আজ শুক্রবার, ১৩ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি, বিকাল ৪:৩৯

এতেকাফ: ঈমান বৃদ্ধির পাঠশালা

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত মে ১৫, ২০২০, ০৩:৩৩ অপরাহ্ণ
এতেকাফ: ঈমান বৃদ্ধির পাঠশালা

আজ জুমাবার, ২১ রামাযান-১৪৪১ হিজরি মোতাবেক ১৫ মে-২০২০ ইংরেজি। নাজাত দশকের প্রথম দিন আজ।

সিলেটের বার্তার নিয়মিত আয়োজন রামাযান প্রতিদিনে আজ ‘এতেকাফ’ নিয়ে লিখছেন জামেয়া ফরিদাবাদ সিলেটের শিক্ষক-লুকমান হাকিম

এতেকাফের নিয়াতে পুরুষগণ মসজিদে এবং মহিলাগণ ঘরের মধ্যে নামাযের নির্দিষ্ট জায়গায় অবস্থান করাকে এতেকাফ বলা হয়।

এক. হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রামাযানের শেষ দশকে এতেকাফ করতেন। ইন্তিকাল পর্যন্ত তাঁর এ আমল অব্যাহত ছিল। ইন্তিকালের পর তাঁর স্ত্রীগণ গুরুত্বের সাথে এতেকাফে বসতেন। (বুখারী-মুসলিম)।

দুই. হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতেকাফ গ্রহণকারীদের সম্পর্কে বলেছেন, এরা (এতেকাফ উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থানের দরুণ) গুনাহ্ হতে বেঁচে আছে এবং সৎকর্মশীল লোকদের মত তার সৎকর্মের হিসাব চলতে থাকে। (ইব্নে মাজাহ্)। অর্থাৎ মানুষ যখন এতরকাফের নিয়াতে মসজিদে বন্দী থাকে, তখন সে তাসবীহ্ ও তিলাওয়াত প্রভৃতি দ্বারা যদিও অনেক নেকী লাভ করে, কিন্তু অনেক সময় আরো বড় নেকী লাভ হতে অপারগ থাকে। যেমন, সে পীড়িত লোকের দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারে না, গরীব-মিসকীন, বিধবা ও এতিমের ফরিয়াদে সাড়া দিতে পারে না, মৃত ব্যক্তির জানাযা ও দাফন-কাফনে শামিল হতে পারে না। অথচ এই কাজগুলো বড় সাওয়াবের। তাই হাদীসে বলা হয়েছে, এতেকাফ গ্রহণকারীর পক্ষে সকল কাজ সম্ভব না হলেও তার আমল নামায় সাওয়াবগুলো লেখা হয়।

তিন. হযরত আয়েশা রাযি. হতে বর্ণিত, রামাযানের শেষ দশকের রাতগুলোয় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা রাত জেগে থাকতেন এবং পরিবার-পরিজনদেরও জাগ্রত রাখতেন আর কোমর বেঁধে ইবাদত-বন্দেগী করতেন। (বুখারী-মুসলিম)।

চার. অপর হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি মাহে রামাযানের (শেষ) দশ দিনে এতেকাফ পালন করবে, তার এই আমল (সাওয়াবের ক্ষেত্রে) দুই হজ্ব এবং দুই উমরার সমতুল্য হবে। (তাবরানী, কানযুল উম্মাল)।

পাঁচ. আরেকটি হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াবের নিয়াতে এতেকাফ করবে, তার অতীত গুনাহ্ ক্ষমা করা হবে। (দায়লামী)।

আরও পড়ুন:  কুরআনের জন্য জীবন বিলিয়ে দিতে চান হাফেজ ফখরুল ইসলাম

ছয়. আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রামাযানের শেষ দশদিন এতেকাফ করতেন। তবে যে বছর পরলোকগত হন তিনি বিশ দিন এতেকাফ করেছেন। (বুখারী)

আট. রাসূল বলেন: আমি কদরের রাত্রির সন্ধানে প্রথম দশ দিন এতেকাফ করলাম। এরপর এতেকাফ করলাম মধ্যবর্তী দশদিন। অত:পর ওহি প্রেরণ করে আমাকে জানানো হল যে তা শেষ দশদিনে। সুতরাং তোমাদের যে এতেকাফ পছন্দ করবে, সে যেন এতেকাফ করে। ফলে, মানুষ তার সাথে এতেকাফ যাপন করল।

নয়. হযরত ইবনে ওমর রা: বর্ণিত হজরত মুহাম্মদ সা: রামাযানের শেষ ১০ দিন এতেকাফ করতেন। (বুখারী)

দশ. হযরত ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত রাসূলে পাক সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এতেকাফ করবে, আল্লাহ তায়ালা তার এবং জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তিনটি পরিখার দূরত্ব সৃষ্টি করবেন, প্রত্যেক পরিখার প্রশস্ততা দুই দিগন্তের চেয়েও বেশি। (শোয়াবুল ঈমান)

এগারো. হযরত আলী বিন হোসাইন রা: নিজ পিতা থেকে বর্ণনা করেন, মহানবী সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি রামাযানে ১০ দিন এতেকাফ করে, তা দুই হজ ও দুই ওমরাহর সমান। (বায়হাকি)

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০