হাবিবুর রাহমান:: মাহে রমজান রোজা রাখার মাস। এ মাস সিয়াম-সাধনার মাস। আত্মসংযমের মাস এটি। উপবাস থেকে শিক্ষা অর্জনের মাস রমজান।
রমজানের রোজা ফরজ। তার প্রতি অবিচল আস্থা বিশ্বাস স্থাপন ঈমানের অন্যতম বিষয়। ইচ্ছাকৃতভাবে রমজানের রোজা ছেড়ে দেয়া মারাত্মক অপরাধ। তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। যেমন-হাদিস শরীফে এসেছে,
عن أبي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ:(بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ إِذْ أَتَانِي رَجُلَانِ فَأَخَذَا بِضَبْعَيَّ فَأَتَيَا بِي جَبَلًا وَعْرًا فَقَالَا لِيَ: «اصْعَدْ» فَقُلْتُ: «إِنِّي لَا أُطِيقُهُ»، فَقَالَا: «إِنَّا سَنُسَهِّلُهُ لَكَ»، فَصَعِدْتُ حَتَّى إِذَا كُنْتُ فِي سَوَاءِ الْجَبَلِ إِذَا أَنَا بأَصْوَاتٍ شَدِيدَةٍ فَقُلْتُ: «مَا هَذِهِ الأَصْوَاتُ؟» قَالُوا: «هَذَا عُوَاءُ أَهْلِ النَّارِ»، ثُمَّ انْطُلِقَ بِي فَإِذَا أَنَا بِقَوْمٍ مُعَلَّقِينَ بِعَرَاقِيبِهِمْ، مُشَقَّقَةٌ أَشْدَاقُهُمْ، تَسِيلُ أَشْدَاقُهُمْ دَمًا، قَالَ: قُلْتُ: «مَنْ هَؤُلَاءِ؟» قَالَ: «هَؤُلَاءِ الَّذِينَ يُفْطِرُونَ قَبْلَ تَحِلَّةِ صَوْمِهِمْ} رواه ابنُ خزيمة وابنُ حبَّان
অর্থাৎ-হযরত আবু উমামা রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, অমি ঘুমিয়ে ছিলাম। স্বপ্নে দেখলাম আমার নিকট দুই ব্যক্তি আগমন করল। তারা আমার বাহুদ্বয় ধরে আমাকে এক দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে এল। তারপর আমাকে বলল, আপনি পাহাড়ের উপর উঠুন। আমি বললাম, আমি তো উঠতে পারব না। তারা বলল, আমরা আপনাকে সহজ করে দিব। আমি উপরে উঠলাম। যখন পাহাড়ের সমতলে পৌছালাম, হঠাৎ ভয়ঙ্কর আওযাজ শুনতে পেলাম। অমি বললাম, এ সব কিসের আওয়াজ? তারা বলল, এটা জাহান্নামীদের আর্তনাদ। তারপর তারা আমাকে নিয়ে এগিয়ে চলল। হঠাৎ কিছু লোক দেখতে পেলাম, যাদেরকে তাদের পায়ের মাংসপেশী দ্বারা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এবং তাদের মুখের দুই প্রান্ত ছিড়ে ফেলা হয়েছে এবং তা থেকে রক্ত ঝরছে। আমি বললাম, এরা কারা? তারা বলল, যারা ইফতারের সময় হওয়ার আগেই রোযা ভেঙ্গে ফেলে। (-সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ১৯৮৬; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৭৪৪৮)
অন্যত্র রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘বিনা ওজরে রমজানের সিয়াম ত্যাগকারী অবিশ্বাসীরূপে পরিগণিত’ (ফিকহুস সুন্নাহ, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪৩৪)।
বুখারী শরীফের মধ্যে এসেছে,যে ব্যক্তি শরিয়তি ওজর ছাড়া এ মাসের একটি রোজাও ছেড়ে দেবে, সে যদি সারা জীবনও সিয়াম পালন করে; তবুও তার পাপের খেসারত হবে না’ (বুখারি)।
তাই আমাদের জন্য উচিত হলো, রমজানের রোজা যথাযথ আদায় করা। ওজর ছাড়া রোজা থেকে বিরত না থাকা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের রোজা যথযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।