আজ রবিবার, ১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি, সকাল ১১:১১

সিলেটে মাজার দখল করতে মুক্তিযোদ্ধার ছাতার নিচে জামাত-শিবির!

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত আগস্ট ৩১, ২০২০, ০৪:২৩ অপরাহ্ণ
সিলেটে মাজার দখল করতে মুক্তিযোদ্ধার ছাতার নিচে জামাত-শিবির!

নিজামুল হক লিটন:: সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ৬নং লালাবাজার ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বেতসুন্দি (ফকিরেরগাঁও) ঢাকা সিলেট মহা সড়কের পাশে  অবস্থিত ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সফরসঈী ‘হজরত শাহ আব্দুর রহিম (র.) এর মাজার।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মাজারটি রক্ষণা-বেক্ষণ ও তদারকি করে আসছেন খাদেম মরহুম ফকির সুরুজ আলী গংরা। গ্রামবাসী মিলে পরিচালনা করে আসছেন পাকিস্তান আমল থেকে।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হবার সময় এই মাজারের খাদেম থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ফকির সুরুজ আলী।
সুরুজ আলীর পর মাজারে খাদেমের দায়িত্ব পালন করেন বর্তমান খাদেম আব্দুল শহিদ এর বাপ দাদা।
আব্দুল শহিদ এর বাপ দাদা ও তার বড় ভাই মনির আলীর মৃত্যুর পর আব্দুল শহিদ গংরা গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে মাজার পরিচালনা করছেন।

এমনকি তারা মাজারের নামে একটি হাফিজি মাদ্রাসার কাজও শুরু করেন। এতিম অসহায়দের ফ্রিতে পড়ালেখা ও দ্বীন শিখানোর জন্য।

যেহেতু প্রতিদিন ভক্ত-আশেকানরা হাজার হাজার টাকা মাজারে দান করে থাকেন।

হযরত শাহ আব্দুর রহিম (রহ.) এর নামে প্রতিষ্ঠান করার সেই স্বপ্ন আর পূর্ণ হল না  আব্দুল শহিদের। সেই স্বপ্নকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে একই এলাকার শহিদের বাবার চাচাতো ভাই (ফকিরেরগাঁও) এলাকার বির্তর্কিত একজন মুক্তিযুদ্ধা ও নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর সাথে সম্পৃক্ততা ও যোগসাজশ করেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধা।
জামায়াত-শিবিরের একটি চক্রের সাথে হাত মিলিয়ে ৩/৪ জনের একটি কমিটিও গঠন করেন।
এই কমিটির সভাপতি করা হয় ওয়ারিছ আলীকে এবং মাজারের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল ইসলাম (মাস্টার) ও বর্তমান কোষাধ্যক্ষ মশাহিদ আহমদ রনি, জামাতের এক সময়ের লালা বাজার ইউনিয়নের সূরা সদস্য।
বর্তমান খাদেম আব্দুল শহিদ সিলেটের বার্তাকে জানান, আমি এবং আমার পরিবারের চাচাতো ভাই ও গ্রামের কিছু অসহায় পরিবার নিয়ে শাহ আব্দুর রহিম মাজারের পরিস্কার করা এবং মাজারে বাতি জ্বালিয়ে আসছি।
আমি মাজারের নিয়ম কানুন মেনে কমিটির কাছে মাজারের টাকার হিসেব চাওয়াতে আমার উপর চলে একের পর এক হামলা ও মিথ্যা মামলা।
আমাকে মাজারের খেদমত করা থেকে বিরত রাখতে তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ব্যর্থ হয়।
বিতর্কিত সভাপতি ওয়ারিছ আলী ও জামাত শিবিরের চক্রের বিরুদ্ধে এলাকার একাধিক বাসিন্দা ও খাদেম পরিবারের আরেক অংশীদার মোহাম্মদ আলী ২০/১২/২০১৮ ইংরেজি তারিখে  উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এবং জেলা প্রশাসক বরাবর, ১০/১২/১৮ ইংরেজি তারিখে একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
ভুয়া কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় দক্ষিণ সুরমা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি খায়রুল ফজলকে।
তিনি এই অভিযোগ তদন্ত করতে দক্ষিণ সুরমা থানার সাবেক পুলিশ কমকর্তা সাবেক সেকেন্ড অফিসার রিপন দাসকে দায়িত্ব দেন।

আরও পড়ুন:  ইমরান খান ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি

রিপন  দাস সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে প্রতিষ্টালগ্ন খাদেম আব্দুল শহিদ গংরার পক্ষে একটি তদন্ত রিপোর্ট পাঠান।

পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসক  বরাবর, যাহার স্মারক নং-৭৭৮,,১৩/২/২০১৯ এ
সাবেক কমিটি মাজারের নামে দুই ব্যাংকে রেখে যাওয়া কয়েক কোটি টাকা। মেরে খাওয়ার জন্য প্রথমে শহিদকে হত্যা করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত নেয় দক্ষিণ সুরমা থানায় গত ১৮/৮/২০২০ ইংরেজি নিজেকে বাঁচাতে ওয়ারিছ আলী এলাকায় একটি মিটিংয়ের আয়োজন করেন শহিদ গংদের নিয়ে।
শহিদ ও তার ভাই ভাতিজা ওয়ারিছ আলীর বাড়িতে গেলে কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই ওয়ারিছ আলীর বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হয়ে বাড়িতে নিরবে চলে আসে শহিদের ভাই ভাতিজা।
তার পরও বিতর্কত সভাপতি ওয়ারিছ আলী তার দলবল নিয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মিথ্যা মামলা করেন। ওয়ারিছ আলীর ভাতিজা সমুজ আলী কে বাদী করে ১৮/৮/২০২০ তারিখে মামলার (নং ৫১)।
এই মামলায় অসহায় খাদেম শহিদ ও তার ভাতিজাকে আটক করে নিয়ে যায় র‌্যাব ৯ এর একটি বাহিনী।
পরে তাকে জেলে প্রেরণ করা হয়। চার দিন জেল খেটে সিলেটের মাননীয় চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৩ এর আদালতে এই মামলার বাদীকে আঘাতের চিহ্ন সহ মামলাটি তদন্ত না করে দেওয়ার জন্য মিথ্যা প্রমানিত হওয়াতে জন্মলগ্ন খাদেম আব্দুল শহিদ ও তার ভাতিজার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

আগামী পর্বে পড়ুন-মাজারের কোটি টাকায় বিলাসী জীবন যাপন ও টাকার বিনিময়ে আসামী গ্রেফতার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১