লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ থেকে:: ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই শিশু ইতি মক্তবে পড়তে গিয়ে আরে ফিরে আসেনি। পরদিন মসজিদের পাশ্ববর্তী ধানক্ষেতে পাওয়া যায় ইতির বস্তাবন্দী মরদেহ।
শিশু ইতি হত্যা মামলার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয় নি তদন্ত। এনিয়ে রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
হবিগঞ্জ জেলায় শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার আলোচিত ইতি আক্তার (৬) হত্যা মামলার তদন্ত দুবছরেও শেষ হয়নি। কবে নাগাদ তদন্ত শেষ হবে সেই খবরও জানেন না কেউ। অথচ ইতির পরিবার আত্মীয়-স্বজন সহপাঠী সবাই চাইছেন দ্রুতই ইতি হত্যার রহস্য উন্মোচন হোক খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক।
এদিকে ২০১৮ সালে ইতি হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও দুবছরে মামলার তদন্তে কোন সুরাহা হয়নি। প্রথম শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ মামলার তদন্ত করলেও পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) হবিগঞ্জকে মামলার তদন্তভার দেয়া হয়।
বর্তমানে মামলার তদন্তটি পিবিআই-ই করছে পিবিআই এর কর্মকর্তারা বলছেন, ইতি হত্যা মামলার তদন্ত অগ্রগতি হচ্ছে। কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। আশাকরি খুব শীঘ্রই এ হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন হবে।
তবে বিচারের এ দীর্ঘসূত্রতায় হতাশ ইতির বাবা আব্দুস শহীদ। তিনি বলেন, মেয়েকে হারিয়ে বিচারের আশায় আমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি। আমি চাই আমার মেয়ের প্রকৃত খুনিদের ফাঁসি হোক।
এ মামলার বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হোসেন বলেন, শিশু ইতি হত্যা মামলাটি পিবিআই হবিগঞ্জের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করছেন।
হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেছি, এখনো তদন্তের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমি আশা করছি খুব শীঘ্রই এর একটি সুরাহা হতে পারে। আমরা আশা করছি ভাল কোন খবর আপনাদেরকে দিতে পারব।
প্রসঙ্গত ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই ভোরে বাড়ির পাশের মসজিদে মক্তবে পড়তে যায় ইতি আক্তার। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ইতির বাবা এ নিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পরদিন ২৬ জুলাই সকালে মসজিদের পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেত থেকে ইতির বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেন। ইতি আক্তার শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার বিরামচরের ৯নং ওয়ার্ডের চটপটি বিক্রেতা আব্দুস শহিদের মেয়ে।
এরপর ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই ইতির বাবা আব্দুস শহীদ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ ওই মামলাটি কিছুদিন তদন্ত করার পর পিবিআই হবিগঞ্জের কাছে হস্তান্তর করা হয়। যা এখনো তদন্তাধীন রয়েছে।