
ধর্মবার্তা:: মরণের বার্তা নিয়ে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে কঠিন এক পরীক্ষা পুরো দুনিয়ার সামনে হাজির।
এর থেকে বাঁচার উপায়-উপকরণ খোঁজতে সবাই পেরেশান। কিন্তু এর থেকে উপদেশ গ্রহণ করা ছিল সময়ের দাবি।
এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর দিকে ফিরে আসা ছিল জরুরী।
বিশ্বজুড়ে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক। অথচ পরিস্থিতির দাবি অনুযায়ী আতঙ্কের চেয়ে বেশীই উচিত ছিল আল্লাহর দিকে ফিরে আসার, আল্লাহর উপর ভরসা রাখার এবং গোনাহ ছেড়ে নেক কাজে অগ্রসর হওয়ার। বিশ্বব্যাপী আলেমগণ মানুষকে শুরু থেকে সে পরামর্শই দিয়ে আসছেন। নীচে সামাজিক মাধ্যমে পাওয়া চলমান পরিস্থিতির উপর বিশ্ববিখ্যাত আলেমদের কিছু বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছে।
জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি প্রখ্যাত দায়ী আলেম ইসমাইল বিন মূসা মেনক বলেছেন, দুশ্চিন্তা বন্ধ করুন। করোনাভাইরাস একটি পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় প্রকাশ হয়ে যাবে আমাদের কার ঈমান কতটুকু শক্তিশালী। দুঃখের বিষয় আমরা এই পরীক্ষায় ফেল করতে যাচ্ছি। মানুষের ভয় আতঙ্ক এবং আতঙ্কের কারণে বিভিন্ন পণ্য মজুদ করে রাখা ইত্যাদি কর্মকান্ড সে কথাই প্রমাণ করছে। দেখুন অন্যের বেলায় আমাদের তো সেই জিনিসই করা উচিত যা আমরা নিজেদের বেলায় নিজেদের জন্য পছন্দ করি। আমাদের তো এ অবস্থায় আল্লাহর আরও নৈকট্যশালী হওয়া উচিত ছিল।
ভারতের প্রসিদ্ধ আলেম খালেদ সাইফুল্লাহ রহমানী বলেছেন, এখন করোনা ভাইরাস পুরো দুনিয়াকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। যারা নিজেদের প্রযুক্তির উপর বড়াই করত এবং নিজেদের বিজ্ঞানকেই খোদা মনে করত তারাও এই অদৃশ্য ভাইরাস এর মোকাবেলায় নিজেদের অক্ষমতা অপরাগতার কথা স্বীকার করছে।
তিনি আরো লিখেন, আল্লাহ তাআলা এই দুনিয়ায় উপকার গ্রহণের জন্য এবং ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য উপায় অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। এইজন্যেই চিকিৎসা এবং সর্তকতা দুটির গুরুত্ব রয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এমন কোনো অসুস্থতা নেই যার প্রতিষেধক আল্লাহ অবতীর্ণ করেননি। আবু দাউদ।
তিনি আরও লেখেন, ব্যক্তিগতভাবে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যেতে পারে যে, তারা মসজিদে জামাতে শরীক হবে না। কিন্তু সামাজিকভাবে মসজিদে জামাত বন্ধ করে দেওয়া ঠিক মনে হচ্ছে না।
এদিকে আরব বিশ্বের প্রখ্যাত আলেম শায়খ ইউসুফ কারযাভী বলেছেন, আল্লাহর জিকির এমন একটি আত্মিক শক্তি এবং এমন শক্তিশালী দুর্গ যেখানে সব সময় শান্তি ও নিরাপত্তা পাওয়া যায়। যেখানে যুদ্ধের সময় শক্তি পাওয়া যায় এবং অস্থিরতার সময় স্থিরতা পাওয়া যায়। যেখানে নিরাশার সময় আশা পাওয়া যায়।
তিনি আরো লিখেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন এমন কোন রোগ নেই যার প্রতিষেধক নেই।
পাকিস্তানের প্রধান মুফতি, দারুল উলুম করাচির মুহতামিম মাওলানা রফি উসমানি বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতির সবচেয়ে বড় সমাধান হচ্ছে আল্লাহর দিকে রুজু করা। তওবা করে ফিরে আসা। গোটা মুসলিম বিশ্বের উচিত, তারা গুনাহ থেকে তওবা করবে ইস্তেগফার করবে। এবং যেসব সুন্নতকে বাস্তব জীবনে পরিত্যাগ করেছে সেগুলোকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরবে।
বিশিষ্ট হাদীস বিশারদ ড. শরীফ হাতেম আউনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রার্থনার জন্যে দিবস ঘোষণার টুইট পোস্ট করে লেখেন, মানুষের ধোঁকা খাওয়ার তো একটা সীমা থাকা উচিত। মানুষ সব সময় তার হাকীকত নিয়ে অজ্ঞ! এখন সে বুঝতে পারছে যে, সে তো তার নিজকেও রক্ষা করতে সক্ষম নয়! সে সৃষ্টিজগতের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটি জীবের কাছে কত অক্ষম! ট্রাম্প আহ্বান জানিয়েছেন, করোনার কারণে যেন দেশ ব্যাপী আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হয়।
সৌদির প্রখ্যাত দায়ী আলেম লা তাহযান বইয়ের লেখক ড. আয়েজ করনি লিখেছেন, ঘরে থাকা সময়গুলো বিভিন্ন উপকারী কাজে কাটান। নামাজ, বিভিন্ন দ্বীনী আলোচনা, মা-বাবার সেবা, পরিবারকে সময় দেয়া, তিলাওয়াত, বিভিন্ন দ্বীনী ও উপকারী বিষয় পাঠ ইত্যাদিতে কাটান। চোখ কান মুখের হেফাজত করুন।