
সিলেটের বার্তা ডেস্ক:: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে দেশে গত একদিনে গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৮টা থেকে রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) আরও ১৪ জনের মৃত্যুর খবর ও নতুন করে ১ হাজার ২শ’ ৭৩ জনের শরীরে এই ভাইরাসটির উপস্থিতি ধরা পড়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ২২ হাজার ২৬৮ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন আরও ১৪ জন। মৃতদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ ও একজন নারী। জেলাভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকার ৯ জন ও চট্টগ্রামের ৫ জন। এ নিয়ে মোট প্রাণহানি হলো ৩২৮ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২৫৬ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৪ হাজার ৩৭৩ জন।
রোববার (১৭ মে) দুপুরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
মোট ৪২টি ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করা হয়ে থাকে যার মধ্যে ঢাকার ২১টি এবং ঢাকার বাইরে ২১টি। গত ২৪ ঘন্টায় মোট ৮ হাজার ৫৭৪ টি নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ৮ হাজার ১১৪টি। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪০৮ টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনের নেয়া হয়েছে ২৭৬ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনের আছেন ৩ হাজার ২৪৮ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৪ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৬০৪ জন।
যারা কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন তারা সম্পূর্ণ সুস্থ এবং স্বাভাবিক। তারা স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারবেন। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ থাকবে, তারা যেন এখনও নিজ ঘরে থাকেন।
শনিবার (১৬ মে) শনাক্ত হয় ৯৩০ ও মারা যায় ১৬ জন।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দিনে ১০ হাজার নমুনা পরীক্ষার টার্গেট করা হলেও তা এখনও বাস্তবায়ন করা যায়নি।
কর্মকর্তারা বলেছেন, নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে লোকবলের সমস্যার কারণে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিলম্ব হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলেছেন, বাংলাদেশে এই পরীক্ষা শুরুর পর দুই মাসেও এর সংখ্যা বাড়াতে না পারলে সংক্রমণের সঠিক পরিস্থিতি বোঝা যাবে না।
গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা শুরু করে। ৮ মার্চ দেশে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম কোনও করোনা রোগী মারা যায়।
দেশে গত ২৮ এপ্রিল করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৫৪৯ জন। এরপর ২৯ এপ্রিল ৬৪১ জন, ৩০ এপ্রিল ৫৬৪ জন, ১ মে ৫৭১ জন, ২ মে ৫৫২ জন, ৩ মে ৬৬৫ জন, ৪ মে ৬৮৮, ৫ মে ৭৮৬ জন, ৬ মে ৭৯০ জন, ৭ মে ৭০৬ জন, ৮ মে ৭০৯ জন এবং ৯ মে ৬৩৬ জন, ১০ মে ৮৮৭ জন, ১১ মে ১০৩৪ জন, ১২ মে ৯৬৯, ১৩ মে সর্বাধিক ১ হাজার ১৬২ জন, ১৪ মে ১০৪১, ১৫ মে ১২০২ ও ১৬ মে ৯৩০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়।
২৪ ঘণ্টায় আরও চার হাজার ২০০ প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা এখন তিন লাখ সাড়ে ১২ হাজার। মোট আক্রান্ত ৪৭ লাখের বেশি মানুষ। নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৯৪ হাজার।
সর্বাধিক মৃত্যু দেখা যুক্তরাষ্ট্রে, শনিবার (১৬ মে) মৃতের সংখ্যা নেমে আসে এক হাজারে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃত্যু ৯০ হাজারের কাছাকাছি। নতুন ২২ হাজার সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৫ লাখ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রাণহানি হয়েছে ব্রাজিলে। আট শতাধিক মৃত্যুতে প্রাণহানি ছাড়িয়েছে ১৫ হাজার ৬০০। আক্রান্ত দু’লাখ ৩৩ হাজারের বেশি।
এদিন সর্বোচ্চ মৃত্যু রেকর্ড করেছে রাশিয়া। প্রাণ গেছে ১১৯ জনের। আক্রান্ত প্রায় পৌনে তিন লাখ মানুষ।
পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে ইউরোপের দেশগুলোতে। আড়াই মাসে সর্বনিম্ন মৃত্যু দেখেছে ইতালি। মহামারি শুরুর পর প্রথমবার, কোভিড-১৯ এ নতুন করে একজনও আক্রান্ত হয়নি ফ্রান্সে।