
লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ থেকে:: পাখির কলকাকলি শুধু নীরিবিলির মাঝে। পাখি বাসা বাঁধে শুধু গাছের ডালে। দিনভর উড়ে বেরানো শেষে সন্ধ্যায় আপন নীড়েই আশ্রয় খুঁজে নেয়।
যান্ত্রিক কোলাহল তবুও পাখির নিরাপদ অভয়াশ্রমের পরিণত হয়েছে হবিগঞ্জের মাধবপুর গ্যাস ফিল্ড চত্বরের গাছগুলো। সারা দিনই বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কিছিরমিচি শব্দ ও কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠে মাধবপুর গ্যাস ফিল্ড। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশ ঘেষা গ্যাস ফিল্ডের গাড়ির হর্ণ ও যান্ত্রিক কোলাহল নিত্য নৈতিক হলেও পক্ষিকুল এটা মেনে নিয়েছে। রীতিমতো কয়েক হাজার পাখি এখানে বাসা বেঁেধছে। গ্যাস ফিল্ড চত্বরের বিভিন্ন প্রজাতির দু শতাধিক উঁচু গাছ রয়েছে।
এসব গাছে এখন শুধু পাখির বাসা। সন্ধ্যা নামার কিছু আগে গেলেই দেখা যাবে গাছগুলোর মগ ঢালে বসে আছে সাদা বক, বালি হাঁস, পানকৌড়ি, সারস, কাক সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। পাখপাখালির কিছিমিচি শব্দ আর পাখির কলকাকলিতে মুখরিত ও কোলাহল অবলোকন করতে অনেক পাখি প্রেমিকের ভিড় জমে মাধবপুর গ্যাস ফিল্ডের আশপাশে। দেশী পাখির সঙ্গে অনেক অতিথি পাখির নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে পরিণত হয়েছে এ স্থানটি। প্রতিটি গাছের দিকে দৃষ্টি আকর্ষন করলেই চোখে যায় পাখির বাসা।
পুরো গ্যাস ফিল্ড প্রাঙ্গন পাখির অসংখ্য ছানার কিছির মিচি শব্দ মুখরিত হয়ে উঠে। মাধবপুর গ্যাস ফিল্ড সুপার ভাইজার আব্দুল কুদ্দুস (অবঃ) বলেন, অনেক আগে থেকেই এখানে দেশী সারস, বক, ঘুঘু, কাক, বালিহাঁস, সহ কিছু পাখির উপস্থিতি ছিল। প্রায় দুই বছর ধরে হঠাৎ করে এখানে পাখির আনা গুনা বেড়ে যায়। অতিথি পাখি সহ রয়েছে এখানে নানা প্রজাতির অনেক পাখি। সন্ধ্যার আগ মুহুর্তে কেউ গ্যাস ফিল্ডে ঢুকতে চাইলে পাখির বিষ্টা পড়বে তার উপরে। কেউ এসব পাখিকে ডিসর্টাব করে না। নির্বিঘ্নে নিরাপদে পাখিরা এখানে বসবাস করছে। গ্যাস ফিল্ডের কেয়ারটেকারও সতর্ক কেউ যাতে পাখিদের ক্ষতি না করে।
এ কারণে দিন দিন পাখির সংখ্যা বাড়ছে এখানে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যান্ত্রিক কোলাহল সৃষ্টি করলেও এ যান্ত্রিকতা টুকুও গ্যাস ফিল্ড চত্বরে পক্ষিকুল মেনে নিয়েছে। সন্ধ্যার আগ মুহুর্তে মহাসড়কের পাশে পাখি প্রেমিক মানুষের উপছে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। পাখির কিছিরমিচির শব্দ উড়ন্ত শত শত পাখির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে মানুষের ভিড় বাড়ছে ক্রমশই। এলাকাবাসীর দাবি বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ পাখির আশ্রমটি যথাযথ রক্ষানাবেক্ষনের জন্য সরকার পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান।