আজ রবিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, দুপুর ১২:৩৮

তিন বছর আগে রাস্তা দিয়ে অটোরিকশা চলতো

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত আগস্ট ১৮, ২০২০, ০৮:২৬ অপরাহ্ণ
তিন বছর আগে রাস্তা দিয়ে অটোরিকশা চলতো

সিলেটের বার্তা প্রতিবেদক:: যুগ ডিজিটাল। বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে সারাদেশে সকল প্রত্যন্ত অঞ্চলকে টেকসই করার কাজ করে চলেছেন। ইতোমধ্যে দেশের অনেক ইউনিয়ন এমনকি গ্রামেও পৌঁছে গেছে ডিজিটাইলেশনের ছোঁয়া।

এমন সময় আধ্যাত্মিক রাজধানী সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়নের রাস্তা যে বিলীনের পথে। এর খবর স্থানীয় ইউপি সদস্যদের গাফলতির কারণে সংষ্কারহীন পড়ে আছে।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের নাগরিক তথা আমাদের বাপ-দাদারা আজ দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি-অগ্রগতি দেখে কাহিনী শুনাতেন, ইতিহাস বলতেন-‘ওই রাস্তা দিয়ে আগে কেউ যাতায়াত করতো না, শুধু বন আর জঙ্গল ছিল’।

কিন্তু ডিজিটাল যুগের নাগরিক হয়ে বর্তমান প্রজন্মরা নিজেদের ভোগান্তির কথা বলছেন এই সড়ক দিয়ে ৩বছর আগে সিএনজি অটোরিকশা চলতো। এখন পায়ে হেটেও যাওয়া দুষ্কর। ব্যাপারটা কী রকম মনে হয়।
সত্যিই এমন ভাঙনের কবলে বিলীন হয়ে পড়েছে গ্রামের রাস্তা। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কয়েক হাজার মানুষকে। কষ্ট শিকার করে স্কুল-কলেজ, মাদরাসায় যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থীদের। মসজিদ পানে ছুটতে মুসল্লিদের।

প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার উত্তর আলমপুর গ্রামের সড়কের এই দশা জানান দেয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের খামখেয়ালিপনার কথা।

গোলাপগঞ্জ উপজেলার উত্তর বাদেপাশা ও ভাদেশ্বর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী একটি সংযোগ রাস্তা খালের পানির তীব্র স্রোতে বিলীন হতে চলেছে। আর এতে করে দুর্ভোগে পড়েছেন ১০/১৫টি গ্রামের লোকজন। তবে গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটির সংস্কার কাজে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তারা জানান, রাস্তাটির আধা কিলোমিটার বাদেপাশা ইউনিয়নের অধীনে এবং অবশিষ্ট আড়াই কিলোমিটার অংশ ভাদেশ্বর ইউনিয়নের অধীনে হওয়ায় থমকে রয়েছে এর উন্নয়ন কাজ রাস্তাটির বেশিরভাগ অংশ ভাদেশ্বর ইউনিয়নের অধীনে হলেও তা ব্যবহার করে থাকেন বাদেপাশা ইউনিয়নবাসী।
বাদেপাশা ইউনিয়নের কোনাগাও,উত্তর আলমপুর, কুলিয়া, কেওটকোনা, রাকুয়ার বাজার, কুশিয়ারা পুলিশ ফাড়ি, দক্ষিণ আলমপুর প্রভৃত গ্রামগুলোর শহরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম অবহেলিত এ রাস্তাটি। বাগলা ছেগা, কালাইম, সোফাটেক-সহ প্রায় ১০/১৫টি গ্রামের জনসাধারণের যাতায়াত অবহেলিত এ রাস্তা দিয়ে।

আরও পড়ুন:  শনিবার বিদ্যুৎহীন থাকবে সিলেটের অর্ধশতাধিক এলাকা

এসব গ্রামবাসী রাস্তাটি ব্যবহার করে ভাদেশ্বর হয়ে ঢাকাদক্ষিণ, গোলাপগঞ্জ-সহ জেলা শহরে সহজেই যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু রাস্তাটির উত্তর পাশ দিয়ে কুশিয়ারা নদী থেকে বয়ে যাওয়া একটি খালের তীব্র ভাঙ্গনে অনেকদিনের পুরনো এ রাস্তাটি আজ বিলীন প্রায়।প্রতি বর্ষা মৌসুমে খালের পানির প্রবল স্রোতে রাস্তাটির প্রায় ৭৫% অংশ বিলীন হয়ে গেছে। আর এতে করে রাস্তাটি দিয়ে যান চলাচল দূরে থাক পায়ে হেঁটে চলারও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।আর এতে করে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বৃহৎ অঞ্চলের জনসাধারণ। এছাড়া এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা ভাদেশ্বর মহিলা ডিগ্রি কলেজ, ভাদেশ্বর নাসির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বুধবারী বাজার হাফিজিয়া ও দাখিল মাদ্রাসা, ভাদেশ্বর কুড়ির বাজার ফাজিল মাদ্রাসা, ঢাকাদক্ষিণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখা পড়া করে থাকেন। কিন্তু রাস্তার এমন বেহাল দশায় তারা রীতিমত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারছেন না। এতে করে তাদের লেখা পড়ার অপূরনীয় ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।

ভাদেশ্বর মোকাম বাজার সিএনজি স্টেশনের সভাপতি মোঃ কয়েছ আহমদ জানান উত্তর আলমপুর থেকে ভাদেশ্বর মোকাম বাজারের সাথে মিলিত রাস্তা দিয়ে বিগত ৩/৪ বছর আগেও সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করতে পারতো। যা এখন ভাঙ্গনের ফলে পায়ে হেঁটে চলারও অনুপযোগী হয়ে উঠেছে।

বাগলা ১নং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেওট কোনা গ্রামের মাস্টার মোঃ লুৎফুর রহমান জানান, রাস্তাটি বিলীন হওয়ার ফলে এলাকাবাসী-সহ বৃহত্তর এলাকার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া এবং রোগীদের চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত।

এলাকার বিশিষ্ট সমাজ সেবক জনাব মোঃ ফরিজ আলী জানান একসময় ঐ রাস্তা দিয়ে আমরা সিএনজি চালিত অটোরিক্সার মাধ্যমে শহরের সাথে যোগাযোগ করতে পারতাম।

এলাকার প্রবীন মোরব্বী হাজী তেরা মিয়া জানান, এ রাস্তার এমন বেহাল দশায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। যার ফলে গর্ভবতী মহিলা এবং অসুস্থ রোগীদের যথাসময়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান ব্যাহত হচ্ছে। জরুরি মূহুর্তে রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা সেবার অভাবে গর্ভবতী মহিলাসহ অনেক রোগী মারা যাওয়ার মতো হৃদয়বিদারক ঘটনা প্রায়ই শোনা যায় বলেও জানান তারা।

আরও পড়ুন:  গুলশানে বিষ্ফোরণে নিহত ১৬, বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা

এলাকাবাসীর দাবী বৃহত্তর অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে রাস্তাটি যেন গুরুত্বসহকারে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। তারা যথা শীঘ্রই রাস্তাটি সংস্কার করতে ঊর্ধ্বতন জনপ্রতিনিধির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০