এম এ কাদির বালাগঞ্জ থেকে:: সিলেট জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের অপসারন ও বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র ঘোষিত আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে উপজেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীদের উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৭ মার্চ) বিকেল ৩টায় বালাগঞ্জ বাজারস্থ উপজেলা বিএনপি’র দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম. মুজিবুর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে জেলা বিএনপি’র আহবায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে যখন প্রিয় নেত্রী, বাংলাদেশের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, দেশের জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে কারাগারে দিনযাপন করছেন।
ঠিক তখন জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের উচিৎ ছিল সকল গ্রæপ ও মতের উর্ধ্বে উঠে শক্তিশালী একটি সংগঠন গড়ে তুলে আগামী দিনে নেত্রীর মুক্তির আন্দোলন তরান্বিত করা। কিন্তু আমরা অত্যন্ত দু:খের সাথে জানাচ্ছি যে, বর্তমান সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার আহবায়ক হিসাবে মনোনীত হওয়ার পর থেকে তার কার্যকলাপ সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ে বিভিন্ন ধরণের বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। তিনি আহবায়ক হওয়ার পর পরই প্রথম সভায় বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে সিলেট নিয়ে উপজেলা আহবায়ক নির্ধারণ কল্পে গোপন ভোটাভোটির পরিবর্তে প্রকাশ্যে ভোটাভোটির ব্যবস্থা করায় গ্রæপিং তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌছে দিয়েছেন। বালাগঞ্জ উপজেলায় দুই জন আহবায়ক প্রার্থী ছিলেন। তার মধ্যে বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মো. গোলাম রব্বানী ও উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুর রশিদের মধ্যে প্রকাশ্যে ভোটাভোটি হয়। এতে গোলাম রব্বানী পেয়েছিলেন ১১ ভোট ও আব্দুর রশিদ পেয়েছিলেন ০৬ ভোট। পরবর্তী সময়ে তার মনোনীত পছন্দের প্রার্থী পাস না করায় বিভিন্ন অজুহাতে কেন্দ্রের দোহাই দিয়ে তিনি তার নগ্ন গ্রুপিং এর বহি:প্রকাশ ঘটান।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদির লুনার অনুরোধে ও দয়ায় কামরুল হুদা জায়গীরদার সভাপতি নির্বাচিত হন। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বালাগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের নেত্রীবৃন্দের উপরে আক্রোশান্বিত হয়ে দলীয় কোনো কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেননি ও কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করেননি । পরবর্তী সময়ে তিনি জেলার আহবায়ক নির্বাচিত হলে বালাগঞ্জের তৃণমূল নেতাকর্মীর উপর তিনি প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠেন এবং গত ২৯ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত বালাগঞ্জ উপজেলা আহবায়ক কমিটিতে দলের ত্যাগী ও অবৈধ সরকারের বিভিন্ন মামলা হামলার আসামী সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে বাদ দিয়ে উনার মনগড়া পছন্দ সই ব্যক্তি বিশেষকে আহবায়ক কমিটিতে স্থান করে দেন। যারা দলীয় কোনো কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেননি ও কোনো মামলার আসামীও নই। কামরুল হুদা জায়গীরদার যাকে আহবায়ক নির্বাচিত করেছিলেন উনার বিরুদ্ধেও কোনো মামলা নেই। তিনি আওয়ামীলীগের সাথে আতাত করে ব্যবসা বাণিজ্য করছেন। জেলার আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য দলের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে তার মনগড়া কমিটি করেছেন। ইতিমধ্যে সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ গত ০৩ মার্চ জেলা আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের অপসারণ দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। অদক্ষ, অযোগ্য, নগ্ন গ্রুপিংয়ে সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের এহেন কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ৬টি ইউনিয়নের তৃণমূল বিএনপির নেতৃবৃন্দ ফুসে উঠেছেন।
আমরা এসব অনিয়ম ও গ্রুপিংয়ের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি এ ধরনের অদক্ষ, অযোগ্য, নগ্ন গ্রুপিংয়ে সংশ্লিষ্ট সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের অপসারণের মাধ্যমে দলের মধ্যে শৃংখলা ফিরিয়ে এনে সাংগঠনিক গতিশীলতা এনে একটি অর্থবহ বালাগঞ্জ উপজেলা আহবায়ক কমিটি গঠনকল্পে বালাগঞ্জ উপজেলায় একটি শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন ও প্রিয় নেতা এম. ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে পাওয়ার দাবীতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ দেশনায়ক তারেক রহমান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও কেন্দ্রীয় বিএনপি সিলেট বিভাগীয় নেতৃবৃন্দের কাছে উদাত্ত আহবান জানানো হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা সুরুজ আলী মেম্বার, মো. মকবুল আলী মেম্বার, মো. হাজী রফিক মিয়া, আব্দুল বারী, এস এম কুতুব উদ্দিন, মির্জা আব্দুল বাছিত, শেখ জামাল আহমদ খলকু, মো. আজম আলী, মো: হারুন মিয়া মেম্বার, মো. হেলাল আহমেদ, এ কে আজাদ পনির, মামুনুর রশিদ সোহেল, মিজু আহমদ লুলু, আব্দুছ সালাম, তোফায়েল আহমেদ সোহেল, মাসুক মিয়া, মো. রেজাউল আহমদ, মুনিম আহমদ, হেলাল নির্ঝর, মকবুল মিয়া, শামিম আহমদ, মোমিনুল হক, ইকবাল হোসেন, হোসেন আহমদ, আমির উদ্দিন, আবুল হাসান, রায়হান আহমদ, মিজান আহমেদ, জাবেদ আহমদ, নোমান লস্কর প্রমুখ।