
গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি:: তারা চারজন। এসেছে পর্যটক বেশে। ক্যামেরা, মোবাইল ছিনিয়ে নেয়াই ছিল তাদের ৪ জনের মূল টার্গেট। ছবি তোলার জন্য ফটোগ্রাফার হিসেবে বেছে নেয় নিহত এই কিশোর কে।
সুযোগ বুঝে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করে তাকে। খুন করে ট্রাকে করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের খাঁচায় আটক হয় তারা।
রবিবার সন্ধ্যায় ট্রাকে করে পালিয়ে যাওয়ার সময় জাফলংয়ের গুচ্ছগ্রাম এলাকায় পুলিশি চেক পোষ্টে তাদের আটক করে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হল- ঘটনায় জড়িত সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার ধরমপুর গ্রামের সৈয়দ নুরের ছেলে এহসান (২২) একই গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে খসরু মিয়া (১৮) ও ট্রাক চালক বিয়ানীবাজার উপজেলার নওয়াগাওঁ এর নুর মিয়ার ছেলে রায়হান এবং একই গ্রামের আলী নুরের ছেলে ট্রাকের হেলপার অলিউর রহমান।
জানা গেছে, প্রতিদিনের ন্যায় রোববার (৬ ডিসেম্বর) সকালে পর্যটকদের ছবি তুলতে জাফলং জিরো পয়েন্ট এলাকায় যায় ফটোগ্রাফার উজ্জল। দুপুর ২টার দিকে পর্যটক বেশে আসা দুই যুবক ছবি উঠবে বলে জিরো পয়েন্ট এলাকায় নিয়ে যেতে উজ্জলের সাথে চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ি ছবি উঠানোর কথা বলে তারা উজ্জলকে নিয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে মায়াবি ঝর্ণার দিকে যায়। এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে পর্যটক বেশে থাকা ওই দুই যুবক পিছন দিক থেকে উজ্জলকে এলাপাতাড়ি ভাবে ছুরিকাঘাত করে ক্যামেরা ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার খবর পেয়ে একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন গোয়াইনঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম ও থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল আহাদ । এরপর জাফলং্যের প্রতিটি প্রবেশ ও বহির্গমণ পথে পুলিশি নজরদারি ও যাত্রীবাহী গাড়ীতে চেকপোস্ট বসানো হয়। পাশাপাশি জৈন্তাপুর উপজেলার জৈন্তাপুর বাজার,দরবস্ত বাজার,সারীঘাট,হরিপুর ও শাহপরান বাইপাস মহাসড়কে থানা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ যৌথভাবে চেকপোস্ট শুরু করে।
রবিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে জাফলং এর গুচ্ছ গ্রাম এলাকা দিয়ে একটি ট্রাক অতিক্রমের সময় পুলিশ সিগন্যাল দিলে পালিয়ে যায়। গুচ্ছ গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় থাকা অপর একটি পুলিশের চেকপোস্ট গাড়ি গতিরোধ করে ট্রাকটি আটক করা হয়। এসময় ট্রাকের মধ্যে থাকা ঘটনার সাথে জড়িত দুই যুবককে আটক করা হয়। গাড়িতে উঠার আগে ওই দুই যুবক তাদের পোশাক পরিবর্তন করে এবং একটি ব্যাগের মধ্যে তা রক্ষিত করে রাখে। কিন্তু তাদের ব্যবহৃত ব্যাগ থেকে নিহত ওই কিশোরের মোবাইল, ক্যমেরা এবং তাদের ওঠানো সকল ছবি পাওয়া যায়। পুলিশ এসময় ট্রাক চালক ও হেলপারেকেও আটক করে।
এ ব্যপারে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল আহাদ বলেন, পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ে কিশোর ফটোগ্রাফার উজ্জল হত্যায় জড়িত দুই যুবক ও ট্রাক চালক এবং হেলপারকে আটক করা করা হয়েছে।