সিলেটের বার্তা ডেস্ক:: সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় লাকি রানী নাথ কেয়া (২৩) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শাহ সিকন্দর গ্রামে ঘটেছে।
অভিযোগ উঠেছে, শশুড় বাড়ির লোকজন কর্তৃক গৃহবধূ লাকি রানী নাথ কেয়াকে (২৩) হত্যা করা হয়েছে।
এঘটনায় নিহতের বড় ভাই সাংবাদিক বিপ্লব দেবনাথ বাদী হয়ে দক্ষিন সুরমা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় লাকির স্বামী অমরেশ দেবনাথ অমরকে (৩০) প্রধান আসামী করে ৮জনের নাম উল্লেখ করা হয়। আসামীরা হলেন নিতাই দেবনাথ (৪০), ধীরেন্দ্র দেবনাথ ধীরু (৬৫), শেফালী রানী নাথ (৫৮), শিল্পী রানী নাথ (৩২) লিপি রানী নাথ (২৫), মন্টু দেবনাথ (৪৫) ও মনষা রানী নাথ (৩৭)।
নিহত লাকি রানী নাথ কেয়ার বাবার বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা পৌর শহরের জগন্নাথপুর বাসুদেব বাড়ি সংলগ্ন মন্দির বাড়ি এলাকায়। তার স্বামীর নাম অমরেশ দেবনাথ। তাদের দুই বছরের দাম্পত্য জীবনে ১০ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, নিহত লাকির স্বামী অমরেশ দেবনাথ অমরের সাথে তার বড় ভাই নিতাই দেবনাথের স্ত্রীর ছোট বোন লিপি রানী নাথের (তালতো বোন) সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের কথা গোপন রেখে পরিবারের লোকজন অমরেশ দেবনাথের সাথে ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী লাকির বিবাহ সম্পন্ন করেন। বিয়ের পরও নিহত লাকির স্বামী অমরেশ দেবনাথ ও লিপি রানী নাথের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলমান ছিল। এক সময় তাদের সম্পর্ক শারীরিক সম্পর্কে রূপ নিলে বিষয়টি লাকির নজরে আসে। এনিয়ে লাকি ও অমরেশ এর মধ্যে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি লাকি তার বাবার বাড়ির পরিবারের সদস্যদের অবগত করলে তারা অমরেশকে এবিষয়ে বুঝিয়ে সংসার করার পরামর্শ দেন। নিহত লাকি বার বার তার স্বামীকে তাদের পুত্র সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে লিপির সাথে অবৈধ সম্পর্ক চিন্ন করতে অনুরোধ করলেও এতে অমরেশ দেবনাথ কোন কর্নপাত না করে তার অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যান। ঘটনাটির দিন অর্থাৎ পহেলা এপ্রিল অনুমান সকাল ৮টা ২০ মিনিটের সময় মোবাইল ফোনে লাকি তার বড় বোন মাধবী রানী নাথকে জানান- ‘অমরেশ ও লিরপির অবৈধ সম্পর্কের বিষয় নিয়ে অমরেশ ও তার পরিবারের লোকজন লাকিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছে। তাই তাকে শ্বশুড় বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি জগন্নাথপুরে নিয়ে যান।’ এ কথা বলার সাথে সাথে লাকির মোবাইল ফোনটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরবর্তীতে ঐদিন সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে অমরেশ দেবনাথ নিহত লাকির বড়বোন মাধবী নাথের মোবাইল ফোনে ফোন করে লাকি রানী নাথ কেয়া আত্মহত্যা করেছে বলে জানায়।
খবর পেয়ে নিহত লাকির বাবার বাড়ির লোকজন তার স্বামীর বাড়ি সিলেটের দক্ষিন সুরমা থানার শাহসিকন্দর গ্রামে গেলে তাদের উপস্থিতিতে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের নিকট লাকির লাশ হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে লাকির ভাই বিপ্লব দেবনাথ ৯ এপ্রিল থানায় মামলা দায়ের করেন।