নিজামুল হক লিটন:: সিলেটের মোগলাবাজার থানা এলাকায় ফসলি জমির উপর চলছে মাটিখেকোদের যন্ত্রদানবের ছোবল।
রাতের আঁধারে এক্সেবেটর দিয়ে চলে নিরবে ঠান্ডা মাথায় মাটির উপর নির্যাতন। পরিবেশ অধিদপ্তর, স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের রহস্যজনক নিরবতায় হতাশ স্থানীয়রা।
জলপতি নিধি থেকে শুরু করে ভুমিখেকোরা ও তার বাহিনী কে সামাল দিবে কে? এক্সেভেটর দিয়ে চলছে দিনে ও রাতের আধাঁরে চলছে মাটি কাটার ধুম।
মোগলা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আখতার হোসেনের ভুমিকা নিরব কেন?
একদিকে ফসিল জমি নষ্ট অন্যদিকে দিকে গেল কিছু দিন এই এলাকার প্রায় ৩/৪শ’ পরিবারের মানুষের যাতায়াতের কষ্ট দুর করার জন্য সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী কয়েছের ব্যক্তি উদ্যোগে রাস্তাটি করে দিয়েছেন।
গোটাটিকরের সাধারণ জনগণ যখন ৩ কিলোমিটারজুড়ে ইট ছলিং করা রাস্তা দিয়ে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করছেন, ঠিক সেই মূহুর্তে চলছে কুচাই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার সবুজ কুমার বিস্বাস এর যন্ত্রদানব এক্সেবেটর।
ফসলি জমি, সাধারণ মানুষের যাতায়াতের রাস্তা সব বিনাশ হয়ে যাচ্ছে।
কারো তোয়াক্কা না করে মেম্বার সবুজ কুমার বিশ্বাস দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছেন মাটি কাটার কাজ। তারই নেতৃত্বে দিনে ও রাতে চলে এক্সেবেটর দিয়ে মাটি কাটা।
রাস্তা পাশ থেকে মাটি কেটে এক্সেবেটর দিয়ে ফসলি জমির ওপর চলে যন্ত্রদানবের ছোবল।
মাটি চাপা পড়ে যায়, অনেক সময় রাস্তায় ফাটল ধরে বর্ষাকালে কাদার সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে মোগলা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আখতার কে ফোনে একাধিকবার বলার পরও, এ যেনো চোর-পুলিশ খেকা শুরু হয়েছে।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় প্লট বিক্রির জন্য ফসলি জমি থেকে অবাধে চলছে মাটিকাটা।
উপজেলার কুচাই ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড সহ কিছু স্থান সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় জায়গার মালিক তাদের প্লট কিনে দাম দিয়ে বিক্রির জন্য হাওর থেকে ফসলি জমি থেকে ট্রাকভর্তি করে মাটি কিনে ভরাট করছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া মাটি কাটায় বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এসব কিছুর তোয়াক্কা না করে এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে মাটি কাটাচ্ছেন।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ছিটাগোটাটিকর, শ্রীরামপুর, পাঁচ মাইল,পশ্চিমভাগ ও পালপুর এলাকায় কিছু জমিতে দিনে ও রাতের আঁধারে চলছে ফসলি জমি থেকে মাটিকাটার কাজ।
এব্যাপারে একাধিক জমির মালিক টাকার বিনিময়ে মাটি বিক্রি করছেন। এতে করে গরিব কৃষকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বেশী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলছেন যে আমরা জমির মালিকদের কাছ থেকে জমি বর্গা এনে ফসল উৎপাদন করি।
মালিক পক্ষ অর্ধেক আমরা অর্ধেক রেখে আমাদের পরিবার নিয়ে দিনযাপনে চলে।
এখন যত দিন যাচ্ছে হাওর বিল ভরাট করে চলছে হাউজিং ব্যাবসা। যার দরুণ নষ্ট হচ্ছে, ফসলি জমি। হচ্ছে না আগের মতো চাষবাদ।
একদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের ময়লার কারণে স্থানে স্থানে পড়ে থাকে ক্লিনিকের ইনকশনের সুই, বাসা বাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন কোম্পানির ময়লা
আবর্জনা স্তূপ।
এসবের যন্ত্রণায় নিরুপায় কৃষকরা চাষাবাদ বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে করে কৃষক সমাজের সামনে নেমে আসছে অন্ধকার।
এব্যাপারে সিলেটের বার্তাকে একাধিক কৃষক জানান জমির মালিকেরা তাদের জমির মাটি বিক্রি করে দিলে আমাদের কিছু করার নেই।
বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট ৩ ৪,৫, ডেসিমেল এর প্লট হাউজিংএর ব্যাবসা দেখা গেছে বেশিরভাগ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন সাধারণ কৃষক।
সরকার বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব আয় থেকে।
সূত্র জানায়, জমির ওপর দিয়ে আনা হচ্ছে ৩ টনের ট্রাক বুঝাই মাটি, টায়ারের চাপে মাটি দেবে গেছে এক থেকে দের হাত।
মৌসুমী ধান ও সবজী ক্ষেতের নানাবিদ ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।
বানিয়ে তার মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে হাউজিং মালিকের কাছে ফসলি জমি থেকে মাটি বিক্রি করা সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরে-ও এলাকার কিছু
প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে জমির মালিকেরা মাটি ও জমি বিক্রি থাকেন অনেক সময়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দক্ষিণ সুরমার উপজেলার সাবেক নির্বাহী কমকর্তা (ইউএনও) শাহেদ মোস্তফা থাকাকালীন বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করা হতো। এবং অভিযানের বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদেরও জানানো হতো।
এখন বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
বিগত বছর সিলেটের স্থানীয় একটি পত্রিকা নিউজ ‘ফসিল জমি ভড়াট করে হাউজিং ব্যবসা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের অভিযান চালানো হয়। গাড়ি চালক ও মালিককে জরিমানা করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন কল কারখানা বন্ধ রাখা হয়
এব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নির্বাহী অফিসার মিন্টু চৌধুরী জানান আমি মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে জানিয়ে দিয়েছি। বিষয়টি আমার নজরে আছে। আগামীকাল (আজ) সকাল থেকে অভিযান চলবে।
আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ফসলি জমি থেকে মাটি কাঁটার নিষেধ থাকার পরে-ও যদি কাউকে জড়িত পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।