
সিলেটের বার্তা প্রতিবেদক:: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ইউএনও মৌসুমী মাহবুব এর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর থেকে সিলেটসহ সারাদেশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন।
ইতোমধ্যে সিলেটের জেলার গোয়াইনঘাটসহ বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের বাসভবনে আনসার বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছেন।
দিনাজপুরের ঘটনার শুনার পরে উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় রয়েছেন বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী মাহবুব। তিনি তার বাসভবনসহ উপজেলা প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংকালে তিনি এ দাবি জানান। এসময় তিনি ঘোড়াঘাট উপজেলার ইউএনও’র উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মাহবুব বলেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে নির্দিষ্ট দায়িত্বপূর্ণ এলাকার জলমহাল ও হাটবাজার ইজারা, বালু ও পাথর কোয়ারী লিজ, সরকারী সম্পত্তি রক্ষা, অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, পাবলিক পরীক্ষা, নির্বাচনসহ বহু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে দায়িত্ব পালন করতে হয় তাদের। বিধি মোতাবেক এসব কাজ করতে গেলে অনেকেই সংক্ষুব্ধ হয়। সারাদিন প্রশাসনিক এসব কাজের জন্য বেশিরভাগ সময়ই আমাদেরকে অরক্ষিত থাকতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে জনসেবায় নিয়োজিত থাকা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, একজন ইউএনও উপজেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কমিটির নেতৃত্বে থাকেন। আর সেই নেতৃত্বই যখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে তখন সাধারণ মানুষের সেবা করাটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।
ব্রিফিংয়ে ইউএনও মৌসুমী মাহবুব বলেন, ঘোড়াঘাট উপজেলার ইউএনও’র ওপর হামলার ঘটনা শুনার পর উদ্বিগ্ন রয়েছি। আমরা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেশের জন্য কাজ করি। এখন পর্যন্ত ইউএনও’র বাসায় ৪জন নিরস্ত্র আনসার নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছেন। তবে মাত্র কিছু সংখ্যক নিরস্ত্র আনসার সদস্য তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকায় তিনি উদ্বেগে রয়েছেন। এসময় তিনি উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার জন্য অন্তত ১০জন সশস্ত্র ব্যাটালিয়ন আনসার মোতায়েনের দাবি জানান।
এদিকে, বিয়ানীবাজার উপজেলা কমপ্লেক্সের জন্য দু’জন নৈশ্য প্রহরী নিয়োজিত থাকলেও ইউএনও’র বাসভবনের জন্য পৃথক কোন নিরাপত্তাকর্মী নেই। তাছাড়া শুক্রবার সকাল থেকে উপজেলা কমপ্লেক্সে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ৪জন নিরস্ত্র আনসার সদস্য মোতায়েন করা হরয়েছে। এতে ব্যক্তিগত ও পরিবার-পরিজনের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত ইউএনও মৌসুমী মাহবুব।
এ ব্যাপারে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মোঃ মাজহারুল ইসলাম জানান, ঘোড়াঘাটের ইউএনও’র ওপর হামলার ঘটনা খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক। বিয়ানীবাজারের ইউএনও অফিস ও সরকারি বাসার নিরাপত্তার জন্য ৪জন নিরস্ত্র আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই তারা যথারীতি দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জানান, ইতোমধ্যে আমি অফিসিয়ালি অস্ত্র গ্রহণ করেছি। রোববার সকাল থেকেই ইউএনও কার্যালয় ও অফিসের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ১০জন সশস্ত্র আনসার মোতায়েন করা হবে।
এদিকে
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ইউএনও’র উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে জকিগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমী আক্তার তার বাসভবনসহ উপজেলা প্রশাসনের নিরাপত্তার জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জকিগঞ্জে সদ্য যোগদানকারী এ কর্মকর্তা বলেন, জলমহাল ও হাটবাজার ইজারা, বালু ও পাথর কোয়ারী লিজ, সরকারী সম্পত্তি রক্ষা, উচ্ছেদ অভিযান, পাবলিক পরীক্ষা, নির্বাচনসহ বহু ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয় তাদের। বিধি মোতাবেক এসব কাজ করতে গেলে অনেকেই সংক্ষুব্ধ হয়। তিনি ইউএনওর জন্য একজন পৃথক গ্যানম্যান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) সহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার জন্য অন্তত ১০জন ব্যাটেলিয়ন আনসার নিয়োগে দাবি জানান।
জানা যায়, জকিগঞ্জে উপজেলা কমপ্লেক্সের জন্য ২জন নৈশ্য প্রহরী থাকলেও ইউএনওর বাসভবনের জন্য পৃথক কোন নিরাপত্তাকর্মী নেই। এদিকে শুক্রবার রাত থেকে জকিগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্সে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ৪জন আনসার ব্যাটেলিয়া সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে।