চীনের উহান থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফাইল ছবি

সিলেটের বার্তা ডেস্ক:: বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৩জনের দু’জন ইতালি ফেরত নাগরিক।
করোনাভাইরাসের ছোবল পড়লো বাংলাদেশেও। রোববার তিনজন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। আক্রান্ত তিনজনই একই পরিবারের। দুইজন ইতালি থেকে আসার পর পরিবারের আরও একজনের মধ্যে ছড়িয়েছে ভাইরাস। তাদের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ এর মধ্যে। রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে তাদের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরও তিনজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
রোববার (৮ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর মহাখালীতে আইইডিসিআর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন আইইডিসিআরের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ডা. এএসএম আলমগীর।
ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, জ্বর ও কাশি নিয়ে এই তিন ব্যক্তি আইইডিসিআরে যোগাযোগ করে। এরপর গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তারা পজিটিভ প্রমাণিত হন। তাদের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ এর মধ্যে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া তিন জনের বাইরে আরও তিন জনকে কোয়ারেনটাইন করে রাখা হয়েছে। তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আক্রান্ত ও কোয়ারেনটাইনে রাখা ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ আলাদা করে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ার মতো কোনো পরিস্থিতি হয়নি। স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি।
তবে করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজন না হলে জনসমাগমে না যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন সেব্রিনা। তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধে সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া আছে। আইসোলিশেন ইউনিট করেছিলাম।
সেব্রিনা বলেন, আশঙ্কা করছি না আরও ছড়িয়ে পড়বে। প্রত্যেকের মাস্ক পড়ে ঘুরে বেড়ানোর কোনো দরকার নেই।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চীনের হুবাই প্রদেশের উহানে উৎপত্তি হয় করোনাভাইরাসের। পরে চীনের অন্যান্য প্রদেশ এবং বিশ্বের নানা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৬০০ জনে। আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ১৯৫ জন। বিশ্বের ১০৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। তবে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার ১৯০ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এর আগে ভারত ও পাকিস্তানেও করোনায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশে রোগী শনাক্ত হওয়ার ঘটনা এই প্রথম।
এর আগে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশের পর্যাপ্ত সক্ষমতা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আমাদের পর্যাপ্ত সক্ষমতা (করোনাভাইরাস মোকাবিলায়) রয়েছে এবং আমরা যথাযথ ব্যবস্থা করবো। এখানে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই।’
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এক অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার ২৪ ঘণ্টা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং যেকোনো জায়গায় সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।