মরিচ, হলুদ, পাঁচফোরন। এসব দিয়ে ঘরের রাধুনী রান্না করে থাকেন। ভাবছেন এগুলোতে আবার ঔষুদী গুন থাকবে কী করে। হাঁ চোখ ছানাবড়া লাগারই কথা।
আমাদের দেশীয় খাবারের বড় একটা অংশ জুড়েই আছে বিভিন্ন ধরনের মসলার ব্যবহার। বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উদ্ভিজ উপাদানের বিভিন্ন অংশ থেকে আসা প্রায় সকল মসলারই রয়েছে আলাদা ও বৈশিষ্ট্যপূর্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা। অহরহ ব্যবহার করা হয় এমন ছয়টি মসলার উপকারী দিকগুলো জানুন আজকের ফিচার থেকে।
দারুচিনি
বেশ কিছু গবেষণার ফল প্রমাণ করেছে, দারুচিনি গ্লুকোজ, লিপিডস ও রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। খাবার খাওয়ার পর দারুচিনির চা পানে তা খাদ্য উপাদান থেকে শোষিত চিনির মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া দারুচিনিতে থাকা অ্যান্টি-ক্যানসার উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
মরিচ গুঁড়া
মরিচ গুঁড়া থেকে পাওয়া যায় ক্যাপসাইসিন, যা অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য অন্যতম পরিচিত। মরিচ গ্রহণের উপর হওয়া একটি পরীক্ষার ফল থেকে জানা যায়, সপ্তাহে ৬-৭ বার ঝাল খাবার গ্রহণে প্রিম্যাচিউর চাইল্ড ডেথের সম্ভাবনা কমে যায় অন্তত ১৪ শতাংশ পর্যন্ত। এছাড়াও ঝাল খাবার গ্রহণে হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব ও শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা কমে যায় অনেকখানি।
রসুন
রসুন সবচেয়ে বেশি উপকারী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও হৃদরোগের সম্ভাবনা কমাতে। বিশেষত উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমিয়ে আনতে প্রাকৃতিক এই উপাদানটি চমৎকার কার্যকরী। রসুন অনেক সময় প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয় তার উপকারিতার জন্য। গবেষণার ফল থেকে দেখা গেছে, রসুনের রস অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে ও ক্যানসার প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে।
হলুদ
হলুদে উপস্থিত অ্যাকটিভ উপকারী উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধ, প্রদাহ তৈরিকারী রোগ ও নিউরোলজিক্যাল রোগ প্রতিরোধ করে। প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে হলুদ রাখতে পারলে আর্থ্রাইটিস ও আলঝেইমারের মতো বড় ধরনের রোগ থেকেও দূরে থাকা সম্ভব হবে।
শুধু রান্নাতেই নয়, হলুদের চা কিংবা দুধের সাথে হলুদ মিশিয়েও পান করা যায়। এতে করে শরীর সরাসরি হলুদ ও হলুদের উপকারিতা পাবে।
আদার সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক হলো, পেটের প্রায় সকল ধরনের সমস্যা কমাতেই আদা উপকারী। এছাড়া হলুদের মত আদাও প্রদাহ কমাতে ও ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর মসলা। নতুন এক গবেষণার ফল থেকে নিশ্চিত করেছে, ক্যানসার কোষ বৃদ্ধির মাত্রা হ্রাস করতে কিছু ক্ষেত্রে কেমোথেরাপির থেকেও ভালো কাজ করে আদা।
ওরিগানো
বিভিন্ন ধরনের ইতালিয়ান ও চায়নিজ খাবার তৈরিতে ও তার ফ্লেভারে বৈচিত্র আনতে ব্যবহার করা হয় অরিগানো। ভিনদেশীয় এই মসলাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়া এতে থাকা বিশেষ উপকারী উপাদান ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে কাজ করে। পাশাপাশি অরিগানোর অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান অ্যালার্জি, ফ্লু, ঠান্ডা ও বমিভাব দূর করতে উপকারী।