সিলেটে সাংবাদিকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে অপপ্রচার করছেন ছাত্রদল নেতা। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে বালাগঞ্জ উপজেলায়। ওই ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করায় সাংবাদিককে ধমকি দিচ্ছে বলেও জানা গেছে।
ছাত্রদল নামধারী হ্যাকারের অব্যাহত হুমকি ধমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন স্থানীয় অনলাইন নিউজপোর্টাল আজকের সিলেট ডটকম এর স্টাফ ফটো সাংবাদিক ফাহিম আহমদ চৌধুরী। হ্যাকারের হুমকি ধমকির কারনে তিনি রীতিমত বাড়ি ছাড়া রয়েছেন।
জানা যায়, গত ৬ ডিসেম্বর তার নিজের নামের এইডিটি হ্যাক করে স্থানীয় এক হ্যাকার। এর প্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর তিনজনের নাম উল্লেখ করে বেশ কিছু ডকুমেন্টসহ বালাগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগটি জিডি আকারে গ্রহন করে বালাগঞ্জ থানা পুলিশ। জিডি নং ২৫৫। এরপর এটি অধিকতর তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি নেয়া হয়। বিষয়টি বর্তমানে তদন্তাধীন আছে।
জিডি সূত্রে জানা যায়, গত ০৬ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা থেকে তার Shøpnil Fahim Chøwdhury নামের ফেইসবুক আইডি যার ইউআরএল https://web.facebook.com/fahimChy420 আইডিটি হ্যাকড হয়ে যায়। এর পর আমার আইডি থেকে কিছু আনাকাংখিত ও ভিত্তহীন পোস্ট করতে থাকে এমনকি আমার পরিচিত অনেকের ইনবক্সে অশোভনীয় ম্যাসেজ করতে থাকে। বিষয়টি তার দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর আইডিটি রিকভারী করার চেষ্টা করেন, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। রিকভারী করতে গিয়ে তার আইডিতে রিকভারী অপশনে তিনটি মোবাইল নাম্বার যুক্ত করা দেখতে পান। নাম্বারসমূহ হলো ০১৮৪৯২৪২০০৮, ০১৭৭২৭০৩৫৬৪, ০১৩১৬২১৯৩৮৩। এর মধ্যে ০১৭৭২৭০৩৫৬৪ টি বালাগঞ্জ উপজেলার বাণিগাঁও গ্রামের সিরাজ মিয়ার পুত্র ইমরান আহমদের এবং ০১৩১৬২১৯৩৮৩ টি একই গ্রামের তোফায়েলের। এর পর তিনি তাদের দুজনের সাথে যোগাযোগ করে আইডি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
কিন্তু তারা জানান আইডিটি তারা হ্যাক করেননি, তাদের ফোন নাম্বার ব্যবহার করে একই উপজেলার সোনাপুর গ্রামের মজম্মিল আলীর পুত্র ছাত্রদল নেতা আতাউর রহমান কাওছার হ্যাক করেছে। তাই তিনি যেন কাওছারের সাথে যোগাযোগ করেন।
তাদের কথামত তিনি একাধিকবার কাওছারের সাথে যোগাযোগ করলে সে আইডিটি ফিরিয়ে দিতে তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবী করেন। টাকা না দিলে আইডি ফিরিয়ে না দিয়ে এই আইডি থেকে রাষ্ট্রবিরোধী পোষ্ট দিবে বলে তাকে শাসিয়ে দেয়।
ভুুক্তভোগী সাংবাদিক ফাহিম আহমদ চৌধুরী জানান, জিডি করার পর থেকে আমাকে অব্যাহতভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে, আমার পরিবারকেও বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
স্থানীয় সচেতন মহল দাবী করেছেন, তাকে দ্রæততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নেয়া হউক। না হলে এই এলাকায় বড় ধবনের সাম্প্রদায়ীক দাঙ্গাও সৃষ্টি হতে পারে।
প্রসঙ্গত, আতাউর রহমান কাওছার ওরফে এআর কাওছার বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ স্কুল ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সে ওসমানীনগর উপজেলার বুরুঙ্গা ইউনিয়নের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছে এবং স্থানীয় ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতার সেল্টার তার সাথে আছে বলেও মাঝে মধ্যে প্রচার করে। কাওছার এর আগেও একাধিক ব্যক্তির আইডি হ্যাকড করে স্থানীয়ভাবে মানুষের চরিত্র হনন করার চেষ্টা করেছে। এমনকি সাম্প্রদায়ীক দাঙ্গা সৃষ্টিরও চেষ্টা করেছে।