
মো. নুরুল হক:: বিশ্বাস বলতে সাধারণতঃ পারিপার্শ্বিক বিষয়-বস্তুরাজি ও জগৎ সম্পর্কে কোনো সত্ত্বার স্থায়ী-অস্থায়ী প্রত্যক্ষণকৃত ধারণাগত উপলব্ধি বা জ্ঞান এবং তার নিশ্চয়তার উপর আস্থা বোঝানো হয় । সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, জ্ঞানতত্ত্ব ইত্যাদি বিভিন্ন আঙ্গিকে বিশ্বাস শব্দটি বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে খানিকটা আলাদা অর্থ বহন করতে পারে , তাই জ্ঞান , সত্য , ইত্যাদির মত বিশ্বাসেরও কোনো একটি সর্বজনসম্মত সংজ্ঞা নেই বলে অনেকের ধারণা ।
কোনো বিষয় সত্য না মিথ্যা তা বিচার করে – সত্য মনে হলে তা “বিশ্বাস করা” অথবা মিথ্যা মনে হলে অবিশ্বাস করা আর মিথ্যা হবার সম্ভাবনা বেশি মনে হলে সন্দেহ করা হয় । বিশ্বাস মানে হতে পারে আস্থা (faith) , ভরসা (trust)।
বিশ্বাসের দৃঢ়তা (বিশ্বাস যত বেশি সন্দেহ তত কম) যা খুব বেশি হলে তাকে বলা যায ভক্তি বা অন্ধবিশ্বাস । আবার বিশ্বাস মানে হতে পারে আশা (hope) বা আশ্বাস (assurance) বা বিশ্বাস করার ইচ্ছা (willingness to trust) ।
‘বিশ্বাস ‘ এমন একটা মানসিক ভিত্তি বা মূল্যবাধ – যাকে অবলম্বন করে বা যে ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে মানুষ তার আত্মপরিচয়কে প্রকাশ করে। এ পরিচয়ের ক্ষেত্রে মানুষের ধর্মবিশ্বাসটাই হলো প্রথম এবং মৌলিক ভিত্তি।এই ধর্মীয় বিশ্বাস বা ভিত্তির উপর মানুষ কেউ মুসলমান, কেউ হিন্দু, কেউ খ্রিষ্টান বা অন্য ধর্মাবলম্বী।
মানুষের স্ব-স্ব ধর্মের উপর বিশ্বাস না থাকলে মানুষকে হয়তোবা ‘মানুষ ‘ হিসেবেই চিহ্নিত করা যেতো- মুসলমান, হিন্দু, খ্রিষ্টান ইত্যাদি হিসেবে চিহ্নিত করা যেতো না।এ চিহ্নিতকরণের অবশ্যই প্রয়োজন আছে।তা না হলে মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ ও প্রতিষ্ঠার কোন সুযোগও থাকতনা।মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সফল মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রমাণিত করার একটা শ্রেষ্ঠ ও প্রধানতম শক্তি বা অবলম্বন হলো এই ধর্মবিশ্বাস। যে যত বেশি তুলনামূলক যাচাইয়ের ভিত্তিতে উৎকৃষ্ট ধর্মীয় বিশ্বাস বা মূল্যবোধের আলোকে নিজেকে আলোকিত করতে পারবে- সে-ই সফল , সে-ই উৎকৃষ্ট।
