আজ শুক্রবার, ২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি, সকাল ৭:২৪

ছাতকে পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলা: হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন সেলিম উদ্দিন

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত জানুয়ারি ৩১, ২০২১, ০৮:২৬ অপরাহ্ণ
ছাতকে পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলা: হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন সেলিম উদ্দিন

সেলিম উদ্দিন (৩০)। পেশায় শ্রমজীবী একজন যুবক। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার উপর হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষরা।

মারাত্মকভাবে তাকে আহত করা হয়েছে। ভেঙে দেয়া হয়েছে তার দু্’টি পা।

বর্তমানে গুরুতর আহত সেলিম উদ্দিন সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিনি ছাতক উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের শ্রীকৃঞ্চপুর সুতারখালী গ্রামের মনির মিয়ার ছেলে।

জানা যায়, আহত সেলিম উদ্দিনের পা-ই শুধু ভাঙে নি তারা। শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেদম পিটিয়েছে হামলাকারীরা। অর্থের অভাবে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে না পারায় দুই সপ্তাহ ধরে হাসপাতালের বেডে সীমাহীন যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে।

জানা যায়, উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের শ্রীকৃঞ্চপুর সুতার খালী গ্রামের মনির মিয়ার ছেলে সেলিম উদ্দিন পেশায় একজন শ্রমিক। পানি সেচের মেশিন, হাল-চাষের মেশিন মেরামতসহ বিভিন্ন ধরণের শ্রমিকের কাজ করে পরিবার চালিয়ে আসছিল সে।
২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর তার ছোট বোন সুমি আক্তারের বিয়ে হয় বিশ্বনাথের দৌলতপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মৃত আবরু মিয়ার ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী উস্তার আলী ওরফে আবদুল লতিফের কাছে। বিয়ের কিছুদিন পর স্ত্রী সুমিকে তার পিত্রালয়ে রেখে তিনি প্রবাসে চলে যান। এদিকে প্রবাসীর স্ত্রী সুমিকে বিভিন্ন সময়ে উত্যক্ত করে আসছিল শ্রীকৃঞ্চপুর গ্রামের ওয়ারিছ আলীর ছেলে গিলমান। এতে প্রতিবাদ করে সুমি ও তার পরিবার।
তাতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ওই উত্যক্তকারী। এক পর্যায়ে সুমিকে অপহরণের হুমকি দেয় সে। ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল রাতে পরিবারের সাথে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সুমি। পরদিন সকালে পরিবারের লোকজন তার শয়ন কক্ষের দরজা খোলা পায়। কিন্তু ঘরে নেই সে।
তার সন্ধান না পেয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে উত্যক্তকারী গ্রামের ওয়ারিছ আলীর ছেলে গিলমান, তার সহোদর রানু মিয়া, হবিবুর ওরফে হবি রহমানের ছেলে সালেহ ওরফে সালেহ মিয়া ও হুসমত আলীর ছেলে সাবাজ আলীকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রেক্ষিতে গিলমান ১মাস ২৫দিন কারাভোগ করে জামিনে বেরিয়ে আসে। বর্তমানে মামলাটি আদালতে চলমান আছে। গিলমানকে জেলে পাঠানো ও গিলমানের ফুফুতো ভাই সালেহ ওরফে সালেককে মামলার আসামী করায় সুমির ভাই সেলিমের উপর তাদের বিরোধের সৃষ্টি হয়। বোনের অপহরণ মামলার জেরে ভাইয়ের উপর চালানো হয় দু’দফা হামলা।

আরও পড়ুন:  সুনামগঞ্জে চিনি ছিনতাই মামলায় ছাত্রলীগ নেতা আটক

আহত সেলিম ও তার মা মায়ারুন নেছার সাথে আলাপ করে জানা যায়, পূর্ব বিরোধের জের ধরে গেল বছরের ২৫ ডিসেম্বর বিকেলে সুতারখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফয়জুলের দোকানের সামনে সেলিমের উপর হামলা চালায় ফয়জুল, সালেহ আহমদরা। ধারালো অস্ত্রের আঘাঁতে তার শরিরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত-বিক্ষত হলে গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

হাসপাতালে সে ১৭দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে। এদিকে, গেল ১৮ জানুয়ারী সকাল ৯টার দিকে বাড়ি থেকে পায়ে হেটে জাহিদপুর পুলিশ তদন্ত কন্দ্রে যাওয়ার পথে নরসিংপুর গ্রামে পৌঁছলে সিএনজি অটো-রিকশা যোগে সংঘবদ্ধরা তার পথগতিরোধ করে হামলার চেষ্টা করে। এসময় সে আত্মরক্ষার্থে গ্রামের জনৈক শুকুর আলীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। কিন্তু ধাওয়াকারীরা তার পিছু ছাড়েনি। তাকে ওই বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে পিটিয়ে দু’টি পাঁ ভেঙ্গে দিয়ে যুগলনগর গ্রাম সংলগ্ন রাস্তায় ফেলে যায়।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ওইদিন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পূর্বের হামলার আঘাঁত শুকানোর আগেই ২৪ দিনের ব্যবধানে সেলিমের উপর অতর্কিত ভাবে হামলা করা হয় দুইবার। কোন ইস্যু ছাড়াই একজন নিরপরাধিকে একাধিকবার প্রাণে মারার চেষ্টা। পৃথক দু’টি ঘটনায় আহতের পিতা মনির মিয়া বাদী হয়ে গ্রামের মছব্বির আলীর ছেলে ফয়জুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে ১৪জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় মামলা (নং-২৪. তাং-২০.০১.২০২১ইং) দায়ের করেন। এ মামলার অন্যান্য আসামীরা হলো, মৃত মখদ্দুছ আলীর ছেলে আছাব আলী, মৃত হুশিয়ার আলীর ছেলে আশিক মিয়া ও হবি রহমানের ছেলে সালেহ আহমদ।

হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে কোন সফলতা পাচ্ছে না ওই পরিবারটি। মামলা দায়েরের পর এ পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি। আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ পরিবারের। আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় মামলা নিয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিন কাটছে বাদীর।

আরও পড়ুন:  সাঈদীর জন্য শোক, ১৫ ছাত্রলীগ নেতাকে অব্যাহতি

এ ব্যাপারে ছাতক থানাধীন জাহিদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই পলাশ চন্দ্র দাশ মামলার দায়েরের সত্যতা স্বীকার করেছেন। ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) শেখ নাজিম উদ্দিন জানান, পৃথক দু’টি ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১