আজ সোমবার, ১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি, রাত ৯:৪০

সিলেটে দিনব্যাপী উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন, দুই মন্ত্রীকে মেয়রের ৮ প্রস্তাব

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত জানুয়ারি ২৯, ২০২১, ০৯:১৪ অপরাহ্ণ
সিলেটে দিনব্যাপী উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন, দুই মন্ত্রীকে মেয়রের ৮ প্রস্তাব

আজ শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) দিনব্যাপী সিলেট নগরীতে নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড উদ্বোধন করেছেন দুই মন্ত্রী।

শুক্রবার দুপুরে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) এলাকায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি উন্নয়ন প্রকল্পও উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি।এসময় তাঁদের সাথে ছিলেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

সিসিক কর্তৃপক্ষ জানায়, সিলেট নগরীর ‘চৌহাট্টা হতে বন্দরবাজার সড়ক সম্প্রসারণ, রোড ডিভাইডার, ফুটপাত নির্মাণ ও সড়কবাতি স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। আগামী ৩০ মার্চ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার তারিখ নির্ধারিত রয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় ৮৬০ মিটার সড়ক এসফল্ট দ্বারা উন্নয়ন, সড়কের উভয় পাশে ফুটপাতসহ ১৬৮ মিটার ড্রেন নির্মাণ, সৌন্দর্যবর্ধন কাঠামোসহ ১০৬০ মিটার রোড ডিভাইডার স্থাপন, ৬২টি সড়কবাতি ও ৩০টি বৈদ্যুতিক পোল স্থাপন করা হচ্ছে।

আজ প্রকল্পের উদ্বোধনকালে অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন আহমদ, সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও খাদিমপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান এডভোকেট আফসর আহমদ, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ ও বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের উন্নয়নকাজও পরিদর্শন করেন দুই মন্ত্রী।

 

এদিকে সিলেটের উন্নয়নে, শৃঙ্খলাপূর্ণ নগরী গড়তে দুই মন্ত্রীর সামনে ৮টি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সিলেটের উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভা ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রা’য় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপিকে কাছে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন তিনি।

আরও পড়ুন:  শখ আর ভালবাসা থেকে 'শিশির' এখন পাখি খামারি

আজ শুক্রবার বিকালে নগরীর দরগাহ গেইটস্থ একটি অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী প্রধান অতিথি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশেষ অতিথি ছিলেন।

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নিজের বক্তব্যে ৮টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগণের বসার জন্য স্থায়ী কার্যালয় নেই। ভাড়া জায়গায় কার্যালয় চালাতে হচ্ছে। ২৭টি ওয়ার্ডের ৩৬ জন কাউন্সিলরের জন্য স্থায়ী কার্যালয় হলে ওয়ার্ডবাসীর সেবাপ্রাপ্তি সহজ হবে।

মেয়র বলেন, সিলেট নগরীতে খেলার মাঠ নেই। তিনটি খেলার মাঠের জন্য আমরা প্রকল্প প্রস্তাবনা দিয়েছি।

আরিফ বলেন, সিলেট নগরীর পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণে আমরা ৪টি গরুর হাট করতে চাই। এর ফলে সিসিকের আয় বাড়বে। তাছাড়া কোরবানির সময় প্রতি বছর রাস্তার মধ্যে গরুর হাট বসানো হয়, এ থেকে সরকার রাজস্বও পায় না। স্থায়ী ৪টি হাট হলে এই সমস্যা মিটবে। এছাড়া সিলেট নগরীতে কোনো স্লটার হাউস (কসাইখানা) নেই। কয়েকটি স্লটার হাউস বসানো গেলে এ থেকেও আয় হবে।

সিসিক মেয়র নিজের প্রস্তাবনায় আরোও উল্লেখ করেন, সিলেট নগরীতে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। রাস্তাঘাটে গাড়ি পার্কিং করা হয়। এতে যানজট হয়, ভোগান্তি পোহায় মানুষ। যদি নগরীর ৫-৬টি জায়গায় জমি অধিগ্রহণ করে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে এই ভোগান্তি কমবে, শহর সুন্দর হবে, সিসিকের আয় বাড়বে।

আরিফ বলেন, একদিকে সিলেট পর্যটন নগরী, অন্যদিকে আধ্যাত্মিক নগরী। প্রতি বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেট শহরে শত শত বাস এসে প্রবেশ করে। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত, কোনো কোনো সময় রবি-সোমবার পর্যন্তও শহরে বাইরে থেকে আগত প্রচুর মানুষ থাকেন। বাইরে থেকে আসা এসব মানুষদের জন্য আমরা একটি বিশেষ ব্যবস্থা করতে চাই। একটি জায়গা নিয়ে সেখানে বিশ্রামের ব্যবস্থা, রান্নাবান্নার ব্যবস্থা করতে চাই। যেখানে বাসগুলোও সারিবদ্ধভাবে থাকবে এবং সেই স্থান থেকে অটোরিকশা বা ছোট আকারের যানবাহন দিয়ে মানুষ শহর ঘুরে দেখবে।

আরও পড়ুন:  ফুলপরীকে নির্যাতন: ছাত্রলীগের সানজিদাসহ বহিষ্কার ৫

দুই মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে সিসিক মেয়র তাঁর প্রস্তাবনায় বলেন, সিলেটে যানজটের মূল কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ন। নগরীর কালিঘাটে পাইকারি বাজার। এখানে প্রতিনিয়ত ট্রাকের আসা-যাওয়া। ফলে সার্কিটের হাউসের সামনেও যানজট থাকে, নদীর পাড়ে ট্রাক রাখা হয়। সোবহানীঘাটে পাইকারি সবজিবাজার থাকায় সেখানে দুই দিকে ট্রাক থাকে। দক্ষিণ সুরমায় ফলের আড়তের কারণে সমস্যা হয়। আমরা পারাইরচকে ট্রাক টার্মিনাল যেখানে করেছি, সেখানে ২০ একর জায়গায় সিলেটের সব পাইকারি বাজারকে যদি স্থানান্তর করতে পারি, তবে পণ্যবাহী ট্রাক এসে শহরে প্রবেশ করবে না, যানজটও থাকবে না।

সিসিকের সকল ওয়ার্ডে স্কুল নেই। এজন্য পর্যাপ্ত স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন সিসিক মেয়র।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন আহমদ, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান, সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী, ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ, এসএমপি কমিশনার নিশারুল আরিফ, সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ, মহানগর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১