সিলেট ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই আ.লীগ মানুষের অধিকারের কথা বলছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত জুন ২৩, ২০২০, ০৩:০৭ অপরাহ্ণ
প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই আ.লীগ মানুষের অধিকারের কথা বলছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি


সিলেটের বার্তা ডেস্ক:: প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের অধিকারের কথা বলে আসছে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে চলেছে।

আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন-আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠান কাটছাঁট করার বিষয়ে বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে জনসমাগম হবে—এ ধরনের সব কর্মসূচি বাতিল করেছি। কারণ, আমাদের কাছে জনগণের কল্যাণটাই হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটাকেই আমরা গুরুত্ব দিই।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ কেক কাটা, শোভাযাত্রা অনুষ্ঠান, শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভাসহ বর্ণাঢ্য আয়োজন করে থাকে। এবার মুজিব বর্ষের কারণে আয়োজন আরও জাঁকজমপূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব কর্মসূচিই বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে মুজিব বর্ষ ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি সম্পর্কে কথা বলেন।

শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন ইতিহাস বর্ণনা করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ প্রতিষ্ঠাতাদের স্মরণ করেন। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের কথা, মানুষের অধিকারের কথা বলেছে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৭৫৭ সালে সিরাজউদ্দৌলার পতনের মধ্য দিয়ে বাংলার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সেই সূর্য উদয় হয় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। স্বাধীনতাসংগ্রামের সময় বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। যুদ্ধ করে ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। জাতির পিতা আজীবন সংগ্রাম করেছেন এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, জনগণের জন্য। তিনি তাঁর সংগ্রামের পথে অনেক বাধা, বিপদ অতিক্রম করেছেন।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে, বাঙালি কিছু পেয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। এ ছাড়া অন্য সময় পেছনে টেনে রাখার চেষ্টা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানবতার সেবা করে গেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শোষিত–বঞ্চিত মানুষের কথাই বলেছে আওয়ামী লীগ। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। আর এই সংগ্রামের পথে অগণিত নেতা-কর্মী জীবন দিয়েছেন। তাঁদের ত্যাগ-তিতিক্ষায় আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজকে আমরা একটা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। স্বাধীন জাতি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, জাতির পিতা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব যখন পেলেন, দেশ গড়ে তুলে যখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় আরেক মীরজাফর খন্দকার মোস্তাক এবং জিয়ার কুচক্রীর ফলে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়ে গেল।’

জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালনের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করি। এটা নিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তা পালন করতে পারিনি। আজকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সীমিত আকারে উদ্‌যাপন করছি।’

করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী একটি সমস্যা। এর থেকে মানুষকে রক্ষা করা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, মানুষ যাতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত না হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রেখেই মুজিব বর্ষ উদ্‌যাপনের সব কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিশেষভাবে উদ্‌যাপনের কথা ছিল, সেটাও করা যায়নি।

করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের মধ্যে দুঃখ–কষ্ট আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ-কৃষকলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ নেতা-কর্মীরা প্রত্যেক মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌছে দিচ্ছেন। লাশ দাফন থেকে শুরু করে সমস্ত কাজে মানুষের পাশে আছেন। এলাকাভিত্তিক তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন। ঘুর্ণিঝড়ের সময়ও তাঁরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণের কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। এভাবে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবে আওয়ামী লীগ। এটাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য।

জাতির পিতাকে স্মরণ করে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘একসময় বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কেউ পারেনি। অবশ্য সত্যকে মোছাও যায় না। জাতির পিতা শারীরিকভাবে আমাদের কাছে নেই। তাঁর অস্তিত্ব বাঙালির হৃদয়ে আছে। তাঁর যে আকাঙ্ক্ষা, সেটা আমাদের পূরণ করতে হবে। আজকের দিনে এটাই শিক্ষা। বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর আইয়ুব খানের সব রাষ্ট্রকাঠামো ভেঙে দিয়ে জনগণের ক্ষমতায়ন ও ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের আর্থসামাজিক অগ্রযাত্রা শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু তা সম্পন্ন করে যেতে পারেননি। তাঁর অসমাপ্ত কাজটা শেষ করা আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’


শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০