আজ সোমবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, সকাল ৮:৫০

শবে কদর: ভাগ্য নির্ধারণের রাত আজ

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত মে ২০, ২০২০, ১০:৩৩ অপরাহ্ণ
শবে কদর: ভাগ্য নির্ধারণের রাত আজ

ধর্ম বার্তা:: আজ ২৭ রামাযান এর রাত। শেষ দশকের বেজোড় রাত আজ। মহানবী সা. রামাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে শবে কদর অনুসন্ধান করার তাগিদ দিয়েছেন।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা রমজান মাসের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে মুমিন বান্দার জন্য রেখেছেন ফজিলত পূর্ণ রাত। যাকে পবিত্র কোরআনের ভাষায় বলা হয় ‘লাইলাতুল কদর’।
আরবি ভাষায় ‘লাইলাতুল’ অর্থ হলো রাত্রি বা রজনী এবং ‘কদর’ শব্দের অর্থ সম্মান, মর্যাদা, মহাসম্মান।

এ রাতে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। আর এ রাতের ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন,

إِنَّآ أَنزَلۡنَـٰهُ فِى لَيۡلَةِ ٱلۡقَدۡرِ
وَمَآ أَدۡرَٮٰكَ مَا لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ
لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ خَيۡرٌ۬ مِّنۡ أَلۡفِ شَہۡرٍ۬
تَنَزَّلُ ٱلۡمَلَـٰٓٮِٕكَةُ وَٱلرُّوحُ فِيہَا بِإِذۡنِ رَبِّہِم مِّن كُلِّ أَمۡرٍ۬
سَلَـٰمٌ هِىَ حَتَّىٰ مَطۡلَعِ ٱلۡفَجۡرِ
বাংলা উচ্চারণ :
ইন্না আনযালনাহু ফী লাইলাতিল কাদরি, ওয়ামা আদরাকা মা লাইলাতুল কাদরি, লাইলাতুল কাদরি খাইরুম মিন আলফি শাহর, তানাযযালুল মালাইকাতু ওয়াররূহ, ফিহা বিইযনি রাব্বিহিম মিন কুল্লি আমরিন, সালামুন হিয়া হাত্তা মাতলাইল ফাজর।

> আমি একে (কোরআন) অবর্তীণ করেছি লাইলাতুল কদরে।

> (হে রাসূল!) আপনি কি লাইলাতুল কদর সম্বন্ধে জানেন?

> লাইলাতুল কদর হলো এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।

> তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে এতে (এ রাতে) প্রত্যেক কাজের জন্য ফেরেশতারা এবং রূহ (জিবরিল আলাইহিস সালাম) অবর্তীণ হন।

> শান্তিময় সেই রাত; যা ফজর উদয় পর্যন্ত অব্যহত থাকে। (সূরা : কদর ৯৭: ১-৫)।

এ রাতের ইবাদতের ব্যাপারে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) স্ত্রী-পরিবারসহ সারা জেগে থেকে ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করতেন। তিনি রমজানের শেষ দশকের ইবাদতের মতো এতো বেশি পরিশ্রম অন্য সময় করতেন না।

মহান আল্লাহ তায়ালা এ রাতকে বরকতময় রাত হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে- ‘নিশ্চয় আমি ইহা (কোরআন) কে এক বরকতময় রাতে নাজিল করেছি।’ (সূরা : দুখান, আয়াত : ৩)।

আরও পড়ুন:  গোয়াইনঘাটে ট্রাক্টর উল্টে নিহত ২

এ রাতের বরকতের ফজিলত বর্ণনায় প্রিয় নবী ঘোষণা করেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সাওয়াবের আশায় এ (লাইলাতুল কদরে) রাতে ইবাদত-বন্দেগি করে, তার আগের সব ছোট গোনাহ মাফ হয়ে যায়।’

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী এ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা মুসলিম উম্মাহর জন্য একান্ত জরুরি। এ রাতের সন্ধান করতে প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর।’

তাই শুধুমাত্র রমজানের ২৭ তারিখ লাইলাতুল কদর উদযাপন না করে শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে তা অনুসন্ধান করা উচিত।

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা অন্য হাদিসে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিগুলোতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর।’

হাদিসের ঘোষণার প্রেক্ষিতে মুসলিম উম্মাহর উচিত, রমজানের শেষ দশকের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখ রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা।

এ রাতের (লাইলাতুল কদর) বিশেষ দোয়া বা আমল :

উম্মুল মুমিনিন হজরত হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসূল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আপনি বলে দিন, আমি যদি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি, তাতে আমি কি (দোয়া) পড়বো?

প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি বলো-

আরবি :

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
বাংলা উচ্চারণ :

‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আ’ফুউবুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাআ’ফু আন্নি।’

অর্থ :

‘হে আল্লাহ! অবশ্যই তুমি ক্ষমাশীল, দয়াময়, তুমি ক্ষমা করাকে ভালোবাস। অতএব, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। (সুনানে ইবনে মাজাহ : হাদিস- ৩৮৫০ সহিহ, আহমাদ : হাদিস- ৬/১৮২, সহিহ-আলবানি, তিরমিযী : হাদিস-৩৫১৩)।

এক কথায় পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাতের সব ইবাদতই আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন। আর এ রাতের সব ইবাদতই ফজিলতপূর্ণ। এ রাতে নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দরূদ, তাওবা-ইসতেগফারের গুরুত্ব অনেক বেশি।

আরও পড়ুন:  মৌলভীবাজারে স্বাস্থ্যকর্মীসহ করোনা আক্রান্ত ১১, ২ জনের মৃত্যু

তাই মহান আল্লাহর ক্ষমা ও জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি লাভে লাইলাতুল কদরের উদ্দেশ্যে রমজানের বেজোড় রাতগুলো জেগে উল্লেখিত ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে অতিবাহিত করার জরুরি।

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআন ও সুন্নায় ঘোষিত মর্যাদাবান রাত লাইলাতুল কদরে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহকে পরকালের কামিয়াবি ও জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তির তাওফিক দান করুন। আমিন।

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০