পৃথীবিতে ধর্মবিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা-ই বেশি।অবিশ্বাসী মানুষের সংখ্যাও নেহায়েৎ কম নয়।অবিশ্বাসীরা নিজদেরকে নাস্তিক বলে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে।নাস্তিকতায় অবিচল থাকার গুণটাও এক ধরণের বিশ্বাসের- ই রূপ।ধর্মবিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে দুলতে থাকা কেউ-কেউ আবার বিশ্বাসের, সত্যের ঘরে ফিরে আসে।যারা আসেনা তারাও কিন্তু মরণের পরে তাদের অন্তেষ্টিক্রিয়াটুকু ধর্মবিশ্বাসেরর ( তাদের বাহ্যিকভাবে অনুসরণীয় বিশ্বাসের) ভিত্তিতে হোক বা না হোক – এ কথাও স্পষ্টভাবে বলে যায়না।অর্থাৎ, শেষ-মেশ তাদের ( বিশেষ করে নাস্তিকতা অনুসারী তথাকথিত মুসলিমদের)মূল ধর্মীয় বিশ্বাসের কাছে-ই আত্মসমর্পণ করতে হয়।
‘বিশ্বাস ‘এরও বিভিন্ন অনুসঙ্গ এবং এর প্রাসঙ্গিকতা, কার্যকারিতা, প্রয়োজনীয়তা, আস্হাশীলতা ইত্যাদি সমাজে, রাষ্ট্রে , ব্যক্তিতে-ব্যক্তিতে বিভিন্নভাবে প্রকাশিত, প্রতিভাত, বিরাজিত হয়।ধর্মীয় স্বাধীনতা, ব্যক্তি- স্বাধীনতা, বাক্ স্বাধীনতায় বিশ্বাসকে যারা বা যে কর্তৃপক্ষ সমাজে প্রতিষ্ঠা নিশ্চিৎ করবে- তাঁদের উপর বিশ্বাস স্হাপন করা, আস্হা অর্জন করা, বিশ্বাস অক্ষুন্ন রাখার কাজটায় বিশ্বাসস্হাপনকারী সমাজ, কর্তৃপক্ষ কতটুকু বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারে – এর উপর নির্ভর করে সমাজে ‘বিশ্বাস ‘এর স্হায়ীত্বের ভবিষ্যৎ।
কোন মানুষ জন্মের পর তার জন্মের বৃত্তান্ত অবগত হতে পারলেও তারজন্মের প্রক্রিয়াগত গোপণ রহস্য তার অজানা-ই থেকে যায়।তবুও, নারী-পুরুষের যুগলবন্ধণে তথা মিথস্ক্রিয়ার ফসল হিসেবেই যে তার এ ধরাধামে পদার্পণ – তা তাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে-ই হয়।কিংবা – কোন যুগলের অবৈধ সম্পর্কের ফসল হয়ে ড্রেনে পড়ে থাকা ফুটফুটে শিশুটি কোন শিশু সদন বা অন্য কোন আশ্রয়ে বড় হয়ে কোন একদিন তার পিতৃ বা মাতৃপরিচয় সম্পর্কে তার নিজের মনের বা অন্য কারো জিজ্ঞাসারপ্রক্ষিতে তাকে বিশ্বাস করতেই হয় – কোননা কোন যুগলের যে-কোন উপায়ে মিলনের ফসল ছাড়া সে আর কিছুই নয়।এমনিতেই আকাশ থেকে সে ধরাতলে নিপতিত হয়নি।আর এ বিশ্বাসের উপর ভর করে-ই সে তার অস্তিত্বের সন্ধাণ করতে চায়, খঁজে বেড়ায় তার মূল কোথায়।এ বিশ্বাস পৃথিবীতে বিদ্যমান, চলমান আছে বলেই মানবকুল / প্রাণীকুলের অস্তিত্বের বিকাশ ঘটছে, অস্তিত্ব টিকে আছে।
এ করোনাকালেও করোনার নীরব-ঘাতকের ভূমিকায় স্রষ্টার শক্তি ও কৌশলের শ্রেষ্ঠত্বের উপর বিশ্বাস আরো দৃঢ়তর হচ্ছে। সমাজে, রাষ্ট্রে, ব্যক্তিতে-ব্যক্তিতে বিশ্বাস অর্জন করা, বিশ্বাসে অবিচল থাকা ততটা সহজ নয়, যতটা সহজ পরস্পরের মধ্যে বিশ্বাস ভঙ্গ করা।বিশ্বাস ভঙ্গকারীরা এককথায় ‘মীর জাফর ‘হিসেবেই পরিচিতি পায়।
