন।’

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১