
সিলেটের বার্তা ডেস্ক:: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া বিজয়ী হয়েছেন।
শনিবার ভোটগ্রহণ শেষে বিকেলে বেসরকারি ফলাফল অনুসারে তিনি ৬১৫৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।
এদিকে ভোট কারচুপি ও জাল ভোটের অভিযোগ এনে প্রতিদ্বন্দ্বি দুই মেয়র প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন।
শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে চারটায় স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মীদের নিকট ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন তাঁরা। দুই প্রার্থী হলেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী রাজু আহমদ (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হুসাইন (জগ)। এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে সন্ধ্যায় ১১ কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া নৌকা প্রতীকে ৬১৫৬ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। নির্বাচনে তার প্রতিদন্ধী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন সেলিম জগ প্রতীকে ভোট পান ৩৮৮১ ধানের শীষ প্রতীকে রাজু আহমেদ পান ১০৩৯ ভোট মোবাইলফোন প্রতীকে ১০১৬ ভোট পান আবিবুল বারী আয়হান।
বিএনপির প্রার্থী রাজু আহমদ বলেন, সরকার দলের লোকজন আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। তাই এ নির্বাচন আমি বর্জন করেছি।
স্বতস্ত্র প্রার্থী আবুল হুসাইন সেলিম বলেন, আমার বিজয় সুনিশ্চিত জেনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলীয় প্রভাব বিস্তার করে ইকড়ছই, ভবানীপুর, আর্দশ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেরপুরের আব্দুর রশিদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যাল সহ কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে ব্যাপক জালভোটের মাধ্যমে কারচুপি করা হয়েছে।
এজন্য নির্বাচন বর্জন করেছি। তবে নির্বাচনে অপর দুই মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আবিবুল বারী আয়হান বলেন, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা তাদের ভোট প্রয়োগ করায় তাঁরা ভোটারদের নিকট কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
নির্বাচন সহকারী রির্টানিং অফিসার জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, আমাদের নিকট লিখিত অভিযোগ কোন প্রার্থী করেননি কারচুপির। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পৌর বাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৫ সালে সর্বশেষ জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে আব্দুল মনাফ মেয়র নির্বাচিত হন। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারী মেয়র আবদুল মনাফ মুত্যু বরণ করলে ফেব্রুয়ারি মাসে জগন্নাথপুর পৌরসভার উপ নির্বাচনসহ তফশিল ঘোষনা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৯ মার্চ ভোটগ্রহনের সিদ্ধান্ত হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারী মনোময়ন পত্র দাখিল ৮ মার্চ প্রত্যাহারের দিন ধার্য করা হলে চারজন প্রার্থী সর্বশেষ ভোটযুদ্ধে অংশ নেন ।
প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া (নৌকা) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী রাজু আহমেদ (ধানের শীষ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবুল হোসেন (জগ) বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আবিবুল বারী (মোবাইল ফোন) প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে প্রচারণায় নামেন। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতির পর ২১ মার্চ বৈশ্বিক মহামারী করেনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশনার পৌরসভার মেয়র পদে উপ নির্বাচন স্থগিত ঘোষনা করে। পরে ২১ সেপ্টেম্বর মেয়র পদে উপ নির্বাচন ঘোষণা করা হলে শনিবার (১০ অক্টোবর) ভোটে বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া বিজয়ী হন।