এ বিশ্বাস ভঙ্গের ধরণও একেকজনের একেকরকম।অমরচাঁন বিশ্বাসের ছেলে বিধুভূষণ বিশ্বাস হক সাহেবের শৈশবের বন্ধু।দুই পরিবারের মধ্যে আম- কাঁঠাল- চিড়া- দৈ- খৈ খাইয়ে, উভয়ের কনিষ্ঠা আঙ্গুলে ধরাধরি করে সৃষ্ট ‘বন্দে ‘র( বন্ধুত্বের) বন্ধন ছিন্ন করে হক সাহেবকে না জানিয়েই বিধুভূষণ বিশ্বাসেরা ওপ্রে চলে গিয়ে বিশ্বাসভঙ্গের এক নিকৃষ্ট উদাহরণ স্হাপন করে গেল।আজো হক সাহেবের এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে, বিধুভূষণদের দেশ ত্যাগ করার কোন যৌক্তিক কারণ ছিল।কেননা- ঐ সময়ের আগে, ঐ সময় পর্যন্ত তিংবা অদ্যাবধি হক সাহেবের মাধ্যমো কিংবা তাঁর গ্রামে এমন কোন ঘটনার প্রমাণ কেউ দিতে পারবেনা- যে কারণে বিধুভূষণ বিশ্বাসেরা এভাবে ভালবাসার বাঁধন ছিন্ন করে চলে যেতে পারে! এ অবিশ্বাস বা কষ্ট আজো হক সাহেবরা বয়ে বেড়ায়।এ অবিশ্বাস-নির্ভর কষ্টের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয় – যখন কোন বিস্বস্হ মাধ্যমে বিধুভূষণেরর নাম্বার সংগ্রহ করে বিধুভূষণকে কল দিলেও অপর প্রান্ত থেকে কোন সাড়া পাওয়া না যায়!
বিনা দোষে বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত করে যখন চাকরিজীবনের শেষ প্রান্তে এসে মন্ডল, সুন্দর আলী, শাহাব আলী, নূর আলীরা তাঁদের অপর এক সহকর্মিকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কষ্ট দেয়, বিপদে ফেলে হয়রানি করে এক অবিবেকী-বর্বরতা চালায় -তখন এটা বিশ্বাস করতেই হয় যে, মন্ডল সাহেবরা কুখ্যাত ঘুষখোর, প্রমাণিত দূর্নীতিবাজ , তাঁর চাহিদামত অধিনস্তের ঘুষ প্রদানে ব্যর্থতার কারণেই হয়তো তিনি অবৈধভাবে ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েও তিনি বিশ্বাসভঙ্গ, বিশ্বাসঘাতকতা করতে পেরেছেন।আবার- এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে, সুন্দর আলী এবং তাঁর বন্ধু- সহকর্মি একই পদে বিভিন্ন স্হানে চাকরি করেছেন,একই প্রকৃতির দায়িত্ব পালন করেছেন। কিংবা – উভয়ের বাড়ি একই এলাকায়।অনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যেই যে এ বিশ্বাসভঙ্গের কাজটি করেছেন তা তো বিশ্বাস করতেই হয়।
বিশ্বাস করতেই হয় যে- শাহাব আলীদের বাহ্যিক তথাকথিত মার্জিত কথাবার্তা, বেশভূষা সমাজের চোখে ধুলো দেয়া ও প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।কিংবা বিশ্বাস করতেই হয় যে- নূর আলীরা লোভাতুর হয়ে দুই নম্বরি করে নিজের ব্যর্থতা ও অপকর্মকে ঢাকার জন্য, অনৈতিক সুবিধা হাসিলে ব্যর্থতাজনিত আক্রোশে এবং উর্ধ্বতনের নেক নযর( অনৈতিক প্রাপ্তির আশায়) অপর বিশ্বস্হ সহকর্মির সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকার পরাকাষ্ঠা দেখাতে পারে!
