আজ সোমবার, ২৪শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি, সকাল ৮:৫১

ভারতে পালিয়ে গেছেন এসআই আকবর: দাবি পিবিআই’র

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত নভেম্বর ১, ২০২০, ১১:৪৪ অপরাহ্ণ
ভারতে পালিয়ে গেছেন এসআই আকবর: দাবি পিবিআই’র

সিলেটের বার্তা ডেস্ক:: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান হত্যাকান্ডের প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া।

এমনটাই দাবি করছে পিবিআই।

আকবরের সঙ্গে তার আত্মীয় পরিচয়দানকারী স্থানীয় সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমানও ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। তাদের সহায়তা করে হেলাল আহমদ নামে এক চোরাকারবারি। এমনটাই দাবি মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার।

সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘আকবরকে ধরার জন্য সম্ভাব্য সব জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। আকবরের সহযোগী নোমানের সঙ্গে আকবর থাকতে পারে এমন খবরের ভিত্তিতে নোমানের কোম্পানীগঞ্জের গ্রামের বাড়ি এবং তার শ্বশুর বাড়ি নারায়ণগঞ্জেও তল্লাশি চালানো হয়। নোমানের স্ত্রী, মা ও বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদে নোমানের উপস্থিতি জানা যায়নি। তবে আকবর নোমানের মাধ্যমেই ১৪ অক্টোবর ভোরে সিলেট ত্যাগ করেছে এমনটা নিশ্চিত করে বলা যায়। তাকে দেশত্যাগে সহায়তা করেছে বলে অভিযোগের ভিত্তিতে চোরাকারবারি হেলালকে রিমান্ডে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু সে স্বীকার করেনি। হেলালকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।’

এদিকে, হেলালের মাধ্যমে আকবর ও নোমান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও এমন তথ্য রয়েছে। চোরাকারবারি হেলালকে ২২ অক্টোবর একটি মামলায় গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পিবিআইয়ের মামলায় হেলাল ও নোমানকে আসামি করা হতে পারে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা আভাস দিয়েছেন।

১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদের মৃত্যুর পর পুলিশের সোর্স ও স্থানীয় সংবাদকর্মী নোমান গণমাধ্যমে সংবাদ পরিবেশন করে ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে তার মৃত্যু হয়। পরে রায়হানের নিকট আত্মীয়স্বজনের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যু হয়। ১১ অক্টোবর রাতে রায়হানের স্ত্রী কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে ১২ অক্টোবর বিকেলে তিনি এসএমপির তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হওয়ার পরই আকবরসহ ৪ জনকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিনজনকে প্রত্যাহার করার হয়। সাতজনের মধ্যে ছয়জন পুলিশ লাইন্সে রিপোর্ট করলেও আকবর রিপোর্ট করেনি। ওইদিন রাত থেকে আকবরকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাকে খুঁজে বের করার জন্য পুলিশ, র‍্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সিলেট এবং তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলসহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ব্যর্থ হয়।

আরও পড়ুন:  আজ বিদ্যুৎ থাকবে না সিলেটের ২৩টি এলাকায়

আকবর পালিয়ে যাওয়ার আগে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সিসিটিভির হার্ডডিস্কও পরিবর্তন করেন। ফাঁড়ির টুআইসি এসআই হাসান উদ্দিন ও সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের বাসিন্দা সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমানের সহযোগিতায় ওই কাজটি করেন তিনি। এ ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

আকবরকে পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কয়েকজন কর্মকর্তার গাফিলতির বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তর গঠিত তদন্ত কমিটি প্রমাণ পায়। ২৭ অক্টোবর প্রতিবেদনও দাখিল করা হয়েছে। পাশাপাশি আকবরের অবস্থান নিশ্চিতে কাজ শুরু করে পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। এসআই আকবর যে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই।

একটি সূত্র জানায়, সিলেট থেকে নোমান আকবরকে নিয়ে কোম্পানীগঞ্জের র উপজেলার বরমসিদ্ধিপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল করিমের ছেলে চোরাকারবারি হেলাল আহমদের বাড়ি যান। হেলাল নোমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে হেলাল তাকে সহযোগিতা করেন। হেলাল ভারতের বড়পুঞ্জি বাজার এলাকার আরাকান নামে এক খাসিয়া মেয়েকে বিয়ে করেন। সেই সুবাদে ভারতে তার অবাধ যাতায়াত ছিল। সিলেট থেকে পালিয়ে কোম্পানীগঞ্জের কালীবাড়ি গ্রামে প্রথমদিন আকবর ও নোমান অবস্থান করেন। পরদিন মোটরসাইকেলে হেলালের বাড়িতে গিয়ে রাতযাপন করেন তারা। ওইদিন সকালে সীমান্তের ১২৫৫ নম্বর পিলার এলাকা দিয়ে পালিয়ে যান আকবর ও নোমান। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর হেলালকে ২২ অক্টোবর দুপুরে গ্রেপ্তার করে পুলিশের একটি বিশেষ দল।

রায়হান হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। এরা হলেন- বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আশেক ই এলাহি, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদ। টিটু ও হারুনকে দু’দফায় আটদিন রিমান্ডে নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এএসআই আশেক পাঁচদিনের রিমান্ডে আছেন। ৩ নভেম্বর রিমান্ড শেষ হবে। এর আগে ওই ফাঁড়ি তিন কনস্টেবল আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তার ভিত্তিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম আসামিদের অন্তর্ভুক্ত করছেন।

আরও পড়ুন:  ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ বাতিল, আসছে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’

অন্যদিকে, ছিনতাইয়ের অভিযোগকারী গোপালগঞ্জের বাসিন্দা শেখ শহিদুরকে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে।

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১