হাবিবুর রাহমান:: শবে কদর মহিমান্বিত একটা রজনী। এ রাত্রিতে প্রশান্তির অপার্থিব বন্যায় প্লাবিত হয় বিশ্বজাহান। আসমানের ফেরেশতারা নেমে আসেন পৃথিবীতে। চারদিকে আলোর উৎসবে শামিল হন এই রাতে।
তবে এ গুরুত্বপূর্ণ রাতটি অনির্দিষ্ট। অনেকেই মনে করেন ২৭ রমজানের রাতে লাইলাতুল কদর নির্ধারিত। এটা সঠিক নয়। কেননা রাসূল (সা.) এটা নির্দিষ্ট করে বলেন নাই। রাসূল (সা.) বলেন,
عن عبادة بن الصامت -رضي الله عنه-: خَرَجَ النبيُّ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ لِيُخْبِرَنَا بلَيْلَةِ القَدْرِ فَتَلَاحَى رَجُلَانِ مِنَ المُسْلِمِينَ فَقَالَ: خَرَجْتُ لِأُخْبِرَكُمْ بلَيْلَةِ القَدْرِ، فَتَلَاحَى فُلَانٌ وفُلَانٌ، فَرُفِعَتْ وعَسَى أنْ يَكونَ خَيْرًا لَكُمْ
অর্থাৎ-হজরত উবাদা ইবনে সামেত (রা.) বলেন, একবার নবী করীম (সা.) আমাদেরকে শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখ জানানোর জন্য বাহির হলেন। তখন দুজন মুসলমানের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছিল। হুজুর (সা.) বলেন, আমি তোমাদেরকে শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখ জানানোর উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলাম। কিন্তু ওমুক দুই লোকের মাঝে ঝগড়া হচ্ছিলো। তাই তা ওঠিয়ে নেয়া হয়েছে। হয়তো তা ওঠিয়ে নেয়ার মধ্যেও কোনো কল্যাণ রয়েছে। অতএব তোমরা নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাত্রিগুলোতে তা তালাশ করো। (সহীহ বোখারী)
অপর হাদিসে এসেছে, হযরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা:) বলেন, তোমরা রমজানের শেষ দশ বেজোড় রাত্রে শবে কদর তালাশ করো। (বুখারী)
কিছু উলামায়ে কেরাম কতেক আলামতের ভিত্তিতে ২৭ রমজানের রাতকে কদর হওয়ার সম্ভাবনার কথা বর্ণনা করছেন। তবে অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে কদরের রাতকে শুধু ২৭ রজনীতে নির্ধারিত না করে রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর হাদিস অনুযায়ী শেষ দশকের বিজোড় রাত্রিসমূহে তালাশ করা দরকার।
শবে কদর লাভ করার সবচেয়ে উত্তম উপায় হল শেষ দশকে ইতিকাফ করা। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা শেষ দশকে শবে কদর অন্বেষণ কর।’ অন্য রেওয়ায়েতে আছে, ‘তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিগুলোতে শবে কদর তালাশ কর।’-সহীহ বুখারী হাদীস : ২০১৭; ২০২০
সুতরাং বুঝা গেল যে, শেষ দশকে যে ইতিকাফ করবে তার শবে কদর নসীব হবে।