তথাকথিত জনপ্রতিনিধিরা সাধারণের বিশ্বাস, আস্হা অর্জনের জন্যে কত রকমের রসালো ও চিত্তাকর্ষক বুলি-ই না আওড়ায়! জনসেবা প্রদানে তিনি/ তাঁরা-ই নিঃস্বার্থ এবং সেরা- এমন আশ্বাস এবং বিশ্বাসের বীজ সাধারণের মগজ-ক্ষেত্রে বপন করে।পরবর্তীতে সেই বিশ্বাসের মুখ ফেটে, ভেঙ্গে ত্রাণের চাউল , অর্থ চুরির ঘটনা বের হয় !
বাহ! বিশ্বাস স্হাপনের এবং বিশ্বাস ভঙ্গের কী রকমারি ঝলক!
ছেলে একদিন অনেক বড় হবে, প্রতিষ্ঠিত হবে, বাবা-মাকে দেখবে- এ বিশ্বাসকে বুকে ধারণ করে যে পিতা নিজের জীবনের সোনালি যৌবন ও সমস্ত সাধ-আহলদকে বিসর্জন দিয়ে ছেলের কল্যাণকামনায় সোনার দেহটাকে মাটি ও অঙ্গার করে ফেলল- সেই পিতা যখন বৃদ্ধবয়সে কোন এক ভোরবেলায় নিজেকে বৃদ্ধাশ্রমের চিলেকোঠায় আবিস্কার করে – তখন সেই বৃদ্ধ পিতার মনে এমন বিশ্বাস এবং ভাবনাই পূনঃস্হাপিত হয় – ‘হায়রে! আমার যৌবনের ম্বপ্নে লালিত বিশ্বাসটা বুঝি ছিল শুধুই একটা রঙ্গিন ফানুস, যা জীবনের এ চরম ক্রান্তিকালে এসে রঙ্গিন আলো বিচ্যুরনের বদলে চুপসে গেল, ফেটে গেল!
য়ে বাবা নিজের সুন্দরী আদরের মেয়েটাকে ভাল পাত্রস্হ করার স্বপ্ন নিয়ে লেখাপড়া শিখাল, বড় করল- সেই মেয়েটাই যখন একদিন রাতের অাঁধারে কোন এক বখাটে ছেলের হাত ধরে পালিয়ে বিয়ে করে পরিবার ও বিশ্বাসের মুখে কলঙ্ক লেপন করল, তখন সেই পিতা-মাতা ঐ আদুরে কন্যার উপর রাখা বিশ্বাসের মূল্য খুঁজে পাবে কীভাবে?! কিংবা, সেই একই মেয়েকে যদি ঐ বখাটে স্বামী যৌতুকের লালসায় বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় – তখন ঐ মেয়ে পিতা-মাতা ও বংশের সামাজিক মর্যাদাকে ভূলুন্ঠিত করে অলীক স্বপ্নের আবর্তে ভেসে রঙ্গিন সুখের আশায় বিশ্বাস করা ঐ বখাটে স্বামীর এখনকার দেয়া কোন মিথ্যা আশ্বাসকে বিশ্বাস করবে কীভাবে?!
