লুকমান হাকিম:: আজ নবম রামাযান। রবিবার। সামনের আয়াতে সিয়ামের কিছু বিধান আলোচিত হয়েছে।
أَيَّامًا مَّعْدُودَاتٍ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُ وَأَن تَصُومُواْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ.
গোণা-গুণতি কয়েক দিন (রোযা রাখতে হবে)। তারপরও যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হয় বা সফরে থাকে, তবে অন্য সময়ে সে সমান সংখ্যা পূরণ করবে। যারা এর শক্তি রাখে, তারা একজন মিসকীনকে খাবার খাইয়ে (রোযার) ফিদয়া আদায় করতে পারবে। এছাড়া কেউ যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোনও পুণ্যের কাজ করে, তবে তার পক্ষে তা শ্রেয়। আর তোমাদের যদি সমঝ থাকে, তবে রোযা রাখাই তোমাদের জন্য বেশি ভাল।
রোযা রাখা হালকা সহজ আর লঘু করেছেন (أَيَّامًا مَّعْدُودَاتٍ) ‘গোণা-গুণতি কয়েক দিন’ বলে। শিশুকে যেমন মা-বাবা সান্ত্বনা দেন। বান্দাকে কোমলভাবে হিম্মত জোগাচ্ছেন।
অল্পকয়েকদিনের জন্য রোযা ফরয করেছেন। বান্দা এই ক’দিনে সিয়াম, কিয়াম, তিলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করবে। ইখলাসের সাথে এসব আমল করলে, প্রতিদানস্বরূপ রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির হকদার হবে।
আমলটা যেমন সহজ, তেমনি খুব বেশিদিন করতে হবে না। মাত্র গোনা-গুণতি কিছুদিন (أَیَّاما مَّعۡدُودَت)। বান্দা, হিম্মত করো। দেখতে দেখতে একটা মাস শেষ হয়ে যাবে। চিন্তার কিছু নেই। রাব্বে কারীম বান্দার জন্য সিয়ামের আমলকে সহজ করে দেখিয়েছেন। ‘আইয়াম ও মা‘দূদাত’ দু’টি শব্দই কম অর্থজ্ঞাপক বহুবচন (جَمْعُ القِلَّة)। বান্দাকে অভয় দেয়ার কোনও উপায়ই রাব্বে কারীম বাকি রাখেননি। মাত্র ক’টা দিনই তো, রোজাগুলো হিম্মত করে রেখে ফেল বান্দা আমার।
রামাযানের দিন অল্প হলেও, প্রাপ্তি কম নয়। শুধু আমলগুলো ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে করতে হবে। নবীজি রমাদানে তিনটি বিষয় আলাদা করে গুরুত্বের সাথে বলেছেন,
১: সিয়াম পালন
যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে রমাদানের রোজা রাখবে, তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে (আবু হুরায়রা রা. বুখারী: ২০১৪)।
২: কিয়াম আদায়
যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে রমাদানে কিয়াম (সালাত আদায়) করবে, তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে (আবু হুরায়রা রা.। বুখারী: ৩৮)।
৩: কদরের কিয়াম
যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে কদরের রাতে কিয়াম (সালাত আদায়) করবে, তার অতীতে গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে (আবু হুরায়রা রা. বুখারী: ২০১৪)।