আন্তর্জাতিক বার্তা:: করোনায় আক্রান্ত ভারত দেশ। মারা যাচ্ছেন মানুষজন। মৃতদের আত্মীয়-স্বজনরা বুকফাটা আর্তনাদ করছেন। অনেকে আবার ভয়ে কাছে আসছেন না।
এমনই এক মুহুর্তে ধর্মীয় পরিচয় না দেখে লাশ কাঁধে নেওয়ার জন্য আহবান জানালেন পশ্চিমবঙ্গের ইমামরা।
দিল্লি তবলিগ জামাতে অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ নিয়ে ভারতের এক শ্রেণির মানুষ যখন সাম্প্রদায়িক উ¯কানিতে মেতে উঠেছেন ঠিক সেই সময়ে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিরা এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন মুসলিমদের উদ্দেশে। করোনা আতঙ্কে মানুষ এমনই আত্মকেন্দ্রীক হয়ে পড়েছে যে, স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও দেহ সৎকার করতে গিয়ে নানা বাধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। অধিকাংশই মৃতদেহ দাহ বা কবরস্থ করতে এগিয়ে আসছেন না। স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও করোনা সন্দেহে দেহ সৎকার কিংবা কবরস্থ করার লোক পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সোমবার রাতে কলকাতা মেডিকেল কলেজে মৃত এক নারীর লাশ নিতে অস্বীকার করেছেন তার পরিবারই। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুসলিম সমাজের প্রধানদের অন্যতম সংগঠন বঙ্গীয় ইমাম অ্যাসোসিয়েশন পরিস্থিতি মোকাবিলায় এগিয়ে এসে সামাজিক মাধ্যমে বার্তা দিয়েছেন। মুসলিমদেও উদ্দেশ্যে তাদেও আবেদন, মৃতের ধর্মীয় পরিচয় না দেখেই দেহ কাঁধে তুলে নিন। অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহম্মদ ইয়াহিয়া একটি পোস্টে লিখেছেন, দেহ কবরস্থ করা তো বটেই, এই দুঃসময়ে মৃতদেহের দাহকার্যের জন্যও অনেকে এগিয়ে আসছেন না। তাই সাধারণ মুসলিমদের কাছে বিনীত আবেদন জানিয়ে তিনি বলেছেন, মৃতের ধর্ম পরিচয় না দেখে শবদেহ কাঁধে বহন করে শ্মশান বা কবরস্থানে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করুন। ওই পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, এই কঠিন দুঃসময়ে আমাদের এক হতেই হবে।
সেইসঙ্গে তিনি চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে থাকতেও সকলের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। অবশ্য ইতিমধ্যেই অনেক জায়গাতেই হিন্দুদের মৃতদেহ বহন করতে কেউ এগিয়ে না এলেও মুসলিম যুবকরা এগিয়ে এসে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন। এদিকে ওয়াকফ বোর্ডের চেয়াারম্যান আবদুল গনি জানিয়েছেন, স্বাভাবিক মৃত্যুর শেষকৃত্য নিয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে রাজ্যের প্রায় ১৫ হাজার মসজিদের ইমামদের নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছে। রাজ্যের মানুষ এই সম্প্রীতির বার্তায় খুব খুশি।