সিলেট ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৯ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মাদকসহ যে কোনো অপরাধ নির্মূলে হার্ডলাইনে এসপি সিলেট

সিলেটের বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০, ০৮:০১ অপরাহ্ণ
মাদকসহ যে কোনো অপরাধ নির্মূলে হার্ডলাইনে এসপি সিলেট

নিজামুল হক লিটন:: যামানাটা বড্ড খারাপ। খারাপ মানুষের রাজত্বে আজ ভাল কিছু করা বা বলাও যেনো পাপ। কারো প্রশংসায় দু’চার লাইন লিখতে গেলে ‘ওরা’ কালো চশমায় দেখবে আমায়। যে যাই বলুক, লিখুক।  শুনবো না আমি।
আধ্যাত্মিক রাজধানী সিলেট বাংলাদেশের মানচিত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিছু পাপিরা সিলেটের ঐতিহ্যে কালেমা লেপনে হামেশা ব্যস্ত।
কালোবাজারি, চোরাকারবারি, মাদক ব্যবসায়ী, চোর-ছিনতাইকারী সবই যেনো এক রসুনের বিভিন্ন রোয়া।
বিগত দিনে যারা সিলেট জেলা পুলিশ সুপারের আসনে সমাসীন ছিলেন তাদের আমলে সিলেটের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও বর্তমান পরিস্থিতির মাঝে বেজায় ফারাক। যা সাধারণ মানুষই বেশী বলতে পারবেন।

সিলেট জেলা পুলিশের সুপার ফরিদ উদ্দিন। তাকে নিয়ে অনেক অনলাইন-অফলাইন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। এখন আরেকটি প্রতিবেদনও পাঠক পড়তে চলেছেন।

‘চ্যালেঞ্জ’ শব্দটি হয়তো কমন। হ্যাঁ তাই। তবে এসপি ফরিদ উদ্দিন এই চ্যালেঞ্জকে আন-কমন সকল পদ্ধতিতে গ্রহণ করেছেন।
তাই তো সিলেট জেলা পুলিশের অধীনে সকল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি)দের মধ্যেও এর ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা অনেক বড় ব্যাপার। সিলেটবাসীর জন্য প্লাসপয়েন্ট।

আসা যাক মূল আলোচনায়, প্রাকৃতিক সম্পদ পাথর কোয়ারী, গ্যাসক্ষেত্র, চা-বাগানসহ সিলেটে রয়েছে শতাধিক পর্যটন কেন্দ্র। এছাড়াও ভারতের সীমান্তবর্তী জনপদ সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলার অবস্থান ভারতের সীমানা ঘেঁষা। তাছাড়া  তামাবিল স্থলবন্দরসহ ভারতের সীমানা ঘেঁষে দীর্ঘদিন থেকে উভয় দেশে বসে আসছে বৈধ-অবৈধ বেশক’টি হাট। দু\’টো দেশের সীমানায় কোথাও নেই প্রাচীর। কোথাও কোথাও কাটা তারের ভেড়া থাকলেও উভয় দেশের চোরাকারবারিরা অত্যন্ত গোপনে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের সাথে মাদক দ্রব্যসহ বিভিন্ন অবৈধ পন্য নিয়ে যাতায়াত করে, এতেই ঘটে বিপত্তি।

তাই সিলেট জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। সামগ্রিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী সিলেট জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম। সিলেটে যোগদানের পর চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় কাগজে কলমে সমাপ্তি হওয়া ১৪৫৫ টি মামলার জট। তিনি টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে মামলাগুলোর বিশাল জট নিরসনে দ্রæত কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহন করেন। বিগত ৫ মাসে ১৪৫৫টি মামলার মধ্যে ৯০৫টি মামলার মুলতবি করতে সক্ষম হয়েছেন। ওয়ারেন্ট তামিলের ক্ষেত্রেও রয়েছে স্মরণকালের সেরা সফলতা। সিলেটের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র পুলিশ সুপার যার উদ্যোগে সিলেট জেলা পুলিশের মাধ্যমে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ২২৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করেছেন। সিলেটের ডিআইজি, কমিশনার, এসপিসহ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা ও জাতির সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগন একই সাথে বসে দুপুরের খাবারের আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধাগনের অশ্রæসিক্ত ভালবাসায় প্রশংসিত হন এসপি ফরিদ উদ্দিন। এছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে বিভিন্ন ধরনের পোশাক প্রদানে তিনি ভীষণ প্রশংসা কুড়ান। মাত্র একশত টাকা খরচের মাধ্যমে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেয়ায় দেশব্যাপী আলোচনায় নিজের স্থান করেন তিনি। পুলিশে নিয়োগ ও রদবদলে নেই তার টাকার কোনো চাহিদা। তার সততা, কর্মদক্ষতা ও নিষ্টার ফল ভোগ করছেন সিলেটবাসী। তার নিয়োগের পর থেকে সিলেটের থানাগুলোতে জিডি ও অভিযোগে কোন টাকা লাগে না। পুলিশিং কোন ধরনের হয়রানি নেই বললেই চলে।

পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর কাজ ও কর্মে সিলেটবাসীকে চমক দেখান তিনি। পৃথকভাবে প্রতিটি থানা পরিদর্শন ও থানার আওতাধীন এলাকার সার্বিক দিক বিবেচনা করে তৈরি করেন প্রতিটি থানায় একেকটি টিম। সিলেটের এসপি হিসেবে যোগদানের সূচনালগ্ন থেকে চলতি বছরের  জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সিলেট জেলায় ৩১১টি মাদক মামলা রুজু করে ৩৯০জন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠান। জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ৭২১ টাকা সমমূল্যের ২১ কেজি গাঁজা। অসংখ্য পরিমাণ বিদেশি মদ ও কোটি টাকা মূল্য মানের ১কেজি হেরোইন জব্দ করতে সক্ষম হন। পাশাপাশি বিগত ৫ মাসে সিলেটের সবকটি থানায় ১ হাজার ২৩৪টি মামলার বিপরীতে ১ হাজার ২৮জন আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন (পিপিএম) এর টিম। সততা, নিষ্ঠা, কর্মদক্ষতা, সাহসিকতা, কর্তব্যপরায়ণ, টিমওয়ার্কে বিশ্বাসী এসপি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম দিনে দিনে হয়ে উঠেন সিলেটের ভাল মানুষের পরম বন্ধু ও অপরাধীদের আতঙ্ক।

পুলিশ সুপার হিসেবে সিলেটে যোগদানের পর থেকে বেশ কয়েকটি আলোচিত ঘটনার তথ্য উৎঘাটন, জেলা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে গুজব প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করেন। বর্তমানে তিনি সিলেটের মানুষের কাছে হয়ে উঠেছেন একটি আস্থা, ভালবাসা ও নির্ভরতার প্রতীক। একজন পুলিশ কর্মকর্তার মূল কাজ জনগণের সেবা করা। বিপদাপদে তাদের পাশে থাকা পুলিশের সকল কর্মকর্তা সে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু এসপি ফরিদ উদ্দিনের দায়িত্ব পালনে রয়েছে আলাদা কৌশল, সততা, নিষ্টা ও পরিস্থিতির ক্ষেত্র বোঝে সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহন।

চুরি-ছিনতাইয়ে কিশোর গ্যাং: সফলতা পরে বললেন-শ্যামল বণিক-
যাত্রীবেশে ছিনতাই। এই স্টাইলটি কবে নাগাদ শুরু হয়েছে বা এর উদ্ভাবক কে?
তা হয়তো আমি বলতে পারবো না? তবে এই এই পদ্ধতি গ্রহণ করে অপরাধে জড়াচ্ছে কিশোর সমাজ।

উদ্ধার হওয়া সিনজি।

যাত্রীবেশে গাড়িতে উঠে হয়তো টার্গেট অপর যাত্রী না হয় চালক। উভয়পক্ষই খোয়াচ্ছেন সবকিছু।
এরকম ঘটনা সিলেটের প্রায় সব থানাই কমবেশ ঘটছে।
পুলিশও অভিযান চালিয়ে চুর-ছিনতাকারী চক্রকে আটক করছে। মিডিয়াওলারা বড় হরফে শিরোনাম করছে।
এতে কী বন্ধ হচ্ছে অপরাধ? কিশোরদের পেছনের রিমোর্টওয়ালাদের ধরতে হবে। সবক দিতে হবে কিশোরদের নষ্ট করলে, দেশ ও জাতির ক্ষতি হবে।
গত মঙ্গলবার জৈন্তাপুর থানা পুলিশের অভিযানে সিএনজি অটোরিকশাসহ এক কিশোরকে আটক করা হয়।

ওসি শ্যামল বণিকের ফেসবুক থেকে নেওয়া।

সফলতা পরে বলে ‘সমাজহিতৈষী’ সমাজের উপকারীমূলক পোস্ট করেন ওসি শ্যামল বণিক।
তার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হল-
‘গতরাতে হরিপুর থেকে বটেশ্বরগামী সিএনজিতে যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে জনৈক ভদ্রলোক। মামলা হয়। সারারাত- সারাদিন সিলেট শহরসহ আশপাশ এলাকায় অভিযান চলে। অবশেষে ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত সিএনজিসহ একজন ছিনতাইকারী ধৃত হয়। অভিযান চলছে।

চুরি- ছিনতাই- ডাকাতিতে জড়িয়ে যাচ্ছে উঠতি বয়সীরা। দায় কি আমরা এড়াতে পারি?
আসুন সুন্দর জৈন্তাপুর গড়ি।’


শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০