আজ মঙ্গলবার, ১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি, সকাল ৮:৩৮

মাধবপুরের সড়কে লাইসেন্সবিহীন ট্রাক্টরের ছড়াছড়ি, দুর্ঘটনা বাড়ছেই

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০, ০৮:৫১ অপরাহ্ণ

লিটন পাঠান, মাধবপুর থেকে:: হবিগঞ্জের মাধবপুরের সড়ক যেনো লাইসেন্সবিহীন ট্রাক্টরের দখলে। বেপরোয়া গতিতে চালনা, মানে না কোনো বাঁধা। দিন দিন বাড়ছে দুর্ঘটনা।

চাষাবাদের জন্য কেনা ট্রাক্টর দিয়ে বানানো হয়েছে ট্রাক বা ট্রলি। এসব অবৈধ যানের অবাধ চলাচলের কারণে হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। বাড়ছে দুর্ঘটনায় মৃত্যু। এসব ট্রক্টর ইট ও মাটি টানার কাছে চালাচ্ছে শিশু-কিশোররা। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। লাইসেন্সবিহীন এসব অবৈধ ট্রাক বা টলির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন।

জানা গেছে, কৃষি কাজের জন্য এসব ট্রাক্টর ক্রয় করা হলেও মালিকরা এগুলো ব্যবহার করছে ইট, বালু, মাটি, কাপড়, তরিতরকারী ও ফার্নিচার ইত্যাদি মালামাল পরিবহনের কাজে। ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলের কারণে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে।

কৃষিজমির টপ সয়েল কেটে ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে এসব ট্রাক্টর দিয়ে। জমি খুঁড়ে গ্রাম থেকে বালু বহন করে আনছে শহরে। পাশাপাশি ধুলাবালির কারণে পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।
ট্রাক্টরের বেপরোয়া আওয়াজ ও চলাচলে গ্রাম ও শহরের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রোড পারমিশনবিহীন ট্রাক্টর ও লাইসেন্স-সনদবিহীন চালকদের কারণে রাস্তা-ঘাটে চলাচলকারী মানুষ সার্বক্ষণিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে চলাচল করছে।

ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় ১৫ থেকে ২০ বছরের শিশু-কিশোররাও এসব ট্রাক্টর অবাধে চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। বেপরোয়া গতি ও কানফাটা শব্দে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। গত ২৮ শে ডিসেম্বর মাধবপুর-হরষপুর সড়কের সেউলিয়া ব্রীজ এলাকায় মাহিন্দ্র ট্রাক্টরের ধাক্কায় সিএনজি উল্টে পুকুরে পরে সিএনজির চালক ঘটনাস্থলে মারা যায় এবং দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের মাধবপুর প্রতিনিধি গুরুতর আহত হয়। তারপরও অবৈধ এই বাহনের অবাধ চলাচল দেখেও স্থানীয় প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের
জানা গেছে, দেশের কৃষি উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করার জন্য এসব ট্রাক্টর বিদেশ থেকে আমদানীর সুযোগ দেয় সরকার। সরকারি সুযোগ পেয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অবাধে আমদানি করেন ট্রাক্টর। আর এসব ট্রাক্টর বিক্রি করে ইটভাটার মালিক, মাটি-বালু, কাঠ, লোহা ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকসহ পরিবহন ব্যবসায়ীদের কাছে। ট্রাক্টরের চালকদের জন্য কোনো লাইসেন্সের প্রয়োজন না থাকায় এসব পরিবহন ব্যবসায়ীরা স্বল্পমূল্যে সহজেই কিনে আনেন এসব ট্রাক্টর। তারা এসব ট্রাক্টর কিনে কৃষিকাজের পরিবর্তে পরিবহন কাজে ব্যবহার করায় গ্রাম থেকে শহরেও ট্রাক্টরের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। ট্রাকের চেয়ে ট্রাক্টরের ভাড়া কম থাকায় এই বাহনের চাহিদাও বেড়ে যায় কয়েকগুণ
সরেজমিন মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, এসব ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলের কারণে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। ধুলাবালির কারণে সড়কের দুই পাশের বাড়ি ও গাছপালা ধুলায় তলিয়ে গেছে। কয়েক মিনিট পর পরই মাটি, বালি ও ইট ভর্তি একটি-দুটি করে ট্রলি বেপরোয়া ভাবে চলাচল করছে। পথচারী আশরাফ আলী বলেন, মাধবপুর উপজেলার গড়ে উঠা বিভিন্ন ইটভাটার মালিকরা, বালু ব্যবসায়ীরা এসব ট্রাক্টর ব্যবহার করে রাস্তা-ঘাট ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। যে কারণে ১০ মিনিটের রাস্তা পার হতে ৩০ থেকে ৫০ মিনিট লাগে। পাশাপাশি ধুলার কারণে ১০ গজ দূরের কোনো কিছু চোখে পড়ে না। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, এসব অবৈধ ট্রাক্টর রাস্তা-ঘাট ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করলেও এসব বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন।

আরও পড়ুন:  মাধবপুরে শিশু লিজা হত্যা: একবছর পর প্রধান আসামী গ্রেফতার

মাধবপুর উপজেলা কমিশনার (ভূমি) আয়েশা আক্তার বলেন, এ ব্যাপারে খুব দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭৩০৩১