
সিলেটের বার্তা ডেস্ক:: সিলেটের কানাইঘাটে আপন ভাই-ভাতিজার হাতে নজরুল ইসলাম নজু (৫০) নামের এক বৃদ্ধ খুন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিহত নজু কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের এরালীগুল গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে।
গতকাল শুক্রবার রাত ১২টার দিকে লোহাজুরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার দায়ে নিহতের ভাইসহ ৩ জনকে আটক করেছে কানাইঘাট থানা পুলিশ।
অভিযোগে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও পাওনা টাকা নিয়ে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। নিহত নজরুল ইসলাম নজুর ছেলে ও হত্যা মামলার বাদি দেলোয়ার হোসেন (২৬) জানান, জমিজমা ও পাওনা টাকা নিয়ে তার পিতার সাথে আপন চাচা নুরুল ইসলাম (৬০) ও চাচাতো ভাই আলা উদ্দিনের (২৪) বিরোধ চলে আসছিল।শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় লোহাজুরী মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে নজরুল ইসলাম নজু তার ভাতিজা আলা উদ্দিনের কাছে পাওনা ১০ হাজার টাকা চাইলে আলা উদ্দিন চাচা নজরুল ইসলাম নজুকে তার বাড়ী মিকিরপাড়া গ্রামে যেতে বলে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে নজরুল ইসলাম নজু ভাতিজা আলা উদ্দিনের বাড়ীতে টাকা আনার জন্য গেলে সেখানে তাকে আটক করে রাখা হয়।
একপর্যায়ে আপন বড় ভাই নুরুল ইসলাম, ভাতিজা আলা উদ্দিন ও ভাড়াটিয়া কয়েকজন লোক ধারালো অস্ত্র নিয়ে উপর্যুপরি নজরুল ইসলাম নজুর দুই পায়ে একাধিক কোপসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম করে লোহাজুরী-মিকিরপাড়া রাস্তার কুটন মিয়ার বাড়ির পাশে মৃত ভেবে ফেলে যায়। গুরুত্বর আহত নজরুল ইসলামের আর্তচিৎকারে আশপাশ এলাকার লোক ও পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
এ হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষাণিক থানা পুলিশ এলাকায় ছুটে গিয়ে রাতভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নিহতের ভাই নুরুল ইসলাম ও মিকিরপাড়া গ্রামের মৃত আলাউর রহমানের ছেলে এলাকার চিহ্নিত অপরাধী সেলিম উদ্দিন (৩৫) ও তার ভাই শাহীন আহমদকে (৩২) আটক করে।
শনিবার হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কানাইঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল করিম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দোহা পিপিএম। তারা নজরুল ইসলাম হত্যার সাথে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলে নিহতের পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেন। এ ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে দেলোয়ার হুসেন বাদী হয়ে শনিবার ১৪জনের নাম উল্লেখ করে কানাইঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুদ্দোহা পিপিএম জানান জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নজরুল ইসলামকে হত্যা করা হতে পারে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছেন এবং ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে এবং হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।