মুফতি জিয়াউর রহমান, অতিথি লেখক:: মাহে রামাযানের রোযা আল্লাহ তাআলা আমাদের উপর ফরয করেছেন৷ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম স্তম্ভ বানিয়ে দিয়েছেন৷ পবিত্র কুরআনে
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: হে মু’মিনগণ! তোমাদের জন্য রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার। (সুরা বাকারা: ১৮৩)
আরও ইরশাদ করেন- সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এ মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন রোযা পালন করে। (সুরা বাকারা: ১৮৫)
তাহলে বোঝা গেলো রামাযান মাসের সবচে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো রোযা পালন করা৷ তবে এই মাসে আরেকটি বিশেষ আমল রয়েছে৷ তা হলো, তারাবিহ’র নামায৷ অত্যন্ত ফযিলতপূর্ণ একটি আমল৷ তবে রামাযানের রোযার মতো এটি ফরয নয়, বরং সুন্নাত৷
হাদিসে এই নামাযের ফযিলত বর্ণিত হয়েছে-
যে ব্যক্তি পূর্ণ ইমান ও সওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে রমজান মাসের রাতে কিয়াম আদায় করবে অর্থাৎ তারাবির নামাজ আদায় করবে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বুখারি ও মুসলিম)
তবে আমাদের জেনে রাখা উচিত যে, রামাযান মাসের রোযা এবং তারাবিহ ভিন্ন ভিন্ন হুকুমের ভিন্ন দুটি আমল৷ রামাযানের রোযা হলো, ফরয৷ তারাবিহ হলো, সুন্নাত৷ রোযা স্বতন্ত্র ইবাদত, তারাবিহ স্বতন্ত্র ইবাদত৷ হাদিসে এসেছে-
নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তোমাদের প্রতি রমযান মাসের রোযাকে ফরয করেছেন। আর আমি তোমাদের প্রতি কিয়াম তথা তারাবীহ নামাযকে সুন্নত করলাম।
(নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ, মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ,মুসনাদে বাযযার)
তাই কেউ যদি কোনো কারণবশত তারাবিহ’র নামায আদায় করতে না পারে, তবুও সে রোযা রাখবে৷ কেননা রোযা ফরয এবং স্বতন্ত্র ইবাদত৷ ঠিক তদ্রূপ কেউ যদি শরীয়ত সমর্থিত কোনো ওজরের কারণে রোযা রাখতে না পারে, তবুও সে তারাবিহ পড়বে৷ কেননা তারাবিহ সুন্নাতে মুআক্কাদা ও একটি স্বতন্ত্র ইবাদত৷
তারাবিহ পড়তে না পারলে রোযা ত্যাগ করবে না৷ রোযা রাখা সম্ভব না হলেও যথাসম্ভব তারাবিহ ত্যাগ করবে না৷ কেননা দুটি ভিন্ন ভিন্ন ইবাদত৷ সওয়াবের প্রতিশ্রুতিও ভিন্ন ভিন্নভাবেই এসেছে৷ আল্লাহ তাআলা আমাদের আমলের তাওফিক দান করুন৷ আমীন৷
লেখক:: ইমাম ও খতিব: আম্বরখানা জামে মসজিদ