একইভাবে প্রেম করে বিয়ে করা কোন স্ত্রী যখন পরকীয়ায় ডুবে গিয়ে তিনটি সন্তান রেখে পরপুরুষের হাত ধরে সুখের সংসার ত্যাগ করে বাড়ির বের হয়ে চলে যায়, তখন কি ঐ পুরুষ ভাববেনা যে- ‘প্রেম করা কালে ঐ নাগিনীর মধুর-কথায় বিশ্বাস স্হাপন করা-ই ছিল আমার জীবনের চরম ভুল ‘।অপরদিকে- প্রেম করে বিয়ে করা সুন্দরী স্ত্রীকে ঘরে রেখে প্রেমিক বর যখন তাঁর অফিস-কলিগ বা অন্য কোন নারীর সাথে ফস্টি-নস্টি বা পরকীয়ায় ডুবে থাকে, তখন তো ঐ স্ত্রী একদিন চাইবেই স্বামীর এই বিশ্বাসভঙ্গের কারণে গলায় দড়ি দিয়ে কিংবা বিষপানে আত্মহত্যা করতে।
‘বিশ্বাস ‘ মানুষকে ঐক্যের গান শেখায়। ‘বিশ্বাস ‘ মানুষকে সত্যের ও সঠিক পথের সন্ধাণ দেয়।আবার- কোন কোন ভুল বিশ্বাস বা সিদ্ধান্ত বিশৃঙ্খলা, বিভেদ ও বিচ্ছিন্নতাকে উসকে দেয়।
কথায় আছে- “বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর “।কোন কিছু পেতে হলে তার প্রাপ্তির উৎসকে বিশ্বাস করতেই হবে।নড়বড়ে বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে প্রাপ্তির আশাও হয় নড়বড়ে, ক্ষীণ।বিশ্বাসের ভিত্তি যত মজবুত, এর ফল প্রাপ্তির আশাও হয় তত দৃঢ়, গভীর।তর্কে বিশ্বাস স্হাপন করা যায়না। তর্কে বিশ্বাসে ভাঙ্গন দেখা দেয়,চিড় ধরে, সত্যানুসন্ধিৎসু মন হয়ে উঠে বিক্ষুব্ধ, বিভ্রান্ত।
‘বিশ্বাস ‘ এর মাত্রায় যতই বৈচিত্র্য থাকুক, যতই নড়বড়ে কিংবা ভঙ্গুর থাকুক, কিংবা অবস্হা বা পরিবেশ- পরিপ্রেক্ষিত ভেদে এর পারদ উঠানামা করক- ‘নিঃশ্বাসের বিশ্বাস নেই ‘- অর্থাৎ, যে-কোন সময় কোনরূপ পূর্বাভাস ব্যতীরেকেই মানুষের দুয়ারে মৃত্যু এসে হানা দিতে পারে- এ চিরসত্য, বিশ্বাসটুকু সার্বক্ষণিক বিশ্বাস করা-ই ‘বিশ্বাস ‘এর মৌলিক অনুসঙ্গ।
এ করোনাকালেও যেন পৃথিবীব্যাপী-ই এখন বিশ্বাস স্হাপন বা ধরে রাখার চেয়ে অবিশ্বাস করা বিশ্বাস ভঙ্গ করার উৎসব চলছে! ব্যক্তিতে-ব্যক্তিতে, সমাজে, রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে এ বিশ্বাসের চিড় গলিয়ে অবিশ্বাসের ফোঁকর তৈরী হচ্ছে।করোনার উৎস, উৎপত্তি, এর বিস্তার সম্পর্কে প্রকৃত সত্য ও বিশ্বাস স্হাপনে চীনের ব্যর্থতার কথা, গোপণীয়তার কথা দুনিয়াব্যাপী উচ্চারিত হচ্ছে।প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তো করোনা নিয়ে চীনের কোন কিছুর উপরই বিশ্বাস স্হাপন করতে পারছেননা। এক প্রতিবেশী তাঁর অপর প্রতিবেশী ‘র ন্যায্য হিস্যা প্রদানের জন্যে দেয়া আশ্বাস বা বিশ্বাস ভঙ্গ করেই চলছে নির্দ্বিধায়।কিংবা একে অপরের সাথে শান্তিপূর্ণ-সহাবস্হানেরর জন্যে হৃদয়ে পুষে রাখা বিশ্বাস কেউ-কেউ ভঙ্গ করে চলছে অহরহ।
‘বিশ্বাস ‘ এর স্হায়ী রূপ-ই সুন্দর।যা ‘তে মানুষ এগিয়ে চলার কিংবা তাঁর অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার মন্ত্রণা পায়।এর অস্হায়ী রূপ হলো ভঙ্গুর, কুৎসিৎ- যা মানুষকে, পৃথিবীকে পশ্চাদগামী করে তোলে।
লেখক:: মো. নুরুল হক: অবসরপ্রাপ্ত সহকারি পোস্ট মাস্টার জেনারেল বাংলাদেশ ডাক বিভাগ