আজ রবিবার, ১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি, দুপুর ১২:১৭

সিলেটে ভাতার কার্ড জিম্মি করে ইউপি সদস্যের চাঁদাবাজী, তদন্তে দুদক

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত আগস্ট ২৮, ২০২০, ০৮:২৪ অপরাহ্ণ
সিলেটে ভাতার কার্ড জিম্মি করে ইউপি সদস্যের চাঁদাবাজী, তদন্তে দুদক

সিলেটের বার্তা ডেস্ক:: সিলেটের জকিগঞ্জে প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ ও বিধবাদের ভাতার কার্ড জিম্মি করে চাঁদাবাজীর অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।

এই অভিযোগ তদন্তে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর একটি টিম।

এমন অবিযোগ জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও যুবলীগ নেতা সুমন আহমদের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, বারহাল ইউনিয়নের নুরনগর গ্রামের ছানাইরাম দাস, মুহিদপুর গ্রামের আবদুল মান্নান, ফরিজ আলী, মুজম্মিল আলীসহ বেশ কয়েকজন ২০১৪ ও ২০১৫ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু তাদের নামে ২০১৯ সালে অগ্রণী ব্যাংক শাহগলী শাখা থেকে বয়স্ক ভাতার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী সিলেটের জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন। এছাড়া একজন প্রতিবন্ধী বাদী হয়ে সুমন মেম্বারকে আসামী করে থানায় এজাহারও দায়ের করেছেন। অপর আরেকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

মুহিদপুর গ্রামের ৭০ বছর বয়স্ক লালই বিবি ক্ষোভের সহিত বলেন, বয়স্ক ভাতার কার্ড পাওয়ার জন্য সুমন মেম্বারের এজেন্টকে ৫শ ও ২শ টাকা করে অনেক টাকা দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত বয়স্ক ভাতার টাকা পাননি। আয়রুন নেছা নামের বিধবা জানান, মেম্বারকে ২ হাজার টাকা দিয়েছি। তবে এখনো ভাতার কার্ড ও টাকা পাননি তিনি।

ঐ গ্রামের শিল্পী বেগম জানান, তার মেয়ের নাম প্রতিবন্ধীর তালিকায় দেওয়ার জন্য প্রথমে সুমন মেম্বারকে টাকা দিয়েছেন। কার্ড পাওয়ার পর সুমন আরও তিন হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু তিন হাজার না দিয়ে তিনি এক হাজার টাকা দিয়েছেন। এক প্রতিবন্ধীর পিতা আবদুল মুতলিব পাখি মিয়া জানান, তার ছেলের প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য ইউপি সদস্য সুমন ও তার সহযোগী সাঈদ তিন হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু তিনি টাকা দেননি। এ কারণে তার ছেলে ভাতার কার্ড পায়নি।

আরও পড়ুন:  ওসি আব্দুল কাইয়ূমের নেতৃত্বে শাহপরাণ থানা এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচারণা

এছাড়াও সুমন মেম্বারের বিরুদ্ধে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে ভারতীয় জুয়া খেলার রমরমা ব্যবসা করাসহ বিভিন্ন অপকর্মের অনেক অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। ভারতীয় জুয়া খেলার এজেন্ট হয়ে কামাই করেছেন টাকার পাহাড়। তার সাঙ্গপাঙ্গদের ভয়ে অনেকে প্রকাশ্যে অভিযোগ করতেও সাহস পাননা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিভিন্ন সময় সুমন মেম্বারের নামে চাঁদা তুলতেন বারহাল ইউনিয়নের গ্রামপুলিশ আবদুস সালাম। তিনি ভাতা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে গ্রাম পুলিশ আবদুস সালামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিধবা নারীরা ব্যাংকে ভাতা টাকা উত্তোলন করতে গেলে সুমন মেম্বারের নির্দেশে তিনি তাদের কারও কাছ থেকে ২ হাজার, আবার কারও কাছ থেকে ১ হাজার টাকা আদায় করেন। তারপর সব টাকা সুমন মেম্বারের কাছে জমা দেন।

এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বিনয় ভূষন জানান, বারহাল ইউনিয়নের নুরনগর গ্রামের ছানাইরাম দাস, মুহিদপুর গ্রামের আবদুল মান্নান, ফরিজ আলী, মুজম্মিল আলীসহ বেশ কয়েকজন ২০১৪ ও ২০১৫ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু তাদের নামে ২০১৯ সালে বয়স্ক ভাতার টাকা অগ্রণী ব্যাংক শাহগলী শাখা থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর মো. আব্দুন নাসের জানান, একজন প্রতিবন্ধী এজাহার দায়ের করেছেন। বিষয়টির তদন্ত করবে দুদক। প্রতিবন্ধীর এজাহার গ্রহণ করে থানায় জিডি করে আমাদের জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে দুদুকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী আক্তার জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেব।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সুমন মেম্বার বলেন, আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য এসব করা হচ্ছে। আমি এসবের সঙ্গে জড়িত নয়।

আরও পড়ুন:  বালাগঞ্জে ভূমি খেকোদের দখলে দেড় কিলোমিটার গোপাট

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১