লুকমান হাকিম: আজ ৭ রামাযান, শুকবার-১৪৪১ হিজরি। রহমতের সপ্তম দিন আজ।
দান-সদকা সর্বাবস্থাতেই উৎকৃষ্ট আমল, কিন্তু রামাযানে তার গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। হাদীস শরীফে এসেছে- নবী আ. দুনিয়ার সকল মানুষ অপেক্ষা অধিক দানশীল ছিলেন। রামাযান মাসে তাঁর দানের হস্ত আরো প্রসারিত হত। (বুখারী: ১৯০২)
এ মাস কুরআন অবতরণের মাস। রাসূলুল্লাহ সা. জিবরীল আ.-এর সাথে রামাযানের প্রত্যেক রাতে কুরআন মজীদ দাওর করতেন। হাদীস শরীফে এসেছে- হযরত জিবরীল আ. রামাযানের শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক রাতে রাসূলুল্লাহ সা. এর সাথে সাক্ষাত করতেন এবং রাসূলুল্লাহ সা. তাঁকে কুরআন মজীদ শোনাতেন। (বুখারী: ১৯০২) অতএব আমাদের প্রত্যেকের উচিত রামাযানে অধিক পরিমাণে কুরআন তেলাওয়াত করা।
অন্তত একবার হলেও কুরআন মজীদ খতম করা। সালাফে সালেহীনের জীবনী আলোচনা করলে দেখা যায় যে, তাঁরা এবং পরিবারের সদস্যগণ প্রত্যেকে রামাযানে বহুবার কুরআন মজীদ খতম করতেন।
এ মাসে শয়তান শৃংখলাবদ্ধ থাকে। এই সুযোগে অধিক পরিমাণে নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন করা যায়। এ মাসে যে কোনো ইবাদত নিয়মিত করতে তেমন কোনো বেগ পেতে হয় না এবং পরবর্তীতে তা সহজেই অভ্যাসে পরিণত হয়। সুতরাং যিকির-আযকারের সঙ্গে অধিক পরিমাণে নফল নামায আদায় করা উচিত। অন্তত বিভিন্ন সময়ের নফল নামাযগুলো আদায় করা যেমন-ইশরাক, চাশত ও তাহাজ্জুদ ইত্যাদি। সাহরীতে উঠলেই দু’চার রাকাত তাহাজ্জুদ নামায সহজেই পড়া যায়। বছরের অন্য দিনের মতো কষ্ট করার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু অমনোযোগী হওয়ার ফলে কিংবা সাহরীতে অতি ভোজনের কারণে তাহাজ্জুদ আদায়ের সুযোগ হয়ে ওঠে না।
এ মাস রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও জান্নাত লাভের মাস। তাই বেশি বেশি আল্লাহ তাআলার শরণাপন্ন হয়ে কান্না-কাটি করে দুআ করা একান্ত কাম্য।
যে ব্যক্তি রামাযান পেয়েও স্বীয় গুনাহসমূহ ক্ষমা করাতে পারল না তার উপর জিবরীল আ. ও দয়ার নবী সা. অভিসম্পাত করেছেন। তাই জীবনের কৃত গুনাহের কথা স্মরণ করে বেশি বেশি তওবা ইস্তেগফার করা এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে ক্ষমা মঞ্জুর করিয়ে নেওয়ার এটিই উত্তম সময়। বিশেষ করে ইফতার ও তাহাজ্জুদের সময় আল্লাহ তাআলার দরবারে ক্ষমা চাওয়া এবং দুআ করা উচিত।